শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪ ।। ২০ বৈশাখ ১৪৩১ ।। ২৪ শাওয়াল ১৪৪৫


আদর্শবান শিক্ষক-শিক্ষার্থী হতে চাইলে

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আবদুর রউফ আশরাফ ||

একজন চাষির চাষ কাজে উন্নতি করতে হলে তার লাঙল,  এক জোড়া গরু অন্তত মজবুত থাকতে হয়। একজন রিকশাচালকের ক্ষেত্রেও তাই, নামমাত্র ভাঙা রিকশা হলে দুর্গতির শেষ থাকে না। একজন যোদ্ধার হাতিয়ারটা অন্তত মজবুত থাকতে হয়। একজন শিক্ষক শিক্ষাদান নিয়ে দিয়ে জীবন নির্বাহ করতে গেলে তার লেখাপড়ায় ধার যেমন থাকতে হয়, তেমনই জীবনমুখী, কর্মমুখী ও মানবিক গুণাবলিকেন্দ্রিক শিক্ষা থাকতেই হয়। 

বানু মোল্লা শায়েরি লিখেছিলেন,‘গড়িবার কালে যার ইস্পাত হলো চুরি, বালি দিলে ধার আসে না খালি লোহার ছুরি’।

আমরা বর্তমানে এমনই অবস্থায় পড়ে হাবুডুবু খাচ্ছি। আমরা যোগ্যতাই অর্জন করি না, অথচ বড়বড় কিতাব পড়তে চাই।

দুঃখ এখানে যে, কোন নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দিলে দেখা যায় শুধু বলে আমাকে এই কিতাব দিতে হবে। সেই কিতাব দিতে হবে। পক্ষান্তরে শিক্ষার্থীদের উপযুক্ত শিক্ষক নির্বাচিত করতে গেলে একজন শিক্ষক খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। 

কওমী ঘরনার কথাই বলছি, এখনকার একটা প্রচলন হয়ে গেছে, মাদরাসা বাঁচাবাঁচা শিক্ষার্থীদের নির্বাচন করা। মুমতাযপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের ভর্তি করা হয়। তাদের দিয়ে সিরিয়াল আনার প্রবণতা শিক্ষকদের মাথা ব্যাথা। মাটিকে স্বর্ণে পরিণত করতে চায় না; স্বর্ণকে চকচক করাতে চায়। 

শিক্ষার্থীরাও চায়, শহরমুখী প্রতিষ্ঠানের ছোঁয়া। অভিজ্ঞতা শিক্ষকদের সাহচর্য। ফলে দেশের নিম্নমানের প্রতিষ্ঠান ও শিক্ষকেরা হতাশ। একশ্রেণির শিক্ষার্থীরাও নিম্নমানের প্রতিষ্ঠানগুলোতে এসে বিভিন্ন প্রবঞ্চনায় পড়ে যায়। ফলে পড়ালেখাতে থাকে অনাগ্রহী। শিক্ষককের থেকে দূরে চলে যায় শিক্ষার্থীদের মনন। তখন শিক্ষককের অসহায়ত্ব ব্যাপকভাবে কাজ করে। 

শিক্ষা একটা অবিচ্ছিন্ন বা ধারাবাহিক চলমান প্রক্রিয়া। শিক্ষার মানোন্নয়ন বৃদ্ধির করতে অবশ্যই শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের কিছু কিছু গুণ অর্জনকারী হতে হবে। 
একজন শিক্ষক, অবশ্যই খোদাভীরু ও পরহেজগার এবং
সুন্নতে পাবন্দী থাকতে হবে। 
উত্তম আদর্শের ভিত্তিতে তিনি ছাত্রদের গড়ে তুলার সর্বদা চেষ্টা করতে হবে। 
শিক্ষার্থীদের কাছে দুনিয়ার কোন বিনিময় ছাড়া আখেরাতের পুঁজি হিসাবে মনে করতে হবে।
শিক্ষক অবশ্যই গভীর জ্ঞান চর্চার অধিকারী হতে হবে। 
বিশুদ্ধ উচ্চারণ ও প্রকাশভঙ্গির অধিকারী হতে হবে।
শিক্ষক ছাত্রদের প্রতি মমত্ববােধ আদর সোহাগ ও ভালােবাসা সম্পন্ন হয়ে স্নেহ –মমতা দিয়ে শিক্ষার্থীদের পাঠদানে অভ্যস্ত হতে হবে। 
শিক্ষক, অবশ্যই প্রহার বা তাদের প্রতি নির্মমতা প্রদর্শন না করে বরং দরদি মন নিয়ে তাদের ভুলগুলাে ধরিয়ে দেওয়ার মানসিকতা অর্জন করতে হবে।

শিক্ষক বিচক্ষণওয়ালা হতে হবে । তিনি ছাত্রদের মনমেজাজ , পছন্দ –অপছন্দ ও গ্রহণ করার ক্ষমতা ইত্যাদি বিষয়ে দৃষ্টি রাখার সতর্ক থাকতে হবে। 

আর শিক্ষার্থীদের উচিত তাদের সর্বোপরি একজন আদর্শবান শিক্ষকগ্রহন করা এবং নিজকে আদর্শবান শিক্ষকের কাছে সোপর্দ করা।

কেএল/


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ