ভারতের মহারাষ্ট্রে হিন্দু পুরোহিত রামগিরি মহারাজ কর্তৃক মহানবী সা.-এর শানে কটুক্তি এবং বিজেপি সাংসদ নিতেশ রানে কর্তৃক মুসলিম বিদ্বেষ ছড়ানোর প্রতিবাদে সরকারের কাছে অনতিবিলম্বে ভারতের রাষ্ট্রদূতকে তলব করে রাষ্ট্রীয়ভাবে নিন্দা জানানোর জোর দাবী জানিয়েছে উলামা পরিষদ গোপালগঞ্জ।
পাশাপাশি দোষীদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ ও অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করার জন্য ভারত সরকারকে কুটনৈতিক চাপ প্রদানের দাবীও জানিয়েছে উলামা পরিষদ।
আজ রোববার (২৯ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০টায় গোপালগঞ্জ প্রেসক্লাবের সামনে অনুষ্ঠিত এক প্রতিবাদ সমাবেশে এই দাবী জানান উলামা পরিষদের নেতৃবৃন্দ।
উলামা পরিষদ গোপালগঞ্জ-এর সাধারণ সম্পাদক মুফতি শুয়াইব ইবরাহীম-এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত প্রতিবাদ সমাবেশে সভাপত্বি করেন, উলামা পরিষদের রুপকার মাওলানা নুরুল হক সাহেব।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, ভারতের মহারাষ্ট্রে হিন্দু পুরোহিত রামগিরি মহারাজ মহানবী সা.-এর শানে জঘন্য কটুক্তি করেছে এবং বিজেপি সাংসদ নিতেশ রানে তার সমর্থন করে ভারতসহ এতদাঞ্চলে মুসলিম বিদ্বেষ ছড়িয়েছে। ফলে ভারতে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা উস্কে দিয়ে সংখ্যালঘু মুসলিমদের জান-মাল নিরাপত্তাহীন করে তুলেছে এবং বিশ্ব মুসলিমের হৃদয়ে রক্ত ক্ষরণ সৃষ্টি করেছে। গোপালগঞ্জ উলামা পরিষদ এহেন সাম্প্রদায়িক উস্কানীমূলক কর্মকাণ্ডে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছে এবং তীব্র নিন্দা জানাচ্ছে।
বক্তারা আরও বলেন, আমরা গভীর উদ্বেগের সাথে লক্ষ্য করছি যে, ইসলাম, ইসলামের নবী ও পবিত্র ধর্মগ্রন্থ আল-কুরআন ইত্যাদি বিষয় নিয়ে অবমাননা ও কটুক্তি করা ভারতের উগ্র সাম্পদায়িক গোষ্ঠির ঔদ্ধত্যপূর্ণ অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। একই সঙ্গে ভারতের সংখ্যালঘু মুসলমানদের উপর হিন্দুত্ববাদীদের অব্যহত নির্যাতন আমাদেরকে উদ্বিগ্ন করে তুলেছে। যা ৯০ ভাগ মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ বাংলাদেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করছে। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বাংলাদেশ এই ধারাবাহিকতার সমাপ্তি চায়।
রামগিরি মহারাজ ও সাংসদ নিতেশ রানের গ্রেপ্তার দাবী করে উলামা পরিষদের নেতৃবৃন্দ বলেন, ভারতে মুসলমানদের ধর্মীয় অনুভুতিতে আঘাত হানা, সংখ্যালঘু মুসলিম সম্প্রদায়কে উচ্ছেদ ও নির্যাতন করার ঘটনা লাগাতার ঘটতে থাকলেও ভারত সরকার তাদেরকে সরকারীভাবে পৃষ্ঠপোষকতা দিয়ে যাচ্ছে। যার কারণে ভারত বিশ্ব দরবারে একটি সাম্প্রদায়িক দেশ হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে। অথচ ভারত বাংলাদেশের সাম্প্রদায়িক বিষয়ে বারবার অবৈধ হস্তক্ষেপ করে থাকে এবং সংখ্যালঘু নির্যাতনের অপবাদ দিয়ে বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশের সুনাম ক্ষুন্ন করতে চায়।
সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, মুফতি হাফিজুর রহমান, মুফতি মুরতাজা হাসান, মাওলানা নাসির আহমাদ, মাওলানা আব্দুল্লাহ, মুফতি মাসউদুর রহমান, মাওলানা ফখরুল আলম, হাফেজ মুহা. মুসা, মুফতি জাহিদ আল মাহমুদ, মাওলানা শরিফ আনিসুর রহমান, মুফতি ইসমাঈল হুসাইন, মুফতি আহমাদুল্লাহ মিশকাত, মুফতি আব্দুল্লাহ আল মামুন, প্রযুক্তি বিশ্ব বিদ্যালয়ের ছাত্র মো. রায়হান ও হাবিব, কলেজ ছাত্র মো. নুরে আলম আলিফ প্রমুখ।
সমাবেশ শেষে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ-এর অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা বরাবরে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।
কেএল/