শনিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ।। ১৩ আশ্বিন ১৪৩১ ।। ২৫ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬


ঝুলন্ত অবস্থায় গুলি খাওয়া সেই কিশোরকে বিশেষ সহায়তা দিল আস সুন্নাহ ফাউন্ডেশন

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

কোটা সংস্কার আন্দোলন চলাকালে রামপুরায় নির্মাণাধীন একটি ভবনের রডে ঝুলন্ত অবস্থায় গুলি খেয়েও অবিশ্বাস্যভাবে বেঁচে ফেরা সেই কিশোরকে উপযুক্ত সহায়তা দিয়েছে শায়খ আহমাদুল্লাহ পরিচালিত আস সুন্নাহ ফাউন্ডেশন।

রোববার (২২ সেপ্টেম্বর) সংগঠনটির চেয়ারম্যান শায়খ আহমাদুল্লাহ নিজের ভারিফায়েড ফেসবুক পেজের এক ভিডিও পোস্টে জানান, সেই কিশোর আমির হোসেনকে এক লাখ ২৭ হাজার দামের অটোরিকশা ও ওষুধ খরচ বাবদ নগদ ২০ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছে।

রিকশাটি চালাবেন আমির হোসেনের ফুফা। কারণ আমির হোসেন একবোনসহ তার ফুফার কাছেই থাকেন। আমির হোসেনের ফুফা একজন অটোরিক্সাচালক। প্রতিদিন ৫০০ টাকা ভাড়া দিয়ে তিনি অটোরিকশা চালান। আস সুন্নাহ ফাউন্ডেশন থেকে অটোরিকশা পাওয়ার কারণে এখন তাকে আর ৫০০ টাকা ভাড়া দিতে হবে না। ফলে মোটামুটি ভালোভাবেই আমির হোসেনদের নিয়ে সংসারের খরচ চালাতে পারবেন বলে আশা করা হচ্ছে।

আমির হোসেন এখনও পুরোপুরি সুস্থ নন। সেদিন আমিরের দু্ই পা ও রানে গুলি লেগেছিল। বাম পায়ে একটি গুলি পায়ের পাতায় লেগে অপর পাশ দিয়ে বের হয়ে যায়। বাম রানে একটি গুলি ঢুকে কোমরের পাশ দিয়ে বের হয়ে যায়। ডান পায়েও একইভাবে হাঁটু ও রানে গুলি লেগে এফোঁড়-ওফোঁড় হয়ে বের হয়ে যায়। ফলে হাঁটার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেছেন এই তরুণ। ডান পায়ে শক্তি পাচ্ছেন না। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা নিয়ে ফেরার পরে বর্তমানে বাসায় শুয়ে থাকেন। তিনি সুস্থ হলে তাকে আরও প্রয়োজনীয় সহায়তা দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন শায়খ আহমাদুল্লাহ।

তিনি আরও জানান, আস সুন্নাহ ফাউন্ডেশন এই পর্যন্ত আন্দোলনে আহত ১৪১২ জনকে ৪ কোটি ১৬ লাখ ৪০ হাজার টাকা সহায়তা দিয়েছে। এর মধ্যে পুলিশের গুলি খেয়ে বেঁচে ফেরা সেই আমির হোসেনও পেল বিশেষ সহায়তা।

আমির হোসেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বাঞ্জারামপুর থানার দুলারামপুর গ্রামের অটোরিকশা চালক বিল্লাল মিয়ার ছেলে। আন্দোলনের সময় তিনি ঢাকার বাড্ডা থানার আফতাব নগর এলাকার একটি কফিশপে কর্মরত ছিলেন। থাকতেন রামপুরা থানার মেরাদিয়া এলাকায় বড় ভাই নয়ন মিয়ার সঙ্গে। মা মারা যাওয়ার পরে বাবা বিল্লাল অন্যত্র বিয়ে করেন। এরপর আমির ও তার ছোট বোন ফুফু নাসিমা বেগমের কাছেই থাকতেন।

গত ১৯ জুলাইয়ের ঘটনা। কাজ থেকে ফেরার পথে রামপুরায় সংঘর্ষের মুখে পড়েন আমির। আত্মরক্ষার্থে রামপুরা থানার পাশের নির্মাণাধীন একটি ভবনে আশ্রয় নেন। এক পর্যায় ভবনে একটি রডের সঙ্গে ঝুলে থাকেন। সেই ভবনে গিয়ে ঝুলন্ত অবস্থায় আমিরকে লক্ষ্য করে গুলি করেন অন্তত দুই জন পুলিশ সদস্য। ঝুলন্ত অবস্থায় তার গুলি খাওয়ার সেই ভিডিও সেদিন ভাইরাল হয়েছিল। সবাই ধারণা করেছিল সে হয়ত আর বেঁচে নেই। কিন্তু অবিশ্বাস্য হলেও সত্য সেদিন পুলিশের ছয় রাউন্ড গুলি খেয়েও প্রাণে বেঁচে ফেরেন সেই তরুণ। ঘটনার প্রায় এক মাস পর গুলি খাওয়া আমিরকে খুঁজে পায় গণমাধ্যম। এরপর তার অবস্থান নিশ্চিত করে তার কাছে যায় আস সুন্নাহ ফাউন্ডেশন।

এনএ/


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ