স্টাফ রিপোর্টার : বাংলা সাহিত্যের প্রবাদপুরুষ ও মাসিক মদিনার সম্পাদক মাওলানা মুহিউদ্দীন খান ইন্তিকাল করেছেন। (ইন্না লিল্লাহি ওয়া-ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। তিনি অর্ধমাসেরও বেশি সময় লাইফ সাপোর্টে থেকে শনিবার বিকাল ৬ টা ১০ মিনিটে রাজধানীর ল্যাব এইড হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, আগামীকাল রোববার বাদ যোহর বাইতুল মোকাররমে তার জানাযা অনুষ্ঠিত হবে।
তীব্র শ্বাসকষ্টের কারণে ঢাকার ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালে ভর্তি করা হলে বৃহস্পতিবার রাতে তাকে ল্যাব এইড হাসপাতালে অচেতন অবস্থায় আইসিইউতে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়। নাক ও মুখে নল ঢুকিয়ে কৃত্রিমভাবে তার শ্বাস-প্রশ্বাস নেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়। বৃহস্পতিবার বিকালে জ্ঞান ফিরে। কিন্তু তীব্র যন্ত্রণায় হাসপাতালের বিছানায় তিনি ছটফট করেন।
মুহিউদ্দিন খানের বড় ছেলে মোস্তফা মঈনুদ্দিন খান বলেন, তাঁর বাবা দীর্ঘদিন ধরে ডায়াবেটিসসহ কিডনি ও ফুসফুসের সংক্রমণে ভুগছিলেন। এক মাস ধরে তিনি ইসলামী ব্যাংক হাসপাতা ও ল্যাবএইডসহ বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন।
মাওলানা মহিউদ্দীন খান বাংলাদেশের আলেম সমাজের এক উজ্জ্বল নক্ষত্র ছিলেন। তাফসিরে মাআরিফুল কুরআনের অনুবাদ ছিল তার কর্মজীবনের অনন্য অবদান। তিনি বাংলাদেশের ইসলামি রাজনীতি, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনে বেশ অবদান রাখেন।
তিনি মাওলানা আতহার আলী রহ. প্রতিষ্ঠিত নেজামে ইসলাম পার্টির কেন্দ্রীয় দায়িত্বে সমাসীন ছিলেন। পরবর্তীতে জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের সাথে ইসলামী শাসনতন্ত্রের জোরদার আন্দোলন চালিয়ে জমিয়তের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব গ্রহণ করেন। ১৯৭৫ সালের ২৫/২৬ ডিসেম্বর ঢাকার পটুয়াটুলী জামে মসজিদের দ্বিতীয় তলায় জমিয়তের কাউন্সিলে তিনি জমিয়তের মহাসচিব নির্বাচিত হন। ১৯৮৮ সালের ২৮ মার্চ জমিয়তের সহ-সভাপতি এবং ২০০৩ সালের ১লা জুন নির্বাহী সভাপতি নির্বাচিত হন।
এ ছাড়াও তিনি সাপ্তাহিক মুসলিম জাহানের প্রতিষ্ঠাতা। রাবেতা আলমে ইসলামীর কাউন্সিলর। মু’তামারুল আলম ইসলামীর বাংলাদেশ শাখার প্রেসিডেন্ট। জাতীয় সীরাত কমিটি বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান। নাস্তিক-মুরতাদ প্রতিরোধ আন্দোলন ইসলামী মোর্চার সভাপতি। ইসলামী ঐক্যজোটের প্রতিষ্ঠাতা ভাইস চেয়ারম্যান। জমিয়তে ওলামায়ে ইসলামের সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারণী ফোরামের প্রধান। বিচিত্র এই প্রতিভাবান ব্যক্তির ইন্তিকালে বাংলাদশের জনগণ তাদের একজন আধ্যাত্মিক নেতাকে হারালেন।