আব্দুল্লাহ বিন রফিক
একজন সাধারণ ভিন্ন ধর্মাবলম্বীর ইসলাম গ্রহণ করাটা স্বাভাবিক। তবে ১১৪ গির্জার যিনি প্রধান এবং ধর্মযাজক হিসেবে যার খ্যাতি ছড়িয়ে রয়েছে আফ্রিকায় তিনিও কি নিজের ধর্ম ছেড়ে ইসলাম গ্রহণ করতে পারেন?
ভাবতে অস্বাভাবিক মনে হলেও বিষয়টি সত্য এবং এ ঘটনা আলোড়ন তুলেছে পুরো বিশ্বে।
বুরুন্ডি প্রজাতন্ত্রের শিক্ষা ও উন্নয়ন সংস্থায় গিয়ে খ্যাতনামা খ্রিস্টান ধর্মযাজক নিয়াকি হানুর্মা নিজেই বিষয়টি স্বীকার করেছেন।
নিয়াকি হানুর্মা সংস্থাটির সাথে ইসলাম সম্পর্কে আলাপ আলোচনা এবং এ তার সন্দিহান ও আপত্তি দূর হওয়ার পরই তিনি আল্লাহর পক্ষ থেকে হেদায়াত প্রাপ্ত হন। বুরুন্ডি শিক্ষা ও উন্নয়ন সংস্থার ব্যবস্থাপনা সদস্য শায়খ জালাল মুরসি দৃপ্ত কণ্ঠে বলেন, নিয়াকি হানুর্মা ৪০ বছর যাবত একনিষ্ঠ ধর্মজাযক ছিলেন। সে হিসেবে বিভিন্ন সময়ে ১১৪ টি গির্জার দায়িত্ব পালনের সুযোগ তিনি লাভ করেছেন।
তিনি ৫টিরও অধিক দেশে খ্রিস্টানদের বিভিন্ন চারিত্রিক অধঃপতন বিষয়ে গবেষণা ও প্রশিক্ষণ কোর্সে অংশগ্রহণ করেছেন। বিভিন্ন ভাষা নিয়েও ব্যাপক অধ্যয়ন করেছেন। আল কুরআনে যে বিষয়গুলো নিয়ে তার দ্বন্দ-সন্দেহ ছিলো একপর্যায়ে তা নিয়ে গবেষণা ও গ্রন্থ রচনা শুরু করেন। কিন্তু আল কুরআনের বৈচিত্রময় বিভিন্ন তত্ত্ব, তথ্য ও রহস্যের সন্ধান করতে গিয়ে হতবাক হয়ে পড়েন হানুর্মা। এক সময় তিনি থমকে যান। হারিয়ে যান গভীর মগ্নচিন্তায়। জিজ্ঞাসা তাকে বুরুন্ডি শিক্ষা ও উন্নয়ন সংস্থায় টেনে নিয়ে আসে। সংস্থাটিও তার কৌতূহল মেটায় এবং তার মনের গভীরে জমে থাকা প্রশ্নের যথাযথ জবাব দিয়ে তাকে আশ্বস্ত করেন।
নিয়াকি হানুর্মা ইসলাম গ্রহণ করে নিজের নাম রাখেন আলী। শায়খ মুরাইসি বলেন, দীর্ঘসময় কথাবার্তার পর নিয়াকি আরেকজন ধর্মযাজকের সাথেই সবার সামনে ইসলাম গ্রহণের ঘোষণা পাঠ করেন। সেখানকার ৪টি গির্জাকে মাদরাসা বানিয়ে এখন তার তত্ত্ববধায়কের ভূমিকাও পালন করে যাচ্ছেন।
এই ছবিটি নেওয়া হয়েছে মুসলিম ও খ্রিস্টানদের সামনে তার ঘোষণা পাঠ করার সময়ে। উপস্থিত জনতাকে তিনি বলছেন, এই সেই আলী এক সময় যে ইসলামকে ঘৃণা করতো। এখন ইসলামের বাস্তবতা জেনেই সে তা গ্রহণ করছে। আলী সেই ইসলামকেই গ্রহণ করছে যা ঐশী প্রদত্ত, যা বান্দাকে তার রবের দিকে আহবান করে। তার আহবানের সম্মোহনী প্রভাব তখন উপস্থিত জনতার মাঝে বেশ দাগ কাটছিলো। এর ফলশ্রুতিতে সেখানেই আরো দশজন ইসলাম গ্রহণ করে।
আলী তার প্রতিবেশী অঞ্চলে ইসলামের প্রচার-প্রসারের দায়িত্ব কাঁধে নেন। ইতিপূর্বে তিনি যে দ্বিধা-দ্বন্দ ও সন্দেহ পোষণ করতেন সেগুলো খণ্ডনেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
ইসলাম গ্রহণের অল্পদিনের মধ্যেই বুরুন্ডির বিভিন্ন অঞ্চলের সুশীল সমাজের নানান সংগঠনে বর্তমানে তিনি কার্যকরী ভূমিকা রেখে চলেছেন।
সূত্র: আ’লুকা ডটনেট অবলম্বনে
রওজা শরীফের যে ঘটনা কেউ জানে না
চাই আদর্শিক ঐক্য দালিলিক মতভিন্নতা এবং চারিত্রিক উদারতা