দিনাজপুর জেলার, পার্বতীপুর উপজেলার, বড়পুকুরিয়া কয়লা ভিত্তিক উৎপাদিত ৫২৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্রর উৎপাদন পুরোপুরি অচল হয়ে পরে।
যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় তৃতীয় ইউনিটটির উৎপাদন বন্ধ হয়। বিদ্যুৎ কেন্দ্রটির ৩টি ইউনিটের মধ্যে ২টি ইউনিট আগে থেকেই বন্ধ ছিল, তবে সচল ছিল তৃতীয় ইউনিটটি। এবার সেটিও বন্ধ হয়ে গেল। এ থেকে প্রতিদিন ২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হতো; যা জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ করা হতো।
তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রধান প্রকৌশলী মো. আবু বক্কর সিদ্দিক বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। জানা গেছে, খনি থেকে উৎপাদিত কয়লা দিয়ে ৫২৫ মেগাওয়াট বড়পুকুরিয়া কয়লা ভিত্তিক তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রর উৎপাদন কার্যক্রম চলতো চীনা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান হারবিন ইন্টারন্যাশনালের অধীনে।
চুক্তি মোতাবেক আগামী বছর তাদের মেয়াদ শেষ হবে। এ সময় উৎপাদন সচল রাখতে ছোট ধরনের মেরামত ও যন্ত্রাংশ সরবরাহের কথা থাকলেও তার কিছুই করেননি চিনা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। যার কারণেই বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি বার বার ত্রুটির মুখে পরলেও সঠিকভাবে মেরামত করা সম্ভব হয়নি। সে কারণেই বিদ্যুৎ উৎপাদন কাজ ব্যহত হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে।
প্রতিটি ইউনিট সচল রাখতে প্রয়োজন হয় দুটি করে ইলেকট্রো হাইড্রোলিক অয়েল পাম্প। যা ওই ইউনিটের জ্বালানি হিসেবে তেল সরবরাহের মাধ্যমে উৎপাদন কার্যক্রমকে সচল রাখে। কিন্তু ২০২২ থেকেই ৩টি ইউনিটের দুটির মধ্যে একটি পাম্প বিকল থাকায় যেকোনো সময় বন্ধের ঝুঁকি নিয়ে বিকল্প হিসেবে একটি ইলেকট্রো হাইড্রোলিক অয়েল পাম্পের মাধ্যমে চলে আসছিল এর উৎপাদন কার্যক্রম। ফলে মাঝে মধ্যেই যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে বন্ধ হতো তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের উৎপাদন। বিষয়টি একাধিকবার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে অবগত করলেও অজ্ঞাত কারণে তা আমলে নেননি। সর্বশেষ গত ৬ সেপ্টেম্বর মেরামতের মধ্য দিয়ে তৃতীয় ইউনিটটি চালু করা হলেও দুদিনের মাথায় আবারও সোমবার সন্ধ্যায় যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দিলে বন্ধ হয়ে যায় সকল কার্যক্রম।
বড়পুকুরিয়া কয়লা-ভিত্তিক তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রধান প্রকৌশলী মো. আবু বক্কর সিদ্দিক মুঠোফোনে জানান, তার আগে ১ মাস ৬দিন বন্ধ থাকার পর গত শুক্রবার (৬ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৫টা ১৭ মিনিট থেকে এ উৎপাদন শুরু হয়। যা দুদিন পরেই আবার বন্ধ হয়ে গেল। প্রতিটি ইউনিটের জন্য দুটি করে ইলেকট্রো হাইড্রোলিক অয়েল পাম্প থকে। যা ওই ইউনিটের জ্বালানি হিসেবে তেল সরবরাহের মাধ্যমে উৎপাদন কার্যক্রম সচল রাখে। কিন্তু ২০২২ সাল থেকেই তৃতীয় ইউনিটের দুটির মধ্যে একটি পাম্প নষ্ট হয়ে যায়। এরপর থেকে একটি পাম্প দিয়েই ঝুঁকি নিয়ে উৎপাদন কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছিল। কিন্তু ওই একটি পম্পও সোমবার নষ্ট হয়ে যাওয়ার পর দিনব্যাপী চেষ্টা করেও চালু করা সম্ভব হয়নি। ফলে পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায় উৎপাদন।
আবু বক্কর সিদ্দিক আরো বলেন, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে বিষয়টি জানানো হলে তারা দু’সপ্তাহর সময় চেয়েছেন। চীন থেকে মেশিন এলেই উৎপাদন কাজ শুরু করা যাবে বলেও আসা ব্যাক্ত করেছেন।
এমএন/