শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪ ।। ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ ।। ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬


নিমগাছ নিম নয়

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

nimসিয়াম বিন আহমাদ

নিম একটি ঔষধি গাছ। যার ডাল, পাতা, রস সবই স্বাস্থ্যের জন্য খুব উপকারী। এটি বর্ষজীবি ও চির হরিত বৃক্ষ। গাছটি ৪০-৫০ ফুট আর পাতা ২.৫-৪ ইঞ্চি পর্যন্ত লম্বা হয়। পাতাগুলো দেখতে কাস্তের মত বাঁনানো। এগাছে আঙুরের মত ফল হয়। ফলে থাকে একটি বিচি। ফলটি দেখতে আঙুরের মত হলেও স্বাদ খুব তেতো। নিমগাছ প্রাপ্ত বয়স্ক হতে প্রায় ১০ বছর লেগে যায়।

নিম সব ধরনের মাটিতেই জন্মে থাকে। এমনকি ঘন কাদা এবং শুষ্ক ভুষা মাটিতেও। তবে কালো দোঁয়াশ মাটি নিম চাষের জন্য বিশেষ উপযোগী। জুন মাস থেকেই নিম গাছের বীজ রোপন করা যায়। আর বর্ষাকালই এর উপযুক্ত সময়। নিম নার্সারী বেড, কন্টেইনার নার্সারীর মাধ্যমে এছাড়াও মাটির ছোট টোপা, পলিব্যাগেও খুব সুন্দর ভাবে এগুলো রোপন করা সম্ভব।

বাংলাদেশ এবং ভারতের সর্বত্রই নিমগাছ জন্মাতে দেখা যায়।

আজকাল নিমের পাতা থেকে প্রসাধনীও তৈরি হচ্ছে। কৃমিনাশক হিসেবে নিমের রস খুবই কার্যকর।নিমের কাঠ খুবই শক্ত। এ কাঠে কখনো ঘুন ধরে না। পোকা বাসা বাঁধে না। উইপোকা খেতে পারে না। এ কারণে নিম কাঠের আসবাবপত্রও তৈরি করা হচ্ছে।

বিশ্বব্যাপী নিম গাছ, গাছের পাতা, শিকড়, নিম ফল ও বাকল ঔষুধের কাঁচামাল হিসেবে পরিচিত।

তাহলে আসুন! এবার জেনে নেয়া যাক নিমগাছের কিছু ঔষধি গুণ-

১. এ উপমহাদেশের প্রাচীন চিকিৎসা পদ্ধতিতে বিভিন্ন চর্মরোগের চিকিৎসায় ও চুলের সমস্যা দূর করতে ব্যবহৃত হয় নিম। নিমপাতার রয়েছে ফাংগাস ও ব্যাকটেরিয়া প্রতিরোধী ভূমিকা। অনেকেই এটি খুশকি প্রতিরোধে ব্যবহার করে সাফল্য পেয়েছে।

২. ত্বকের শুষ্কতা দূর, চুল শক্ত করতে ও চুলের বৃদ্ধির জন্য নিম কার্যকর। প্রাচীনকাল থেকেই চুল ও মাথার ত্বকের খুশকি দূর করতে ব্যবহৃত হয় নিম।

৩. ত্বকের বিভিন্ন ধরনের চুলকানি দূর করতে কার্যকর ভূমিকা রাখে নিম।

৪. আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা পদ্ধতিতে ত্বকের নানা সমস্যায় ও ত্বকের বিষ দূর করতে নিম ব্যবহৃত হয়।

৫. ত্বকের মেচতা সমস্যার জন্য দায়ী ব্যাকটেরিয়া প্রতিরোধ করে নিম।

৬. ত্বকের প্রসাধনী হিসেবে নিমের তেল ও নিমপাতার নির্যাস কার্যকর। নিম তেল শুষ্ক ত্বক ও এ-সংক্রান্ত চুলকানি ও র‌্যাশ দূর করে।

৭. ক্ষত সারাতে নিমপাতার নির্যাস কার্যকর। এটি সংক্রমণ প্রতিরোধ করে।

৮. ত্বকের ফুসকুড়ি ও ঘামাচির মতো সমস্যা দূর করতে সহায়তা করে নিম।

৯. একজিমা ও ত্বকের ক্ষুদ্র সংক্রমণ প্রতিরোধে নিম কার্যকর।

১০. আলসার প্রতিরোধে এবং তা নিরাময়ে নিমপাতার রস খুবই কার্যকর।

১১. এতে উচ্চমাত্রার অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট রয়েছে, যা দেহের পরিবেশগত ক্ষতি ও বুড়িয়ে যাওয়া প্রতিরোধ করে।

১২. নিম তেলে রয়েছে ফ্যাটি এসিড ও ভিটামিন ই, যা ত্বককে তরুণ রাখতে ও উজ্জ্বলতা ধরে রাখতে সহায়তা করে। এ তেল ত্বক সহজেই গ্রহণ করতে পারে।

১৩. ত্বক পরিষ্কারের জন্য নিমপাতা ব্যবহার করে মাস্ক তৈরি করা যায়।

১৪. নিমগাছের কাণ্ড থেকে তৈরি দাঁতন দিয়ে নিয়মিত দাঁত মাজলে দাঁতের বহু সমস্যা দূর হয়।

আরআর


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ