শুক্রবার, ১১ এপ্রিল ২০২৫ ।। ২৮ চৈত্র ১৪৩১ ।। ১৩ শাওয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :
বাড়িতে বাবার লাশ রেখে এসএসসি পরীক্ষা দিল নাহিদ মানবতার জন্য আপনিও আসুন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে: শায়খ আহমাদুল্লাহ ইসরায়েলকে প্রতিহত করতে আন্তর্জাতিক উদ্যোগ দরকার: বিএনপি মাদরাসাছাত্রদের কর্মসংস্থানের বিষয়ে কাজ করছে এনসিপি : নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী মুসলিম রাষ্ট্রের ওপর এখন সশস্ত্র ল’ড়াই ফরজ: মুফতি তাকি উসমানি ‘মার্চ ফর গাজা’ কর্মসূচি সফল করার আহ্বান শায়খে চরমোনাই’র নড়াইলে ছাত্র-জনতার ওপর হামলা মামলায় আ. লীগের ৪৮ নেতাকর্মী কারাগারে বিনা খরচে আরও কর্মী নেবে জাপান, সমঝোতা স্মারক সই সাকা চৌধুরীর বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেওয়া সেই বিতর্কিত ব্যক্তি আটক জুলাইয়ের আকাঙ্ক্ষা নিয়ে আসছে নতুন রাজনৈতিক দল, নাম নির্ধারণ

বাজারে আগুন, বিপাকে ক্রেতারা

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

2015_06_17_03_18_24_GFPDwzTbLtWwDBS9W91ezptCpndNNI_original

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট : রাজধানীর দোকানপাট ও কাঁচাবাজারে নির্ধারিত মূল্য তালিকা টানানো থাকলেও তা মানছেন না ব্যবসায়ীরা। ফলে বিপাকে পড়ছেন সাধারণ ক্রেতারা। সরকারের পক্ষ থেকে বার বার কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলা হলেও শাস্তিমূলক কোনো ব্যবস্থা দেখা যায়নি। অন্যদিকে এ বিষয়ে বাজার কমিটিরও কোনো মাথাব্যথা নেই।
রাজধানীর হাতিরপুল ও কাওরান বাজারে সরজমিন দেখা যায়, এক বিক্রেতা কাঁচামরিচ বিক্রি করছেন ৮০ থেকে ১০০ টাকা কেজি দামে। অথচ তার দোকানে টানানো মূল্য তালিকায় কাঁচামরিচের খুচরা মূল্য নির্ধারিত রয়েছে ৪৫ টাকা। শুধু কাঁচামরিচই নয়- অন্য নিত্যপণ্যের মূল্যেও একই অবস্থা। বাড়তি দাম নেয়ার বিষয়ে ওই বিক্রেতা বলেন, তালিকা শুধু নামেই। কামে নাই। মূল্য তালিকার বাইরে এ দাম নেয়ার বিষয়ে ক্রেতারা দায়ী করেন বাজার কমিটিকে। সাইফুল নামে একজন ক্রেতা বলেন, বাজার কমিটি লোক দেখানোর জন্য এই মূল্য তালিকা ঝুলিয়েছে। এর না আছে কোনো মনিটরিং ব্যবস্থা, না আছে কোনো শৃঙ্খলা। এক বিক্রেতা বলেন, তালিকায় শুধু তারিখ পরিবর্তন করা হয়। মূল্য আগেরটাই থাকে।
বাজারে গিয়ে দেখা যায়, চিনি বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৬৫ টাকা কেজি। অথচ মূল তালিকায় দেয়া আছে ৫৮ টাকা। এ হিসাবে এক কেজি চিনিতে বাড়তি মুনাফা করা হচ্ছে ৫ থেকে ১০ টাকা। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাবে দেশে বছরে চিনির চাহিদা ১৪-১৫ লাখ টন। রমজান মাসে প্রায় তিন লাখ টন চিনি লাগে। ঢাকার বাজারে গত মার্চেও প্রতি কেজি চিনির দাম ৪৮-৫০ টাকা ছিল। এরপর দাম বাড়তে বাড়তে এখন ৬৫ টাকা পর্যন্ত উঠেছে। ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) বাজারদরের তালিকা অনুযায়ী, এক মাসে চিনির দাম বেড়েছে প্রায় ১৭ শতাংশ। সিটি গ্রুপের মহাব্যবস্থাপক বিশ্বজিৎ সাহা বলেন, আমরা ৫২ টাকা দরে চিনি বিক্রি করি। সেটা খুচরায় ৫৮-৬০ টাকার বেশি হওয়া উচিত নয়।
মসুর ডাল: হাতিরপুল বাজারে মূল্য তালিকায় দেখা যায়, প্রতিকেজি মসুর ডাল ১০০ থেকে ১১৫ টাকা। অথচ বিক্রেতারা বিক্রি করছেন ১৩০ থেকে ১৪০ টাকায়। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুযায়ী, এপ্রিলের মাঝামাঝি থেকে মে মাসের মাঝামাঝি পর্যন্ত দেশে গড়ে ৭৭ টাকা দরে মসুর ডাল আমদানি হয়েছে। এর সঙ্গে ৫ শতাংশ শুল্ক, ব্যাংক ঋণের সুদ, পরিবহন ও অন্য খরচ এবং আমদানিকারকের ৫ শতাংশ মুনাফা ধরে এক কেজি ডালের গড় দাম দাঁড়ায় প্রায় ৮৪ টাকা। এর সঙ্গে পাইকারি ব্যবসায়ীর মুনাফা ও পরিবহন খরচ বাবদ ৮ শতাংশ, খুচরা ব্যবসায়ীর মুনাফা ও পরিবহন খরচ ১৫ শতাংশ এবং ৫ শতাংশ ঘাটতি ধরে কাঙ্ক্ষিত খুচরা বাজারদর দাঁড়ায় ১০৯ টাকা। কিন্তু বাজারে এখন এক কেজি মোটা দানার মসুর ডাল ১১০ টাকা, মাঝারি দানার মসুর ডাল ১২৫ টাকা ও সরু দানার মসুর ডাল ১৪০-১৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
কাওরান বাজারের দোকানগুলোতে মূল্য তালিকায় দেয়া আছে প্রতি কেজি পিয়াজ ৩০ টাকা। অথচ বিক্রি করছেন দেশি ৪০ থেকে ৫০ টাকা। আর বিদেশি ৩০ থেকে ৪০ টাকা। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাবে, প্রতি কেজি গড়ে প্রায় ১৫ টাকায় আমদানি করা ভারতীয় পিয়াজের কাঙ্ক্ষিত দর হওয়া উচিত গড়ে ২৩ টাকা।
মূল্য তালিকায় দেখা যায়, প্রতিকেজি দেশি রসুনের দাম ১০০ থেকে ১২০ টাকা। আর বিদেশি রসুন কেজি ১৫০ থেকে ১৮০ টাকা। অথচ বিক্রেতারা বিক্রি করছেন দেশি-বিদেশি গড়ে ১৫০ থেকে ২০০ টাকা।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুযায়ী, চীনা রসুনের গড় আমদানি মূল্য ১৩৪ টাকা কেজি। এর সঙ্গে তিন পর্যায়ের খরচ ও মুনাফা যোগ করে খুচরা পর্যায়ে এক কেজি রসুনের দাম হওয়া উচিত ১৯৭ টাকা। কিন্তু বাজারে ভালো মানের চীনা রসুন ২২০-২৩০ টাকা এবং সাধারণ মানের চীনা রসুন ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাবে, এক কেজি ছোলার কাঙ্ক্ষিত দর হওয়া উচিত প্রায় ৮৮ টাকা। বাজারে এখন ছোলা ৮৫ থেকে ১০০ টাকা। কাওরানবাজারে ছোলা সর্বনিম্ন ৮৫ টাকা, চিনি ৬০ টাকা ও সরু দানার মসুর ডাল ১৩০ টাকা। কিন্তু অন্য বাজারগুলোতে দাম এর চেয়ে বেশি। বিভিন্ন মানের ছোলা বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৯০ টাকা, ১০০ টাকা ও ১০৫ টাকায়। তিন মাস আগে এসব বাজারে প্রতি কেজি ছোলার দাম ছিল ৬০-৬৫ টাকা। এরপর দাম বাড়তে শুরু করে। অন্যান্য ডালের দামও বেড়েছে। সরু দানার মসুর ডাল এখন প্রতি কেজি ১৩৫ থেকে ১৫০ টাকা, মোটা মসুর ডাল ১১০ টাকা। মার্চের শুরুতে মোটা মসুর ডাল ৯০ টাকা ছিল।
খুচরা মূল্য তালিকায় মিনিকেট চাল প্রতিকেজি ৪০ টাকা লেখা থাকলেও ৪৬ টাকা থেকে ৪৮ টাকা বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া দুই দিনের ব্যবধানে ৪০ টাকার এক কেজি বেগুন উঠেছে ১০০ টাকায়।
আহাদ আলী নামের এক ক্রেতা বলেন, কর্তৃপক্ষ বরাবরই বলেন অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কোনো ব্যবস্থা নেয়ার লক্ষণ দেখা যায় না।
আওয়ার ইসলাম টোয়েন্টিফোর ডটকম/ওএস


সম্পর্কিত খবর



সর্বশেষ সংবাদ