এম শাহরিয়ার তাজ, খুলনা প্রতিনিধি:
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর নায়েবে আমীর আলহাজ্ব হাফেজ মাওলানা অধ্যক্ষ আব্দুল আউয়াল বলেছেন, এক লুটেরা, দুর্নীতিবাজ ও খুনি-ডাকাতকে পরিবর্তন করে আরেক ডাকাতকে ক্ষমতায় বসাতে চাই না। আমরা ঐক্য চাই কিন্তু এই ঐক্যের মাধ্যমে কোনো বাতেল প্রতিষ্ঠিত হোক সেটা চাই না।
তিনি বলেন, ‘এ দেশ আমার। এ দেশ আপনার। ঢাবি, বুয়েট আমাদের, পড়ার অধিকার সবার। দলমত, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে দেশ সবার। মুসলিমদের পাশাপাশি সকল ধর্মের মানুষ এখানে নিরাপদ থাকবে এটাই স্বাভাবিক। সংখ্যালঘুদের নিয়ে যারা রাজনীতি করে তারাই হিন্দুদের মন্দিরে আক্রমণ চালায়। ৫ আগস্ট যে বৈষম্য ও জুলুমের বিরুদ্ধে বিজয় এনেছি পরবর্তী সময় এসে আমরা দেখলাম সেই আগের মতোই দখলদারি, চাঁদাবাজি, ধ্বংসযজ্ঞ শুরু করেছে একটি গোষ্ঠী। এসব বন্ধ করতে হবে। সবাই মিলে একটি কল্যাণরাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে। একটি কল্যাণরাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা ছাড়া ভাগ্যাহত জনতার ভাগ্যের কোনো পরিবর্তন হবে না। স্বাধীনতা অর্থবহ হবে না।’
তিনি আরো বলেন, রকিব, হুদা ও আউয়াল কমিশনকে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় নিয়ে আসতে হবে। অবৈধ নির্বাচন বাতিল করতে হবে। অবৈধ নির্বাচনের সাথে সংশ্লিষ্ট সকলকে আইনের আওতায় আনতে হবে।
আজ শুক্রবার (১৩ই সেপ্টেম্বর) দুপুর ৩ টায় খুলনার প্রাণকেন্দ্র দৌলতপুর শহীদ মিনার চত্বরে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ খুলনা মহানগরীর দৌলতপুর থানার উদ্যোগে দৌলতপুর থানা সভাপতি আলহাজ্ব বন্দ সরোয়ার হোসেন এর সভাপতিত্বে ও দৌলতপুর থানা সহ-সভাপতি মোঃ তরিকুল ইসলাম কাবির এবং থানা সেক্রেটারী মোঃ আলফাত হোসেন লিটন এর পরিচালনায় অনুষ্ঠিত গণ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর নায়েবে আমীর আলহাজ্ব হাফেজ মাওলানা অধ্যক্ষ আব্দুল আউয়াল এসব কথা বলেন।
জানা গেছে, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে সংঘটিত গণহত্যার বিচার,দুর্নীতিবাজদের গ্রেফতার ও অবৈধ সম্পদ বাজেয়াপ্ত করে নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা করা, সংখ্যানুপাতিক (PR) পদ্ধতিতে জাতীয় সংসদ নির্বাচন , বন্ধ মিল কলকারখানা চালু ,ইহকালীন শান্তি ও পরকালীন মুক্তির লক্ষ্যে ইসলামী সমাজভিত্তিক কল্যাণ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার দাবি এবং ছাত্র জনতার আন্দোলনে আহতদের সুস্থতা ও বীর শহীদদের মাগফিরাত কামনায় বিশেষ দোয়া ও গণ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
গণ সমাবেশে প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন খুলনা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা শোয়াইব হোসেন। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ এর কেন্দ্রীয় সেক্রেটারী জেনারেল মুনতাছির আহমাদ, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ খুলনা মহানগর এর সহ-সভাপতি শেখ মোঃ নাসির উদ্দিন, নগর সেক্রেটারী মুফতি ইমরান হোসাইন ও জয়েন্ট সেক্রেটারী প্রভাষক আবু গালিব, ইসলামী যুব আন্দোলন বাংলাদেশ খুলনা মহানগর এর সভাপতি মোঃ ইমরান হোসেন মিয়া, ইসলামী শ্রমিক আন্দোলন বাংলাদেশ খুলনা মহানগর এর সাধারণ সম্পাদক মোঃ ইব্রাহীম খাঁন, ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ খুলনা মহানগর এর সহ-সভাপতি মোঃ মাহাদী হাসান মুন্না, মোঃ লুৎফর রহমান, যুবনেতা মোঃ আমজাদ হোসেন, শ্রমিক নেতা আলহাজ্ব শেখ কাউছার আলী, মাওলানা শেখ ওয়াহিদুজ্জামান, ছাত্র নেতা মোঃ রাকিবুল ইসলাম, মোঃ শাহরিয়ার তাজ,মোঃ ওলিয়ার রহমান বন্দ , মুফতী হুসাইন মুহাম্মদ জুম্মান , মোঃ রবিউল ইসলাম রবি, মোঃ মাসুদুর রহমান, মোঃ শিমুল ব্যাপারী , মোঃ মিলন ,আব্দুর রহমান, মোঃ বশির উদ্দিন, মোঃ মুরাদ হোসেন মোড়ল, মোঃ নাজমুল শিকদার, যুবনেতা মোঃ মহাসিন হাওলাদার, মোঃ কামাল হাওলাদার, মোঃ নাসির উদ্দিন, আলহাজ্ব শাহজাহান ব্যাপারী , মোঃ নাদের আলী মুন্সী, মোঃ ইমরান হোসেন বাবু প্রমুখ ।
প্রধান বক্তার বক্তব্যে মাওলানা শোয়াইব হোসেন বলেন, বিগত ১৬ বছর বাংলাদেশ ফ্যাসিস্ট হাসিনার স্বৈরাচারী দুঃশাসনের কবলে ছিল। কায়েম করেছিল ত্রাসের রাজনীতি। দেশের সবকটি সেক্টর কুড়মুড় করে শেষ করে দিয়েছে। অন্যসব খাতের মত শিক্ষাব্যবস্থাকেও সম্পূর্ণরূপে ধ্বংসের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিয়েছে। পৌত্তিলকতা, নাস্তিক্যবাদ, শারীরিক শিক্ষার নামে যৌনতা ও ট্রান্সজেন্ডারের মত চরম ঘৃণিত কুফরি বিষয় সন্নিবেশিত করে এমন এক শিক্ষাব্যবস্থা জাতির ঘাড়ে চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে, আমরা মনে করি এটা জাতিকে মেধাহীন ও অদক্ষতার অন্ধকারে নিমজ্জিত করার নীল নকশা ছাড়া আর কিছু নয়। তিনি বলেন, বৈষম্যেবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে অর্জিত নতুন এ স্বাধীনতার সুফল পেতে আদর্শবাদী দেশপ্রেমিক সুনাগরিক তৈরির জন্য বর্তমানে প্রচলিত শিক্ষা ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তনের কোন বিকল্প নেই।
হাআমা/