ফয়জুল আল আমীন : রমজান সংযমের মাস হলেও জীবনযাত্রায় মানুষ বাড়িয়েছে ব্যয় আর দুর্ভোগ। অবশ্য এসব কতিপয় মানুষের সৃষ্টি।প্রতি বছর একশ্রেণীর অসাধু ব্যবসায়ী রমজান মাস শুরু না হতেই নিত্যপণ্যের দাম বাড়ানোর পাঁয়তারা চালায়। যার মাশুল দিতে হয় সাধারণ ভোক্তাদের। রোজায় যেসব পণ্যের চাহিদা বেড়ে যায় সেসব পণ্যের দাম বাড়ানোর শ্যেনদৃষ্টি অসাধু ব্যবসায়ীদের। ইফতারের অন্যতম অনুষঙ্গ ছোলা, খেজুর। ইফতারের উপকরণে যেসব পণ্য প্রয়োজনীয় এর মধ্যে রয়েছে চিনি, তেল, পেঁয়াজ। মুড়ির দামের ক্ষেত্রে ভোক্তাদের তেমন কোনো অভিযোগ না থাকলেও, ভেজাল নিয়ে আপত্তি বরাবরই।
সারাদিন রোজা রেখে রোজদার ইফতারের সময় খেজুর ও এক গ্লাস শরবত পান করে রোজা খোলেন। কিন্তুহঠাৎ করে বেড়ে গেছে খেজুরের দাম। সৌদির খেজুরের ১০ কেজি প্যাকেটের দাম কিছুদিন আগে ছিল ১১০০ টাকা। এখন তা বিক্রি হচ্ছে ১৪০০ টাকায়। ইউরোপের ৫ কেজি খেজুর কিছুদিন আগে বিক্রি হয়েছে ২৪০০ টাকা থেকে ২৫০০ টাকায়। আর এখন তা বিক্রি হচ্ছে ২৮০০ থেকে ৩০০০ টাকায়। ১০ কেজি বরই খেজুরের কার্টন কিছুদিন আগে বিক্রি হয়েছে ১২৫০ থেকে ১৩০০ টাকায়। এখন তা বিক্রি হচ্ছে ১৪০০ থেকে ১৪৫০ টাকায়। ৫ কেজি তিউনিশিয়ার প্যাকেটজাত খেজুর আগে ছিল ১১০০ টাকা। এখন তা বিক্রি হচ্ছে ১৪০০ টাকায়। জাহিদি খেজুর আগে ছিল কেজি ৪৫ টাকা। এখন তা বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৮০ টাকায়। এভাবে সব ধরনের খেজুরের দাম এখন বাড়তির দিকে। অর্থাৎ রোজায় ভোক্তাদের পকেট কাটা শুরু হয়ে গেছে।
ছোলার বাজার কখনো অস্থির, আবার স্থির। বাজেটের আগে এর দাম ছিল কেজিতে ৮০ থেকে ৯০ টাকা। এখন ১০০ থেকে ১১০ টাকা। তবে রকমভেদে কোথাও কোথাও দাম হের-ফের লক্ষ্য করা যায়। তবে একাধিক ব্যবসায়ী বলেছেন, যা দাম বাড়ার তা অনেক আগেই বেড়েছে। এখন আর নতুন করে দাম বাড়ানোর দরকার নেই।
কম বেশি সবার জন্য শরবত তৈরি হয় ইফতারে। হোক তা ঘরে কিংবা অফিসে। আর এই শরবতের উপাদান হলো চিনি আর লেবু। সেই চিনির দাম এখন বাড়তির দিকে। কিছুদিন আগেও চিনি কেজিতে বিক্রি হয়েছে ৫২ টাকায়। আর এখন বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৬৫ টাকায়। পাইকারি থেকে শুরু করে সবার অভিযোগ মিলগেট থেকে চাহিদা অনুযায়ী চিনি সরবরাহ করা হচ্ছে না। হাতে গোনা চিনি পরিশোধনকারী কোম্পানি পুরো জিম্মি করে ফেলেছে বলে একাধিক সূত্রে অভিযোগ পাওয়া গেছে। একইভাবে সয়াবিন তেলের ব্যাপারে একই ঘটনার অভিযোগ পাওয়া গেছে। রোজার মাসে সাধারণ ভোক্তাদের পকেট কাটতে যেন একটি সিন্ডিকেট তৈরি হয়েছে। যা সরকারের অজানা নয়।
এতো গেল দ্রব্যমূল্যের কথা। এবার দুর্ভোগ প্রসঙ্গ। রমজান মাসে দুর্ভোগের মাত্রা বাড়িয়ে দেয় যানজট। যা প্রতিদিনের জীবনে চলার পথে এক পরিচিত হ্যাজার্ড। কিন্তু রমজানে সবাই একসঙ্গে বাড়ি ফেরার পালা চলে। আরো চলে দ্রুততার সঙ্গে একস্থান থেকে গন্তব্য স্থানে পৌঁছানো। আরও আছে যানবাহনের স্বল্পতার সুযোগে বেশি ভাড়া নেয়ার প্রবণতা বাড়ে। রিকশা থেকে শুরু সিএনজি যে কোনো মাধ্যমেই বেশি আদায়ের প্রতিযোগীতায় দুর্ভোগে পড়ে সাধারণ যাত্রী। যানজটের মাত্রা কখনো কখনো দুঃসহ পর্যায়ে নেমে আসে। যা একমাত্র ভুক্তভোগীরা উপলব্ধি করতে পারেন। রাজধানী জুড়ে এ ছিল আজকের সাধারণ চিত্র। রমজানে নতুন মাত্রায় যানজট মোকাবিলায় যেন কেউ নেই।
আওয়ার ইসলাম টোয়েন্টিফোর ডটকম / এইচএ