বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ।। ৪ আশ্বিন ১৪৩১ ।। ১৬ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :
মেয়াদবিহীন ইন্টারনেট প্যাকেজ চালুর আহ্বান টেলিযোগাযোগ উপদেষ্টার মেরামতের পর উত্তরা উত্তর থেকে মতিঝিল পর্যন্ত মেট্রোরেল চলাচল শুরু শহীদদের পরিবার প্রাথমিকভাবে ৫ লাখ ও আহতরা ১ লাখ টাকা করে পাবেন ড. ইউনূসের প্রথম একনেক সভায় অনুমোদন পেলো ৪ প্রকল্প স্বাধীন শিক্ষাব্যবস্থা প্রণয়নের দাবিতে শুক্রবার রাজধানীতে ‘শিক্ষা সমাবেশ’ কওমি সনদের যথাযথ মূল্যায়নের দাবিতে কাল জাতীয় সেমিনার সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়স ৩৫ করার প্রস্তাব মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে সিলেটে শাপলা শহিদ জাহিদের কবর জিয়ারতে নাগরিক আলেমসমাজ উসকানিদাতা কবি, সাংবাদিকরাও বিচারের আওতায় আসবেন: তথ্য উপদেষ্টা এখন থেকে প্রকল্পের সব তথ্য ওপেন থাকবে: প্রধান উপদেষ্টা

ঢাকায় জাতীয় ইমাম সম্মেলন অনুষ্ঠিত


নিউজ ডেস্ক

নিউজ ডেস্ক
শেয়ার
ছবি: আওয়ার ইসলাম

|| কাউসার লাবীব ||

পূর্বাচলের বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী প্রদর্শনী কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হলো জাতীয় ইমাম সম্মেলন-২০২৩। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সৌদি আরবের মসজিদ-ই-নববীর ইমাম শায়খ ড. আব্দুল্লাহ বিন আব্দুর রহমান আল বুয়াইজান। অনুষ্ঠানে সারাদেশ থেকে প্রায় এক লাখ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ইমাম যোগ দেন।

আজ সোমবার (৩০ অক্টোবর) বেলা ১১ টায় শুরু হয়ে দুপুর পৌনে ২টা পর্যন্ত চলে এই সম্মেলন।

জাতীয় ইমাম সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ইসলাম শান্তির ধর্ম। ইসলাম সহনশীল ধর্ম। যা আমাদের নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম শিখিয়েছেন। তার যে বিদায় হজের বাণী সেই বাণীই আমরা অনুসরণ করি। কাজেই সেদিকে লক্ষ্য রেখে আমাদের দেশের কোন ছেলেমেয়ে যেন জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস, মাদক এসবের সঙ্গে সম্পৃক্ত না হয়। আপনারা সে ব্যাপারে যথাযথ শিক্ষা দেবেন এবং সে ব্যাপারে যথাযথ ব্যবস্থা নেবেন।

তিনি বলেন, ‘মুষ্টিমেয় লোকের জন্য আমাদের পবিত্র ধর্ম, শান্তির ধর্ম, বিশ্বের সর্বশ্রেষ্ঠ ধর্ম ইসলাম যেন প্রশ্নবিদ্ধ না হয় সেদিকে সকলকে দৃষ্টি দেবার জন্য অনুরোধ জানাচ্ছি।’

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘আল্লাহ আমাদের সৃষ্টি করেছেন। আল্লাহর হুকুম ছাড়া গাছের একটি পাতাও নড়েনা। আমরা সেই বিশ্বাস করি। সেই জন্য যার যার ধর্ম সে সে পালন করবে। এই পরিবেশটাই আমরা রক্ষা করতে চাই।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা চাই আমাদের হাজীরা যেন কষ্ট না পায়। হজের ইমিগ্রেশন সহজ করতে ব্যবস্থা নিয়েছি। কওমী মাদ্রাসার শিক্ষা সনদের স্বীকৃতি দিয়েছি। ৩৫ হাজার মসজিদে পাঠাগার করে দিয়েছি। ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয় করেছি। ইমাম-মুয়াজ্জিনদের জন্য ইমাম-মুয়াজ্জিন কল্যাণ ট্রাস্ট গঠন করেছি। ওলামারা বিপদে পড়লে সহযোগিতা নিতে পারে। যাকাত তহবিল প্রণয়ন আইন করেছি।’

এ সময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ফিলিস্তিনে ইসরায়েল যে নারকীয় হত্যাযজ্ঞ চালাচ্ছে, আমরা তার নিন্দা জানাই। আমি নিজেও এমনটি চাই না। আমরা চাই না আর কোনো শিশু প্রাণ হারাক।’

ইউক্রেন যুদ্ধের প্রসঙ্গ তুলে তিনি বলেন, ‘বিশ্ব নেতৃবৃন্দকে আমি বলেছি, এই যুদ্ধ থামান। আমরা শান্তি চাই। যুদ্ধের ভয়াবহতা আমরা দেখেছি। আমরা যুদ্ধ চাই না।’

 বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মসজিদ-ই-নববীর ইমাম শায়খ ড. আব্দুল্লাহ বিন আব্দুর রহমান আল বুয়াইজান বলেন, আমাদের সব ভালোবাসা আল্লাহর জন্য। আজকের এই সমাবেশে আমাদের একত্রিত হওয়া এটি দ্বীন এবং ঈমানের ভিত্তিতে। মুসলিম পরিচয়ের ভিত্তিতে। এই ধারাবাহিকতায় আমি সৌদি আরব তথা মদীনা মুনাওয়ারা থেকে আপনাদের সামনে উপস্থিত হয়েছি। মদিনা মনোয়ারা পৃথিবীর পবিত্রতম একটি স্থান, ওহী নাজিলের স্থান, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের হিজরতের স্থান। আমি সেখান থেকে এসেছি মুসলিম উম্মার এই সমাবেশে। এই মহান মাহফিল, এই সম্মেলন আমাদেরকে একত্রিত করেছে। দেশের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গ, সম্মানিত ওলামায়ে কেরাম, হাফেজে কোরআনদেরকে দেখে আমি কৃতজ্ঞ।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী নিজের আগ্রহে ৫৬৪টি মসজিদ নির্মাণ করেছেন; যার ৫০টি আজকে উদ্বোধন হবে। মহান এই অনুষ্ঠানে আমি উপস্থিত হতে পেরে অত্যন্ত আনন্দিত এবং গর্বিত। তার এই কাজটিকে আমাদের সকলের নাজাতের জন্য আল্লাহ তায়ালা কবুল করুন এবং আল্লাহ তায়ালা উপযুক্ত প্রতিদান দান করুন। আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘একমাত্র তারাই আল্লাহর মসজিদসমূহ আবাদ করবে, যারা আল্লাহ ও শেষ দিনের প্রতি ঈমান রাখে, সালাত কায়েম করে, যাকাত প্রদান করে এবং আল্লাহ ছাড়া কাউকে ভয় করে না। আশা করা যায়, ওরা হিদায়াতপ্রাপ্তদের অন্তর্ভুক্ত হবে।’

তিনি আরো বলেন, আজকে হাফেজে কুরআনদেরকে পুরস্কৃত করা হবে। নিশ্চয় এটি অত্যন্ত প্রশংসনীয় কাজ। আমি আবারো উপস্থিত সবার কৃতজ্ঞতা আদায় করছি। বাংলাদেশে প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। আল্লাহ তায়ালা আমাদের সবাইকে কবুল করুন।

শায়খ ড. আব্দুল্লাহ বিন আব্দুর রহমান আল বুয়াইজানের বক্তব্যের পর জাতীয় পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ ইমাম ও বিশ্বজয়ী হাফেজদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করেন প্রধানমন্ত্রী। এবং ষষ্ঠ পর্যায়ে ৫০টি মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের উদ্বোধনও ঘোষণা করেন।

ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক খানের সভাপতিত্বে আজকের জাতীয় ইমাম সম্মেলনে অংশ নেন ধর্ম মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি হাফেজ রুহুল আমিন মাদানী, জাতীয় মসজিদের খতিব মুফতি রুহুল আমিন, ধর্ম সচিব মু. আ. হামিদ জমাদ্দার, মন্ত্রী পরিষদের সদস্য, সংসদ সদস্য ও সরকারের পদস্থ কর্মকর্তাগণ।

উল্লেখ্য, দেশের প্রতিটি জেলা ও উপজেলার পাশাপাশি সব পৌরসভায় ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র ও মডেল মসজিদ নির্মাণে ২০১৭ সালে ৯,৪৩৫ কোটি টাকার একটি প্রকল্প গ্রহণ করে সরকার। এ প্রকল্পের অধীনে সারা দেশে ৫৬৪টি মডেল মসজিদ নির্মাণের পরিকল্পনা করা হয়।

এখন পর্যন্ত দেশব্যাপী বিভিন্ন পর্যায়ে ২৫০টি মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সেন্টার উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী। আজ নতুন আরও ৫০টি মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র উদ্বোধনের মাধ্যমে এই সংখ্যা দাঁড়ালো তিনশটিতে।

কেএল/


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ