ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর সিনিয়র নায়েবে আমীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম শায়খে চরমোনাই বলেছেন, ৫ আগস্টের পর মানুষ স্বাধীনভাবে কথা বলতে পারছে। ফ্যাসিবাদমুক্ত দেশ গড়ে তুলতে রাষ্ট্র সংষ্কার বেশি জরুরি। সংষ্কার শেষ করে কালো টাকা ও পেশি শক্তিমুক্ত নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে। এজন্য পিআর পদ্ধতির নির্বাচনের বিকল্প নেই। গতানুগতিক নির্বাচন দিয়ে ফ্যাসিবাদকে পুনরায় প্রতিষ্ঠা করার কোন মানে হয় না।
মুফতি ফয়জুল করীম বলেন, ইসলাম পূর্ব যুগে মানুষের কোন অধিকারই ছিল না। ধর্মের স্বাধীনতা ছিল না। ইসলাম পূর্ব আরবের অবস্থা ছিল অত্যন্ত নাজুক। ইসলামের নবী হযরত মুহাম্মদ সা. ইসলাম প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে ইসলামের সৌন্দর্য জাতির সামনে তুলে ধরায় মানুষ দলে দলে ইসলামের সুশীতল ছায়াতলে আশ্রয় নিতে শুরু করে। মানুষ বুঝতে পেরেছিল ইসলামই একমাত্র মুক্তির ঠিকানা। তিনি বলেন, বিগত স্বাধীনতার ৫৩ বছরে তিনটি দলের শাসনে মানুষ দেখেছে শোষণ প্রবঞ্চনা। কাজেই এদেশের ভবিষ্যত হলো একমাত্র ইসলাম। ইসলাম ছাড়া মানবতার মুক্তি ফিরে আসবে না।
আজ শুক্রবার সকালে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে রাজনৈতিক শুদ্ধাচার ও বৈষম্যহীন কল্যাণ রাষ্ট্র গঠনে কার্যকরী নির্বাচন ব্যবস্থা সংখ্যানুপাতিক (চজ) পদ্ধতিতে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দাবীতে ইসলামী শ্রমিক আন্দোলন বাংলাদেশ ঢাকা মহানগর দক্ষিণের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত 'নগর সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। এতে প্রধান বক্তা ছিলেন সংগঠনের সেক্রেটারী জেনারেল মাওলানা খলিলুর রহমান। ইসলামী শ্রমিক আন্দোলন বাংলাদেশ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সভাপতি হাফেজ মুহাম্মদ শাহাদাত প্রধানিয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে বিশেষ অতিথি ছিলেন ইসলামী আন্দোলনের কেন্দ্রীয় শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক আলহাজ আব্দুর রহমান, ইসলামী মুক্তিযোদ্ধা পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কাশেম, নগর দক্ষিণ সেক্রেটারী আব্দুল আউয়াল মজুমদার, শ্রমিকনেতা শাহাদাত হোসাইন, মাওলানা কামাল উদ্দিন, ডা. মজিবুর রহমান, মুহাম্মদ ইমাম হোসেন ভুঁইয়া, মাওলানা আলআমিনসহ নগর নেতৃবৃন্দ।
সম্মেলন শেষে হাফেজ মুহাম্মদ শাহাদাত হোসেন প্রধানিয়াকে সভাপতি, মুহাম্মদ ইমাম হোসেন ভুঁইয়াকে সহ-সভাপতি এবং শামসুল ইসলাম মোল্লাকে সাধারণ সম্পাদক করে ২০২৫-২৬ সেশনের জন্য নতুন কমিটি ঘোষণা করে তাদের শপথ বাক্য পাঠ করান প্রধান অতিথি।
মুফতি ফয়জুল করীম বলেন, ইসলাম পূর্বে শ্রমিক, মহিলা, গরিব, কালো এ শ্রেণির মানুষের অধিকার ছিল না। ইসলাম এসে প্রত্যেকের অধিকার প্রতিষ্ঠা করেছে। আরবে নারীদের অধিকার ছিলনা, ইসলাম আসার পর নারীদের অধিকার প্রতিষ্ঠাই নয়, তাদের অগ্রাধিকার দিয়েছে। শুধু তাই নয়, ইসলাম আসার পর খলিফাতুল মুসলিমীন হযরত ওমর রা. ঘোষণা দিলেন, আমার খেলাফতের সময় শুধু মানুষ নয়, একটি বন্য প্রাণিও না খেয়ে থাকবে না। তিনি বলেন, ইসলাম প্রতিষ্ঠা হলে, বস্তিতে-ঝুঁপড়িতে, ফুটপাতে, খোলা আকাশের নিচে মানুষকে মানবেতর জীবন যাপন করতে হবে না। শিশু কাঁদে করে মায়েদের ভিক্ষা করতে হবে না। ইসলাম প্রতিষ্ঠা হলে শাসকগণ মানুষের প্রকৃত দু:খ-দুর্দশা লাঘবে ঘরে ঘরে গিয়ে তাদের খাবার পৌঁছে দিবেন, তাদের সমস্যার সমাধান করবেন। তিনি বলেন, ইসলাম প্রতিষ্ঠিত নাই বলে ফুটপাতে হাজার হাজার শিশু নেশাগ্রস্ত অবস্থা পড়ে থাকে। ইসলাম প্রতিষ্ঠা হলে তাদেরকে শিক্ষার আলোর মাধ্যমে যুগসেরা শিক্ষিত করে গড়ে তোলা হবে।
ইসলামী আন্দোলনের নায়েবে আমীর বলেন, ইসলাম না বলেই ক্ষমতাসীনদের ছত্রছায়ায় ধর্ষণ সেঞ্চুরী পালন করে, আবরারের মত মেধাবীদের হত্যা করে, আয়নাঘর সৃষ্টি করে বিরোধীমত দমন করে। কৃষক-মজুর, কামার-কুমার পার্থক্য সৃষ্টি করে অধিকার বঞ্চিত রাখা হয়।
মুফতি ফয়জুল করীম বলেন, ইসলাম কী জিনিস মানুষ বুঝতে পারলে ইসলাম ছাড়া অন্য কোন মত-পথ গ্রহণ করতো না। তিনি সকলকে ইসলামের দাওয়াত দিয়ে সৌন্দর্য তুলে ধরার রআহ্বান জানান।
হাআমা/