সোমবার, ২১ এপ্রিল ২০২৫ ।। ৭ বৈশাখ ১৪৩২ ।। ২৩ শাওয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :
নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন নিয়ে ক্ষোভ, প্রতিবাদ জানালেন শায়খ আহমাদুল্লাহ বিবাহ একটি ইবাদত, এর পবিত্রতা রক্ষা করা জরুরি নারী অধিকার কমিশনের সুপারিশে আলেম প্রজন্ম-২৪-এর আপত্তি  জুলাই-আগস্টের ত্যাগের পরও কাঙ্ক্ষিত বাংলাদেশ পাইনি: মির্জা ফখরুল নারীবিষয়ক সুপারিশগুলো কোরআন-হাদিসের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন: জামায়াত আমির ‘১৬ বছরের জঞ্জাল দূর না করে নির্বাচন দিলে সমস্যা সমাধান হবে না’  প্রধান উপদেষ্টার কাছে স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন জমা সরকারি নিবন্ধন পেল সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘কলরব’ ‘সিরাহ মিউজিয়াম’ চালু করছেন মাওলানা মিজানুর রহমান আজহারী মহাসমাবেশ সফল করতে যেসব কর্মসূচি নিয়েছে হেফাজত

ভারতে সত্যিই কি মুসলিমদের সংখ্যা বেড়েছে ?

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার
ফাইল ছবি

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির অর্থনৈতিক উপদেষ্টা কাউন্সিল (ইএসি) কর্তৃক প্রকাশিত নতুন এক ওয়াকিং পেপারে বলা হয়েছে ১৯৫০ সালের পর ভারতে মুসলিম জনসংখ্যা ৪৩ শতাংশের বেশি বেড়েছে। 

এ প্রতিবেদেন প্রকাশের পরই তা নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা হচ্ছে। দেশটিতে চলতে জাতীয় নির্বাচনের প্রচার প্রচারণা। আর এসব প্রচারণায় মুসলিম সমর্থিত বিরোধীদলের প্রার্থীরা মোদির কঠোর সমালোচনা করছে। অন্যদিকে ভারতের ক্ষমতাসীন পার্টি মোদির দল বিজেপি এই প্রতিবেদনকে সুষ্ঠুভাবে ক্ষতিয়ে দেখার আহ্বান জানিয়েছে। 

এই প্রতিবেদন নিয়ে সমালোচনার পর প্রশ্ন উঠেছে ভারতে কী মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠতা বাড়ছে?

ওয়াকিং পেপারে মূলত ১৯৫০ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত বৈশ্বিক জনসংখ্যা চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। এছাড়াও এখানে বিশ্বের ধর্মীয় জনগোষ্ঠীর সংখ্যা পাওয়া যায়। অ্যাসোসিয়েশন অব রিলিজিয়াস ডাটা আর্কাইভ (এআডিএ) এটি প্রকাশ করেছে। যা অনলাইনে বিনামূল্যে ব্যবহার করা যায়। 

এই প্রতিবেদনের শেষে বলা হয়েছে, ভারতে মুসলিম জনগোষ্ঠী ৪৩.১৫ শতাংশ বেড়েছে। শতাংশ হিসেবে ৯.৮৪ শতাংশ থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৪.৯ শতাংশে। অন্যদিকে ১৯৫০ সালে ২০১৫ সালের মধ্যে হিন্দু জনসংখ্যা কমেছে ৭.৮২ শতাংশ। যা ৮৪.৬৮ শতাংশ থেকে কমে দাঁড়িয়েছে ৭৮.০৬ শতাংশে। 

মুসলিম জনসংখ্যা বৃদ্ধির পাশাপাশি ভারতে খ্রিষ্টান, শিখ এবং বৌদ্ধ ধর্মের জনসংখ্যাও বেড়েছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। প্রতিবেদনে ১৬৭ দেশর জনসংখ্যা চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশ, পাকিস্তান, আফগানিস্তান, শ্রীলঙ্কা এবং ভুটান। 

প্রতিবেদনে দেশটিতে সংখ্যালঘু বৃদ্ধি পাওয়ায় বলা হচ্ছে সংখ্যালঘুরা শুধু নিরাপদই নয় একই সঙ্গে তারা বর্ধনশীলও। যদিও আন্তর্জাতিক একাধিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে ভারতের সংখ্যালঘুরা ধর্মীয়ভাবে স্বাধীন নয়। 

অর্থনীতিবিদরা বলছেন, এ প্রতিবেদনে দুর্বলতা রয়েছে এবং এটি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে প্রকাশ করা হয়েছে। সুতরাং এটি নিয়ে সমালোচনা থাকবেই।

যুক্তরাষ্ট্রের বাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন অর্থনীতি এবং ভিজিটিং অধ্যাপক সন্তোষ মেহেরোত্রা বলেন, এটি ক্ষমতা ধরে রাখার জন্য করা হয়েছে, গবেষণার জন্য নয়। 

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রতিবেদনটি একটি জরিপের ওপর ভিত্তি করে প্রকাশ করা হয়েছে। কিন্তু এতে আদম শুমারির কোনো তথ্য উল্লেখ করা হয়নি। ভারতে সর্বশেষ আদমশুমারি অনুষ্ঠিত হয় ২০১১ সালে। পরবর্তী আদমশুমারি ২০১১ সালে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও করোনা মহামারির কারণে তা হয়নি। মোদিও পরবর্তীতে আদমশুমারির নতুন কোনো দিনক্ষণ ঘোষণা করেননি। 

অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংখ্যাবিদ এবং মেরি স্ক্লোডোস্কা-কিউরি ফেলো আশিশ গুপ্ত বলেন, ওই প্রতিবেদনে কোনো শুমারির তথ্য যুক্ত করা হয়নি। তাই প্রকাশিত তথ্যে কোনো ভুল থাকলেও নীতিগত দিক দিয়ে কিছু করার নেই। কারণ গত ১৪ বছর ধরে ভারতে আদম শুমারি নেই। 

তিনি বলেন, বাস্তবে আমরা যা দেখেছি তা হলো ভারতে হিন্দু জনগোষ্ঠী বাড়ছে। ১৯৫১ সাল থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত দেশটিতে ৩ কোটি ৫৪ লাখ মুসলিম জনগোষ্ঠী বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৭ কোটি ২ লাখে। অন্যদিকে এ সময়ে হিন্দু জনগোষ্ঠী ৩০ কোটি ৩ লাখ থেকে বেড়ে হয়েছে ৯৬ কোটি ৬ লাখ। সুতরাং প্রতিবেদনটি নিয়ে সংশয় রয়েছে। 

সূত্র: আল জাজিরা

এনএ/


সম্পর্কিত খবর



সর্বশেষ সংবাদ