বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ।। ৪ আশ্বিন ১৪৩১ ।। ১৬ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :
মেয়াদবিহীন ইন্টারনেট প্যাকেজ চালুর আহ্বান টেলিযোগাযোগ উপদেষ্টার মেরামতের পর উত্তরা উত্তর থেকে মতিঝিল পর্যন্ত মেট্রোরেল চলাচল শুরু শহীদদের পরিবার প্রাথমিকভাবে ৫ লাখ ও আহতরা ১ লাখ টাকা করে পাবেন ড. ইউনূসের প্রথম একনেক সভায় অনুমোদন পেলো ৪ প্রকল্প স্বাধীন শিক্ষাব্যবস্থা প্রণয়নের দাবিতে শুক্রবার রাজধানীতে ‘শিক্ষা সমাবেশ’ কওমি সনদের যথাযথ মূল্যায়নের দাবিতে কাল জাতীয় সেমিনার সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়স ৩৫ করার প্রস্তাব মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে সিলেটে শাপলা শহিদ জাহিদের কবর জিয়ারতে নাগরিক আলেমসমাজ উসকানিদাতা কবি, সাংবাদিকরাও বিচারের আওতায় আসবেন: তথ্য উপদেষ্টা এখন থেকে প্রকল্পের সব তথ্য ওপেন থাকবে: প্রধান উপদেষ্টা

বিশ্ব মুসলিমদের প্রতি ফিলিস্তিন ওলামা পরিষদের আবেগঘন বার্তা


নিউজ ডেস্ক

নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

।।জহিরুল ইসলাম।।

অভিশপ্ত ইসরায়েল দীর্ঘ পঁচাত্তর বছর যাবৎ অবিরাম নির্যাতন চালিয়েছে নিরপরাধ ফিলিস্তিনিদের ওপর। সেই ইসরায়েলের প্রতিরোধে সহসাই জেগে ওঠেছে অসহায় ফিলিস্তিন। গত শনিবার ভোরে ফিলিস্তিনের মুক্তিকামী সংগঠন ইসরায়েলের ঘাটিতে চালায় তুফান আল আকসা অভিযান। ঈমানদার আর বেঈমানের মধ্যে শুরু হয় তুমুল যুদ্ধ। এখনও চলছে লড়াই। এহেন পরিস্থিতিতে ফিলিস্তিনের উলামা পরিষদ বিশ্বের উলামায়ে কেরামের প্রতি করণীয় স্থির করে আহ্বান জানিয়েছে। আমরা পাঠকদের জন্য তাঁদের আহ্বানটি হুবহু তুলে ধরছি।           

সমস্ত প্রশংসা বিশ্বজগতের প্রতিপালক আল্লাহর জন্য। শান্তি বর্ষিত হোক আমাদের নেতা হজরত মুহাম্মাদ (সাঃ), তাঁর পরিবার-পরিজন, সাথীবর্গের ওপর এবং কিয়ামত পর্যন্ত যারা একনিষ্ঠভাবে তাঁদের অনুসরণ করবে, তাঁদের ওপর। হামদ ও সালাতের পর....

হে আমাদের ইসলামী জাতির আলেম ও দায়ীগণ!

ইসরা এবং মিরাজের দেশে আপনাদের মুজাহিদীন ভাইয়েরা যা করছে, আপনারা তা দেখতে পাচ্ছেন। তারা ইহুদিবাদের মিথ্যা শক্তিকে অস্বীকার করেছে। দখলদার বাহিনীকে কঠোরভাবে শায়েস্তা করেছে‌। যুদ্ধের ময়দানে চরমভাবে পর্যুদস্তু করেছে। এই যুগে এমন দৃষ্টান্ত মেলা ভার। তাঁরা মহান আল্লাহর এই নির্দেশনা মেনেছে— “তাদের সাথে যুদ্ধ কর; আল্লাহ তোমাদের  হাতে তাদের শাস্তি দেবেন এবং তাদের অপদস্থ করবেন। তিনি তাদের বিরুদ্ধে তোমাদের সাহায্য করবেন এবং মুমিন দলের হৃদয়কে তিনি আরোগ্য দান করবেন।”(তওবা: ১৪)

জেনে রাখুন হে ঈমানদার আলেমগণ!

আপনার ভাই ও সন্তানতুল্য সত্যবাদী মুজাহিথগণ যা করেছেন, আল্লাহ তার ওসিলায় আপনাদের ভেতরকে প্রশান্ত করেছেন। এখন কর্তব্য হল, আপনাদের পরিবারতুল্য এই ফিলিস্তিনি বীরদের সমর্থন করা।

যাদের বিরুদ্ধে ইহুদিরা সমগ্র বিশ্বে  সবচেয়ে ভয়াবহ গণহত্যা চালাচ্ছে।মুনাফিক পশ্চিমা বিশ্ব আজ তার সমস্ত সামরিক, বৈষয়িক, রাজনৈতিক এবং মিডিয়ার শক্তি দিয়ে ইহুদিদের পক্ষে দাঁড়িয়েছে। মুসলমানদেরও মুজাহিদিনের পক্ষে দাঁড়ানো উচিত। মুসলমানদের কর্তব্য হচ্ছে — তাদের ভাইদের শক্তি জোগানো এবং তাদের সাথে মর্যাদা, বীরত্ব ও শ্রেষ্ঠত্বের লড়াইয়ে অংশ নেয়া।

হে আমাদের উলামায়ে কেরাম! আপনারাই মানুষকে শিক্ষা দেন আল্লাহর এই বাণী— “আর যারা কাফের, তারা একে অপরের ঘনিষ্ঠজন। যদি তোমরা মুসলমানদের সাহায্য না কর, তাহলে পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়বে ফেতনা  এবং বিরাট বিশৃঙ্খলা।”(আনফাল : ৭৩)

গাজার জনগণ আজ তাদের ধ্বংসস্তূপের নিচে সন্তানদের পড়ে থাকা ধ্বংসাবশেষের জন্য আপনাকে চিৎকার করে ডাকছে। প্রবাহমান রক্তের স্রোত আর ব্যথিত হৃদয় আপনার অন্তরকে নাড়া দিচ্ছে আপনারা তাদের হতাশ করবেন না! আপনাদের অপলক নেত্রে তাকিয়ে আছে সেসব মুজাহিদিনের চোখ, যারা আমাদের এবং আপনাদের শত্রুপক্ষকে ভোগ করিয়েছি তাদের কর্মের শাস্তি। মুজাহিদদের চোখ যারা আমাদের শত্রু এবং আপনার শত্রুকে তার বিষয়ের শাস্তির স্বাদ আস্বাদন করাচ্ছে এবং আপনাদের ও সকল মুসলিম দেশের নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছে।

হে আমাদের সম্ভ্রান্ত আলেমগণ!

এখন কিছু করার সময়। এখন আলেমগণের নেতৃত্বে মুজাহিদ বাহিনীকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার সময়। বিশ্বের কাছে সেইসব আলেমগণের দৃষ্টান্ত পেশ করতে হবে, যারা আল্লাহর নির্দেশ পালনে নিন্দুকের নিন্দাকে পরোয়া করেন না। যাদের ব্যাপারে মহান আল্লাহ বলেছেন: যারা আল্লাহর বাণী পৌঁছে দেয়, আল্লাহকে ভয় করে এবং আল্লাহ ছাড়া কাউকে ভয় করে না। হিসাব গ্রহণকারী হিসেবে আল্লাহই যথেষ্ট। (আহযাব:৩৯)

আজ গোটা বিশ্ব ইসরা ও মেরাজের ভূমিতে কী ঘটছে— দেখছে। তাই আপনারা আমাদের রাহবার হিসেবে নিম্নোক্ত কর্মসূচিগুলো পালন করুন। কর্মসূচি পালনে জনগণকে উদ্বুদ্ধ করুন এবং অগ্রভাগে থেকে নেতৃত্ব দিন‌।

১. জায়গায় জায়গায় এবং ফিলিস্তিন সীমান্তে  ইসরায়েলের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ সমাবেশ করুন। সমাবেশে ফিলিস্তিনের প্রতি জোরালো সমর্থন এবং ইসরায়েলের জুলুম নির্যাতনের বর্ণনা দিয়ে বক্তব্য প্রদান করুন।

২. সর্বশক্তিমান আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য সমস্ত মানুষকে অর্থ সহায়তা প্রদান এবং জিহাদ করতে উৎসাহিত করা। এখন জিহাদ বিল মালের পাশাপাশি জিহাদ বিন নফস অপরিহার্য। এতে পিছিয়ে থাকা বা বিলম্ব করা বৈধ নয়। আমরা আলেমগণের কাছে আশাবাদী যে, তাঁরা নিজেরা প্রচারণা চালাবেন এবং বিদ্যমান প্রচারণায় সহযোগিতা করবেন। যাতে মানুষ অর্থ সঞ্চয় করে এর মাধ্যমে সর্বশক্তিমান আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য জিহাদ করা যায়।

৩. মিম্বরে, মসজিদ ভিত্তিক দীনি মুযাকারায় এবং মিডিয়ায় সক্রীয় থেকে অব্যাহত বক্তব্য ও লেখালেখির মাধ্যমে ফিলিস্তিন ও ইসরায়েলের সঠিক ইতিহাস তুলে ধরা।

৪. পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের সময় কুনুতে নাযেলা পাঠ করা এবং গাজা ও ফিলিস্তিনের মুজাহিদিনের সফলতার জন্য দোয়া করা। মানুষকে সর্বাত্মকভাবে মুজাহিদিনের পাশে দাঁড়াতে উদ্বুদ্ধ করা।

আমরা আপনাদের এ মর্মে অবহিত করছি যে, ফিলিস্তিনের উলামা পরিষদের— আপনাদের ভাইয়েরা গাজা উপত্যকায় মুজাহিদিনের পাশে দাঁড়াতে আপনাদের যেকোনো সহযোগিতা করতে প্রস্তুত। 

উলামা পরিষদ, ফিলিস্তিন

বৃহস্পতিবার, ১২ ই অক্টোবর- ২০২৩

এনএ/


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ