আওয়ার ইসলাম : ইতালির মধ্যাঞ্চলে বুধবার একটি শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত করার পর অনেকগুলো শহর ও গ্রাম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ পর্যন্ত নিহত হয়েছে ২৪৭ জন। ধ্বংসস্তুপের নীচে চাপা পড়ে আছে আরও অনেকে, এমন আশংকাই করছেন উদ্ধারকর্মীরা। শুধু একটি গ্রাম থেকেই নিখোঁজ হয়েছে অন্তত দেড়শোজন। ইতালির ল্যাৎসিও, আম্ব্রিয়া এবং মার্শের প্রদেশগুলি এই মৌসুমে পর্যটকে ভরপুর থাকে। ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থলের সবচেয়ে কাছে আক্কুমোলি ও আমাট্র্রিস শহরে সবচেয়ে বেশি হতাহতের ঘটনা ঘটেছে ও ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যাচ্ছে। আমাট্রিস শহরটি পুরো ধ্বংসসস্তুপে পরিণত হয়েছে। পেসকারা ডেল ট্রন্টো নামে কাছের একটি গ্রাম ধুলোয় মিশে গেছে এবং নিহতের সংখ্যা আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
রোমের প্রায় একশো কিলোমিটার উত্তর পূর্বে ভোররাতের দিকে এই ভূমিকম্প আঘাত হানে। ইটালির নাগরিক সুরক্ষা বিভাগের প্রধান ইম্মাকোলাতা পস্তিগলিওনি এক সংবাদ সম্মেলন করে জানিয়েছেন বহু মানুষ এখনও নিখোঁজ।
তিনি বুধবার দুপুরে জানান, “যতটুকু খবর এপর্যন্ত পাওয়া যাচ্ছে তাতে প্রায় ৩৮ জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করা হয়েছে। বহু মানুষ এখনও ধ্বংসস্তুপের নিচে চাপা পড়ে আছে এবং অনেক মানুষের সন্ধান পাওয়া যাচ্ছে না। নিহতের সংখ্যা স্পষ্টতই আরও বাড়বে বলে তিনি জানিয়েছেন। সন্ধ্যার দিকেই সেই সংখ্যা ৭৩-এ পৌঁছে যায়। ভূমিকম্পের তীব্রতায় রাজধানী রোমে বাড়িঘর বিশ সেকেণ্ড ধরে কাঁপে। কম্পন অনুভূত হয়েছে উত্তরে বোলোনা থেকে দক্ষিণে নেপলস্ পর্যন্ত। এরপর ৮০টি ছোট ছোট ভূকম্পনের খবর পাওয়া গেছে।
একটি গ্রামে ধ্বংসস্তুপ থেকে প্রায় দশজনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। বেশ কিছু প্রত্যন্ত গ্রামে উদ্ধারকারীরা এখনও পৌঁছনর চেষ্টা করছেন।
আমাট্রিস শহরের মেয়র জানিয়েছেন শহরের অর্ধেক ধ্বংস হয়ে গেছে এবং শহর থেকে ঢোকা ও বেরনোর পথ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।
ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল থেকে বিশ মিনিট দূরত্বে ক্যারাভানে ছুটি কাটাচ্ছিলেন ভিক্টোরিয়া রাটার।
তিনি বলেন অন্ধকারে জেগে উঠে তারা দেখেন গোটা ক্যারাভান কাঁপছে, তাক থেকে জিনিসপত্র ছিটকে পড়ছে এবং তাদের ক্যারাভান পাহাড়ের ঢাল বেয়ে গড়িয়ে নিচে চলে যাচ্ছে।
যে সব এলাকায় ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে সেসব এলাকায় বহু মানুষ এখনও নিখোঁজ। আক্কুমোলি শহরটি পর্যটকদের কাছে জনপ্রিয় এবং শহরটিতে বহু পর্যটক এই সময়ে বেড়াতে গিয়েছিল। ইটালির প্রেসিডেন্ট সের্গিও মাত্তারেল্লা এই বিপর্যয়কে মর্মান্তিক বলে বর্ণনা করেছেন।
সূত্র : বিবিসি
এফএফ