মুফতী আব্দুল্লাহ বিন রফিক: কুরআন সত্য পথে চলার এক মহা আলোকর্তিকা। সত্যের অবিনাশী ও শ্বাশ্বত বার্তা দিয়েই মহান আল্লাহ তা পঠিয়েছেন আমাদের উদ্দেশ্যে। আমরা প্রতিদিন তা তিলাওয়াত করি। আচার, সংস্কার ও জীবনের সর্বত্র কথায় ও কর্মে আমরা তা ধারণ করি। ভক্তি ও শ্রদ্ধায় চোখে মুছি। বুকে চেপে ধরি। ভক্তি ও শ্রদ্ধার আড়ালে অজান্তে কখনো তা আমাদের হাত ফসকে পড়ে যেতে পারে। পায়ে লাগতে পারে। আমরা তখন তা তুলে চুমু দেই। বুকে মিলাই। প্রশ্ন হলো, এতে করে কী চুমু খাওয়া বাধ্যতামূলক? চুমু না খেলে কী পাপ হবে? আসুন জানার চেষ্টা করি।
কুরআনে কারীমের মত পবিত্র ও বিশুদ্ধতম কিতাব হাত থেকে পড়ে গেলে মন খারাপ হওয়াটা স্বাভাভিক। অনুতপ্তের এই ভাব আসা এগুলো ভাল লক্ষণ। অন্তরে ঈমান সুপ্ত থাকার নিদর্শন। মুরুব্বীদের গায়ে পা লাগলেও অনুতাপ আসা উত্তম শিষ্টাচারের পরিচায়ক। তবে এক্ষেত্রে তাদের সালাম করা বা চুমু খাওয়ার কোনো বিধান নেই।
তবে যদি কেউ সুন্নত বা শরীয়তের বিধান মনে না করে এমনিতে সম্মানার্থে কুরআনে কারীম চুম্বন করে, তাহলে তাতে সমস্যা নেই।
فى رد المحتار-رُوِيَ عَنْ عُمَرَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ أَنَّهُ كَانَ يَأْخُذُ الْمُصْحَفَ كُلَّ غَدَاةٍ وَيُقَبِّلُهُ وَيَقُولُ : عَهْدُ رَبِّي وَمَنْشُورُ رَبِّي عَزَّ وَجَلَّ وَكَانَ عُثْمَانُ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ يُقَبِّلُ الْمُصْحَفَ وَيَمْسَحُهُ عَلَى وَجْهِهِ (رد المحتار–كِتَابُ الْحَظْرِ وَالْإِبَاحَةِ، بَابُ الِاسْتِبْرَاءِ وَغَيْرِهِ
হযরত ওমর রা. এ ব্যাপারে বর্ণিত আছে, তিনি কুরআনে কারীম প্রতিদিন সকালে নিয়ে চুমু খেতেন। আর বলতেন-এটা আমার রবের নির্দেশনা, এবং আল্লাহর প্রেরিত। এমনিভাবে হযরত উসমান রা. ও কুরআনে কারীমকে চুমু খেতেন এবং চেহারায় মুছতেন।
সূত্র: রাদ্দুল মুহতার, ৫/২৪৬; তাহতাবী আলা মারাকিল ফালাহ, ২৫৯; ফাতওয়ায়ে মাহমুদিয়া, ৭/১৪৭