মুসলমানদে্র ত্যাগের উতসব ঈদুল আযহা আজ।ইবরাহিমি চেতনায় উজ্জীবিত হওয়া এবং আল্লাহ’র নির্দেশ পালনের মাধ্যমে উদযাপিত হয়ে থাকে এই ঈদ।ধনীরা সাধ্যানুযায়ী কুরবানি করেন। গরিবরা পেয়ে থাকেন সেই ভাগ। সব মিলিয়ে সবার মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে এই খুশি।
মঙ্গলবার ফজরের শীতল হাওয়া শান্তি বারতা বইয়ে দিয়েছে সারা দেশে। রাজধানীর প্রধান ঈদের জামাত ৮টায় শুরু হবে। তারপর সারাদেশে একযোগে চলবে ঈদের জামাত। জামায়াত শেষে কুরবানি। বড়রা নিচ্ছেন সেই প্রস্তুতি। আর ছোটদের মধ্যে আনন্দের হিল্লোল বয়ে গেছে সপ্তাহ খানেক আগে থেকেই। নতুন জামা কেনা কুরবানির পশু দেখাশোনা এসবের মধ্যেই কাটছে তাদের সময়।
ঈদুল আজহা উপলক্ষে পৃথক পৃথক বাণী দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরিন শারমীন চৌধুরী, বিরোধীদলীয় নেতা বেগম রওশন এরশাদ ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া।
গুলশানে জঙ্গি হামলা ও শোলাকিয়া ঈদগাহ মাঠের পাশে গত ঈদে জঙ্গি হামলার বিষয়টি মাথায় রেখে এবারের ঈদে সারাদেশে নিরাপত্তা ব্যবস্থা ব্যাপক জোরদার করেছে প্রশাসন। ঈদগাহে জায়নামাজ ছাড়া অন্য কিছু না নিয়ে যাওয়ার জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে অনুরোধ করা হয়েছে।
আল্লাহ পাকের প্রতি অপার আনুগত্য এবং তাঁরই রাহে সর্বোচ্চ আত্মত্যাগের এক ঐতিহাসিক ঘটনার স্মরণে মুসলিম বিশ্বে ঈদুল আজহা উদযাপিত হয়ে আসছে। মুসলিম জাতির পিতা হজরত ইবরাহিম আ.-এর আত্মত্যাগ ও অনুপম আর্শের প্রতীকী নিদর্শন হিসেবে কুরবানির এই প্রচলন। আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের নির্দেশে হজরত ইব্রাহিম আ. তাঁর প্রাণপ্রিয় সন্তান হজরত ইসমাইল আ.-কে কুরবানি করতে গিয়েছিরেন। এই অনন্য ঘটনার স্মরণে কুরবানির বিধান প্রণিত হয়েছে। মুসলিমরাও তাদের প্রিয় বস্তুটি কুরবানি করে আসছেন যুগ যুগ ধরে।
ইসলামের পরিভাষায় কুরবানি হলো- নির্দিষ্ট পশুকে একমাত্র আল্লাহর নৈকট্য ও সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে নির্দিষ্ট সময়ে তাঁরই নামে জবেহ করা। মহান সৃষ্টিকর্তার দরবারে জবাই করা পশুর মাংস বা রক্ত কিছুই পৌঁছায় না, কেবল নিয়ত ছাড়া। ঈদুল আজহার অন্যতম শিক্ষা হচ্ছে, মনের পশু অর্থাৎ কু-প্রবৃত্তিকে পরিত্যাগ করা।
প্রতি বছর জিলহজ মাসের ১০ তারিখে বিশ্ব মুসলিম ময়দানে নামাজ আদায়ের পর যার যা সাধ্য ও পছন্দ সেই অনুযায়ী পশু কুরবানি দিয়ে থাকেন। আরবি ‘আজহা ’এবং ‘কুরবান’ উভয় শব্দের অর্থ হচ্ছে উৎসর্গ। কুরবানি শব্দের উৎপত্তিগত অর্থ হচ্ছে আত্মত্যাগ, আত্মোৎসর্গ, নিজেকে বিসর্জন, নৈকট্য লাভের চেষ্টা ও অতিশয় নিকটবর্তী হওয়া ইত্যাদি।
জিলহজ মাসের ১০, ১১ ও ১২ তারিখের যে কোনো একদিন কুরবানি করা যায়। গরু, মহিষ, উট, ছাগল, ভেড়া, দুম্বা এ শ্রেণির প্রাণি কুরবানি করা যায়।
রোকন রাইয়ান