হুমায়ুন আইয়ুব
দাওয়াতের মেহনত নবীওয়ালা মেহনত। বান্দাকে আল্লাহর সঙ্গে জুড়ে দেওয়ার মেহনত। পথহারা মানুষ, আল্লাহভোলা মানুষকে আলোকিত করার মেহনত। হজরত আদম আলাইহিস সালাম থেকে শুরু করে হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামসহ পৃথিবীর সব নবী-রাসুল, কালেমা লা ইলাহা ইল্লাল্লাহুর মেহনত করেছেন। এক আল্লাহর দাওয়াত দিয়েছেন। এক কালেমার দাওয়াত দিয়েছেন। বান্দার হৃদয়ে ঈমানের আলো জেলেছেন।
আমাদের নবী হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। তিনি শেষ নবী। তার পরে আর কোনো নবী আসবেন না। তাঁর উম্মত শেষ উম্মত। এই উম্মতের পরে আর কোনো উম্মতও আসবে না। তাই বাল্লিগু আন্নি ওয়ালাও আয়াহ, আমার একটি কথা জানলেও পৌঁছে দাও আরেকজনের কাছে। এই পৌঁছানোর কাজটি যুগে যুগে সাহাবি-তাবেয়িসহ আলেমরা করে আসছেন। কেয়ামত পর্যন্ত এই দাওয়াতি কাজ চলবে। ঈমান জাগানোর কাজ চলবে। কালেমার দাওয়াত চলবে।
হজরত রাসুলে কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিদায় হজের ভাষণে সাহাবিদের দাওয়াতি কাজের আদেশ দিয়েছেন। এই আদেশ পেয়ে পৃথিবীর নানা প্রান্তে ছুটে গেছেন সাহাবিরা। ইতিহাস বলে, মক্কার অদূরে অবস্থিত আরাফার মাঠে নবীজি ঘোষণা করেছেন- তোমরা যারা এই মাঠে উপস্থিত আছো, তারা কালেমার কথা অনুপস্থিতদের কাছে পৌঁছে দাও। পৃথিবীময় ছড়িয়ে দাও-আল্লাহ ছাড়া কোনো মাবুদ নেই-হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শেষ নবী। আরাফার মাঠে থাকে সাহাবিরা আর বাড়িতে যাননি। মায়ের কাছ থেকে বিদায়ের জন্য কিংবা বিবির কাছ থেকে বিদায়ের জন্য বাড়িতে যাননি। সন্তানকে শেষবার দেখার জন্যও ঘরে ফিরেননি।
আরাফার ময়দান থেকেই দাওয়াতি কাজে ছড়িয়ে পড়েছেন-ছড়িয়ে পড়েছেন-ইরাক ইরান সিরিয়া কুফা আর পৃথিবীর নানা প্রান্তে। সোয়া লাখ সাহাবির কজন আর মক্কা-মদিনার মাটিতে শুয়ে আছেন? কজনের কবর মক্কা-মদিনায় পাওয়া যাবে? সাহাবারা দাওয়াতি কাজে সারা দুনিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছেন।সাহাবিদের এই অদম্য মেহনতের নাম-দাওয়াতি মেহনত। কালেমার মেহনত।
সাহাবিদের চিন্তা-ফিকির, দীনি জজবা আর আদর্শিক চেতনা বুকে ধারণ করে হজরত মাওলানা ইলিয়াস রহ. শুরু করেন প্রচলিত ধারার দাওয়াত ও তাবলিগ। শত বছরের চলমান এই মেহনতকে আল্লাহ তায়ালা কবুল করুন। আমাদেরও এই মেহনতের সূত্রে নাজাতের ফয়সালা করুন। তাবলিগ জামাতের সম্মিলিত মজমার নাম ইজতেমা। বাংলাদেশের মাটিতে এই ইজতেমা ৫৮ বছর যাবত অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এই ইজতেমা আমাদের জন্য গৌরবের। মর্যাদার ও সম্মানের।
হুআ