যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলেসের ভয়াবহ দাবানলে রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ১৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ১২ হাজারের বেশি ঘরবাড়ি ও স্থাপনা।
এদিকে, লস অ্যাঞ্জেলেসসহ দক্ষিণ ক্যালিফোর্নিয়ার যেসব এলাকা দাবানলে পুড়ছে, সেখানে আবারও তীব্র বাতাস বয়ে যেতে পারে। তাতে দাবানল আরও ছড়িয়ে পড়ার শঙ্কা রয়েছে বলে সতর্ক করেছে দেশটির জাতীয় আবহাওয়া সংস্থা।
সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়, অগ্নিনির্বাপণকর্মীরা দাবানল নিয়ন্ত্রণে সর্বাত্মক চেষ্টা করছে। তবে জাতীয় আবহাওয়া সংস্থা স্থানীয় সময় শনিবার বিকালে ‘এক্স’ পোস্টে সতর্ক করে দিয়ে জানিয়েছে- দক্ষিণ ক্যালিফোর্নিয়ার যেসব অংশে দাবানল চলছে, সেখানে অত্যন্ত বিপজ্জনক আবহাওয়া আগামী সপ্তাহ পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে।
সংস্থাটি জানায়, “ওই এলাকায় প্রতি ঘণ্টায় ৪০ মাইলেরও বেশি বেগে ঝড়ো হাওয়া বইতে পারে এবং আপেক্ষিক আর্দ্রতা শুষ্ক হতে পারে। এটি চলমান দাবানলের বিস্তারের পাশাপাশি নতুন দাবানলের সূত্রপাতও করতে পারে।”
লস অ্যাঞ্জেলেস ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তা এরিক স্কট স্থানীয় টেলিভিশন চ্যানেল কেটিএলএকে বলেছেন, “প্যালেসেইডস দাবানলটির পূর্বের অংশে আগুন উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। সেটি দিক পরিবর্তন করে আরও উত্তর-পূর্ব দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। এই দাবানল সবচেয়ে ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে।”
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, লস অ্যাঞ্জেলেসের ৬টি এলাকায় এখনও আগুন জ্বলছে। নতুন করে আরও ১ হাজার একর এলাকায় আগুন ছড়িয়ে পড়েছে। এ অবস্থায় এক লাখেরও বেশি বাসিন্দাকে সরিয়ে নিতে সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
লস অ্যাঞ্জেলেস কাউন্টি মেডিকেল এক্সামিনার বা করোনারে কার্যালয় দাবানলের কারণে নিহতদের একটি তালিকা প্রকাশ করেছে। তবে তালিকায় নিহতদের বিস্তারিত পরিচয় বা বিবরণ দেওয়া হয়নি। নথিতে বলা হয়েছে, দাবানলের কারণে প্যালিসেডস ফায়ার জোনে পাঁচজন এবং ইটন ফায়ার জোনে ১১ জন নিহত হয়েছেন।
লস অ্যাঞ্জেলেসের ইতিহাসে এ ধরনের ভয়াবহ দাবানল আগে আর ঘটেনি। আগ্রাসী আগুনে জ্বলে-পুড়ে ছারখার হাজার হাজার ঘরবাড়ি ও বিষয়-সম্পত্তি। আগুনে সব নিঃশেষ হয়ে যেতে দেখাই শুধু নয়, লেলিহান শিখা থেকে বাঁচতে যানজট, প্রকট ধোঁয়ায় শ্বাসরুদ্ধ হয়ে আসাসহ নানা কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হচ্ছে সেখানকার বাসিন্দাদের।
এবারের দাবানল পুরো লস অ্যাঞ্জেলেসকে যেন তছনছ করে ফেলেছে। বাংলাদেশ সময় শুক্রবার বিকাল পর্যন্ত ১ লাখ ৮০ হাজারের বেশি মানুষ তাদের বাড়িঘর ছেড়েছেন।
ভয়াবহ এই দাবানলের সূত্রপাত কীভাবে হয়েছে সে বিষয়েও নিশ্চিতভাবে কোনও তথ্য পাওয়া যায়নি। লস অ্যাঞ্জেলেসের পানি ও জ্বালানি বিভাগের প্রধানকে লেখা চিঠিতে ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর গ্যাভিন নিউসম বলেন, “এটি কীভাবে হলো তার উত্তর আমাদের জানা প্রয়োজন।”
সূত্র: সিএনএন
কেএল/