ভারতের পশ্চিমবঙ্গের পার্শ্ববর্তী পাহাড়ি রাজ্য সিকিমে আকস্মিক বন্যায় এখন পর্যন্ত অর্ধশতাধিক মানুষের মৃত্যু হয়েছে। সিকিম সরকারের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫৬ জনে। এছাড়া বেড়াতে গিয়ে একই পরিবারের আটজন নিখোঁজ হয়েছে। সিকিম থেকে ২৬ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
এর মধ্যেই পশ্চিমবঙ্গ সরকার জলপাইগুড়ি, কোচবিহার, শিলিগুড়ি এলাকার তিস্তা নদীর পানি থেকে ৩০ জনের মরদেহ উদ্ধার করেছে। তবে বেসরকারি হিসেব অনুযায়ী, মৃত্যুর সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।
স্থানীয় প্রশাসন জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত ১৪২ জন নিখোঁজ রয়েছে। ২৫ হাজারের বেশি মানুষ আকস্মিক বন্যার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়া প্রায় ১৮ হাজার বাড়ি-ঘরও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। প্রায় তিন হাজারের বেশি মানুষকে উদ্ধার করা হয়েছে।
সিকিম সরকারের তিস্তা- হাইড্রোপাওয়ার স্টেশনের পুরোটাই পানির নিচে ডুবে গেছে। সিকিমের প্রায় সব যোগাযোগ ব্যবস্থাই বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।
সিকিম সরকার শুক্রবার (৬ অক্টোবর) উচ্চ পর্যায়ের একটি বৈঠক করেছে। সেখানে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে যে, আবারও নতুন করে চুংথাংয়ে রাস্তা তৈরির বিষয়টিকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে।
সিকিম সরকার দেশ-বিদেশের পর্যটকদের অনুরোধ করেছে এই মুহূর্তে তারা যেন কেউ সিকিমে না আসে। অন্যদিকে সিকিমে বেড়াতে গিয়ে বীরভূমের একই পরিবারের নারী-শিশুসহ ৮ জন নিখোঁজ রয়েছে।
জানা গেছে, গত ১ অক্টোবর ইলামবাজারের ভগবতী বাজার এলাকার বাসিন্দা অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক মুহাম্মদ মাহফুজ রহমানের ছেলে, ছেলের বউ, নাতি ও পরিবারের অন্য সদস্যরা সবাই সিকিম বেড়াতে গিয়েছিলেন।
সেখানে গিয়ে সিকিমের প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের মধ্যে পড়েন তারা। দক্ষিণ সিকিমের লাচুং এলাকায় একটি হোটেলে উঠেছিল ওই পরিবারটি। লাচুং থেকে লাচেন পৌঁছানোর পর গত ৩ অক্টোবর থেকে তাদের সঙ্গে আর যোগাযোগ করা যায়নি।
তাদের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, গত ৩ অক্টোবর রাত ৯টার পর থেকে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা যাচ্ছে না। মোবাইল ফোন সুইচ অফ বলছে।
পশ্চিমবঙ্গ সরকার জানিয়েছেন, সিকিমে কেউ যদি বেড়াতে গিয়ে কোনো সমস্যায় পড়েন তবে পরিবারের লোকজন যেন দ্রুত প্রশাসনকে এ বিষয়ে জানায়। খবর পাওয়া মাত্রই আমরা পর্যটকদের ফিরিয়ে আনার সব ধরনের সহায়তা দিতে তারা প্রস্তুত রয়েছে বলেও জানানো হয়।
টিএ/