বৃহস্পতিবার, ২২ মে ২০২৫ ।। ৮ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ ।। ২৪ জিলকদ ১৪৪৬


অতিরিক্ত ঠান্ডা পানি খেলে যেসব ক্ষতি হতে পারে 

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

মুহাম্মদ মিজানুর রহমান

অনেকেই নিয়মিত ফ্রিজের ঠান্ডা পানি পান করে অভ্যস্ত। বিশেষ করে হাঁসফাস করা প্রচন্ড গরমে গলা শুকিয়ে কাঠ হয়ে গেলে ফ্রিজের এক গ্লাস ঠান্ডা পানি শরীর ও মনে এনে দেয় এক প্রশান্তিময় অনুভূতি। কিন্তু আপনি কি জানেন ফ্রিজের ঠান্ডা পানি সাময়িক প্রশান্তি এনে দিলেও এই পানির কারণেই হতে পারে দীর্ঘস্থায়ী আশান্তির সূত্রপাত? তবে ফ্রিজের ঠান্ডা পানির সাথে সম পরিমাণ নরমাল পানি মিশিয়ে খেতে পারেন নির্দ্বিধায়।

হৃদযন্ত্রের ছন্দপতন

সুস্থ-সবল মানুষের হৃদস্পন্দন হয় একটি স্বাভাবিক গতিতে। কিন্তু হঠাৎ ঠান্ডা পানির দাপট থামিয়ে দেয় স্বাভাবিক এই স্পন্দন। আপনার নার্ভের উপর পড়তে পারে এই ছন্দপতনের প্রভাব। ঘটে যেতে পারে হার্ট অ্যাটাকের মতো ঘটনাও।

ঠান্ডাজনিত জটিলতা

একজন মানুষের শরীরে সাধারণ ভাবে তাপমাত্রা হয় ৯৮ ডিগ্রি ফারেনহাইট। নিয়মিত ঠান্ডা পানি খেলে দেহের তাপমাত্রা কমে যেতে পারে হঠাৎ করেই। আর তাপমাত্রার এই উঠানামা টনসিল, সর্দি-কাশি, জ্বরসহ নানান অসুখের কারণ হতে পারে। নিয়মিত ঠান্ডা পানি পান করার কারণে শ্লেষ্মা তৈরি হয়ে ব্যাঘাত ঘটাতে পারে শ্বাস-প্রশ্বাসেও। 

মাথা ব্যথা ও মাইগ্রেন

যাদের মাইগ্রেন বা মাথা ব্যথার সমস্যা রয়েছে তাদের জন্য ঠান্ডা পানি পান করা রীতিমত নিষিদ্ধ! কারণ, হঠাৎ করে ঠান্ডা পানি সরাসরি মস্তিষ্ককে প্রভাবিত করে। যার ফলে প্রচন্ড মাথা ব্যথা শুরু হয়ে যেতে পারে।

ব্যাহত করে রক্ত চলাচল

স্বাভাবিক রক্ত চলাচল সুস্থতার অন্যতম লক্ষ্মণ। কিন্তু ঠান্ডা পানি রক্তনালিকে সংকুচিত করে ফেলে। সেকারণে স্বাভাবিক রক্ত চলাচল ব্যাহত হয়। এর ফলে শরীরে সংক্রমণ হয়ে থাকলে সেটার নিরাময়  প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্থ হতে পারে। আর ঠান্ডা লেগে নাক বন্ধ হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনাতো আছেই। 

হজম প্রক্রিয়ায় সমস্যা

একটি খাবার সুষ্ঠভাবে হজম হওয়ার জন্য প্রয়োজন নির্দিষ্ট একটি তাপমাত্রা। আর খাবার পর পরই আমরা অনেক সময় ঠান্ডা পানি খেয়ে থাকি। এ কারণে তাপমাত্রা কমে যায়। সেটা হজম প্রক্রিয়ায় বাধা হয়ে দাঁড়ায়। তাছাড়া হজমের সময় এক  ধরনের পুষ্টি শোষিত হয়। ঠান্ডা পানি সেই স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায়ও গোলযোগ সৃষ্টি করে। শরীর তখন হজম প্রক্রিয়ার চেয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়ে শরীরের স্বাভাবিক তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে।

দাঁতে শিরশিরানি

অনেকেরই দাঁত কিংবা মুখে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা থাকে। অতিরিক্ত ঠান্ডা পানি সেসব সমস্যাকে বাড়িয়ে দেয় বহুগুণ। একারণে দাঁত ব্যথাসহ দাঁতে শিরশিরানি হতে পারে। যাদের দাঁত সংবেদনশীল তাদের ঠান্ডা ঠান্ডা পানি না খাওয়াই উত্তম।

সৃষ্টি করতে পারে পানিশূন্যতা

অল্প একটু ঠান্ডা পানি খেলেই মানুষের তৃষ্ণা মিটে যায়। অথচ শরীরের তখনও পানির চাহিদা পূরণ হয়নি। তাই তৃষ্ণা মিটে গেলেই পানি খাওয়া বন্ধ করে দিলে ধীরে ধীরে পানির এই ঘাটতি থেকে তৈরি হতে পারে মারাত্মক পানিশূন্যতা।

খনিজ উপাদানে ঘাটতি

স্বাভাবিক পানিতে থাকে বিভিন্ন ধরনের খনিজ উপাদান। এসব খনিজ উপাদান একজন মানুষের সুস্থ্যভাবে বেড়ে উঠার জন্য খুবই জরুরি। কিন্তু ফ্রিজের ঠান্ডা পানিতে এসব উপাদানের কার্যকারীতা অনেকাংশে নষ্ট হয়ে যায়। পানি থেকে খনিজ চাহিদা অপূর্ণ থাকার কারণে শরীরে দেখা দিতে পারে অনেক জটিলতাও।

ওজন বাড়িয়ে দেয়

যারা ডায়েট করেন তাদের জন্য খাবার তালিকায় ঠান্ডা পানি রাখা মোটেও উচিত নয়। কারণ, নিয়মিত ঠান্ডা পানি খেলে ওজন কমার পরিবর্তে আরও বেড়ে যেতে পারে। মেদ না ঝরে আরও জমতে শুরু করে।

এনএইচ/


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ