প্রত্যেকে চান তার মনের ইচ্ছে-আকাঙ্ক্ষাগুলো পূরণ হোক। মুমিনরাও তাদের কল্যাণকর আশাগুলো পূরণ হওয়ার জন্য আল্লাহ তায়ালার কাছে দোয়া করেন। হাদিসে এমন একটি উপায়ের কথা বলা আছে, যেটি অবলম্বন করলে আল্লাহ তায়ালা দোয়া কবুল করেন। সেই উপায়টি হলো ‘ইসমে আজম’ পাঠ করার মাধ্যমে দোয়া করলে আল্লাহ তায়ালা দোয়া কবুল করবেন।
ইসমে আজম বা আল্লাহর শ্রেষ্ঠ নামগুলো কী—এ বিষয়ে আলেমদের ভিন্ন ভিন্ন মত রয়েছে। কেউ বলেছেন, আল-হাইয়্যু (চিরঞ্জীব), আল-ক্বাইয়ুম (চিরস্থায়ী), জাল-জালালি ওয়াল ইকরাম (চিরঞ্জীব, চিরস্থায়ী, মর্যাদাবান ও কল্যাণময়) এসব নামই ইসমে আজম।
ইসমে আজমসহ যে দোয়া হাদিসে এসেছে
اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ بِأَنَّ لَكَ الْحَمْدَ، لاَ إِلَهَ إِلاَّ أَنْتَ وَحْدَكَ لاَ شَرِيكَ لك الْمَنَّانُ بَدِيعَ السَّمَوَاتِ وَالأَرْضِ، يَا ذَا الْجَلالِ وَالإِكْرَامِ، يَا حَيُّ يَا قَيُّومُ
উচ্চারণ: ‘আল্লাহুম্মা ইন্নি আস-আলুকা বি-আন্না লাকাল হা'মদু লা-ইলা-হা ইল্লা-আনতা ওয়াহ'দাকা লা-শারিকা লাকাল মান্না-ন, ইয়া বাদিআ'স্ সামা-ওয়া-তি ওয়াল আরদ্বি, ইয়া জাল জালালি ওয়াল ইকরাম। ইয়া হাইয়্যু ইয়া কাইয়্যুম।’
অর্থ: ‘হে আল্লাহ! আপনার নিকট এই ওসিলায় চাই যে, (আমি বলি) কেবল আপনারই প্ৰশংসা, আপনি ব্যতীত প্রকৃত কোনো উপাস্য নেই, আপনি এক, আপনার কোনো শরিক নেই, অনুগ্রহ প্রদর্শনকারী হে আসমানসমূহ ও জমিনের সৃষ্টিকর্তা, হে মর্যাদা ও সম্মান দানের অধিকারী। হে চিরঞ্জীব ও সর্বনিয়ন্তা।’
আনাস রা. থেকে বর্ণিত, এক সাহাবি রাসুলুল্লাহ সা.-এর উপস্থিতিতে উক্ত শব্দমালার মাধ্যমে দোয়া করেছিলেন। তখন রাসুল সা. তাঁকে বললেন, ‘জানো, তুমি কী দিয়ে দোয়া করেছ? তুমি দোয়া করেছ ‘ইসমে আজম’ দিয়ে, যা দ্বারা দোয়া করলে আল্লাহ কবুল করেন এবং তা দ্বারা কিছু চাইলে আল্লাহ তা দান করেন।’ (সুনানে তিরমিজি: ৩৫৪৪; আবু দাউদ: ১৪৯৫; নাসয়ি: ১৩০)
এ সম্পর্কিত আরেকটি দোয়া হলো-
اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ أَنِّي أَشْهَدُ أَنَّكَ أَنْتَ اللَّهُ لاَ إِلَهَ إِلاَّ أَنْتَ الأَحَدُ الصَّمَدُ الَّذِي لَمْ يَلِدْ وَلَمْ يُولَدْ وَلَمْ يَكُنْ لَهُ كُفُوًا أَحَدٌ
উচ্চারণ: ‘আল্লাহুম্মা ইন্নি আস আলুকা, আন্নি আশহাদু আন্নাকা আংতাল্লাহ, লা-ইলাহা ইল্লা আংতাল আহাদুস সামাদ, আল্লাজি লাম ইয়ালিদ ওয়া লাম ইউলাদ ওয়ালাম ইয়া কুল্লাহু কুফুওয়ান আহাদ।’
বুরাইদা রা. থেকে বর্ণিত, রাসুল সা. দুইজন লোককে দোয়াটি বলতে শুনে বললেন, ‘তোমরা আল্লাহর কাছে ইসমে আজমের মাধ্যমে চেয়েছ, যার মাধ্যমে চাইলে আল্লাহ দান করেন এবং দোয়া করলে আল্লাহ কবুল করেন।’ ( আবু দাউদ: ১৪৯৩)
উপরের দুটি বর্ণনা মূলত ইসমে আজমসহ দোয়ার শুরুর অংশ। পরবর্তী অংশে নিজের ইচ্ছার কথা বলবেন। অর্থাৎ উপরের আরবি অংশটুকু পড়ার পর নিজে যা চান, তা আল্লাহর কাছে তুলে ধরবেন। এভাবে দোয়া সম্পূর্ণ করবেন। আল্লাহ তায়ালা মুসলিম উম্মাহর প্রত্যেককে ইসমে আজমের মাধ্যমে দোয়া করার তাওফিক দান করুন। আমিন।
এনএ/