ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন
আর্জেন্টিনার রাজধানী বুয়েন্স আয়ার্সের কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত কিং ফাহাদ ইসলামিক কালচারাল সেন্টার লাতিন আমেরিকায় ইসলামী সংস্কৃতি ও মূল্যবোধ বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। এটা লাতিন আমেরিকার সর্ববৃহত্ ইসলামিক সেন্টার।
প্রেসিডেন্ট কার্লোস মেনেম (১৯৮৯-১৯৯৯) সৌদি আরব সফরকালে ১৯৯৫ সালে বুয়েন্স আয়ার্সের পালেরমো সেক্টরে আট একর ভূমি ইসলামিক কালচারাল সেন্টারের জন্য দান করেন। তখন এ ভূমির বাজারমূল্য ছিল ১ কোটি ডলার। কার্লোস মেনেম ক্যাথলিক খ্রিস্টান হলেও তাঁর পূর্ব পুরুষ ছিলেন সিরীয় বংশোদ্ভূত মুসলমান। ফলে মুসলমানদের প্রতি ছিল তাঁর আলাদা মমত্ববোধ।
সৌদি স্থপতি জুহাইর ফয়েজ কর্তৃক ডিজাইনকৃত এ কেন্দ্রটির নির্মাণ কাজ শুরু হয় ১৯৯৮ সালে এবং সমাপ্তি ঘটে ২০০০ সালে। আধুনিক মসজিদ, আর্ট গ্যালারি, সাংস্কৃতিক কেন্দ্র, প্রশাসনিক ভবন, প্রাথমিক-মাধ্যমিক ইসলামিক বিদ্যালয়, গণপাঠাগার, ক্যাফে, খেলার মাঠ, ছাত্রাবাস, আন্ডারগ্রাউন্ড গাড়ি পার্ক, দুজন ইমামের বাসভবন—এ সেন্টারের অন্যতম বৈশিষ্ট্য। দু’টি সুউচ্চ মিনার রাতের বেলা চারপাশে আলোক বিচ্ছুরণ ঘটায়। পাম বৃক্ষ ও ঘাস আচ্ছাদিত প্রশস্ত আঙ্গিনা সেন্টারের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে।
সৌদি সরকার দেড় কোটি ডলার ব্যয়ে সেন্টারটি নির্মাণ সম্পন্ন করে। সেন্টারের মসজিদে ১২০০ পুরুষ ও ৪০০ মহিলাসহ মোট ১ হাজার ৬০০ মুসল্লি একসঙ্গে নামাজ আদায় করতে পারেন। যদিও আর্জেন্টিনায় আরও মসজিদ ও ইসলামী শিক্ষা কেন্দ্র রয়েছে, তারপরও কিং ফাহাদ ইসলামিক কালচারাল সেন্টারের ঐতিহ্য চোখে পড়ার মতো। সেন্টারটি আর্জেন্টিনার মুসলিম কমিউনিটির মিলন কেন্দ্র এবং অন্য ধর্মাবলম্বীদের সঙ্গে মুসলমানদের সেতুবন্ধন রচনা করছে।
সেন্টারটি এমন এক গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক এলাকায় অবস্থিত, যার একদিকে রয়েছে গগনচুম্বি শপিংমল, অন্যদিকে রয়েছে ভিআইপি আবাসিক এপার্টমেন্ট।
দিয়াগো ম্যারাডোনাসহ বহু সেলিব্রেটি এসব এপার্টমেন্টে বসবাস করেন। সপ্তাহের মঙ্গলবার ও বৃহস্পতিবার দুপুরে ৪৫ মিনিটের জন্য যে কোনো ব্যক্তি সেন্টারটি পরিদর্শন করতে পারেন। যে কোনো প্রতিষ্ঠান আবেদন জানালে অন্য সময়েও পরিদর্শনের সুযোগ করে দেয়া হয়। তবে গ্রন্থাগার সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত সাধারণের জন্য উন্মুক্ত থাকে।
আরআর