আওয়ার ইসলাম ডেস্ক: নামাজে ধনী-গরিব, সাদা-কালো, রাজা-প্রজার মাঝে কোনো ব্যবধান থাকে না। সবাই এক কাতারে একাকার হয়ে যায়। ইসলামের মূল মর্মবাণীও এটাই। মানুষে মানুষে কোনো ভেদাভেদ নেই, সবাই আল্লাহর বান্দা। তাই নামাজে কাতার সোজা রাখার গুরুত্ব অপরিসীম। মহানবী সা. বলেছেন, ‘নিশ্চয় আল্লাহতায়ালা এবং ফেরেশতারা তাদের প্রতি রহমত বর্ষণ করেন, যারা কাতার সোজা করে। আর যে ব্যক্তি কাতারে ফাঁক বন্ধ করে আল্লাহ তার একটি মর্যাদা বৃদ্ধি করে দেন।’ (ইবনে মাজাহ : ৯৯৫)।
আরও এসেছে, ওমর রা. থেকে বর্ণিত, মহানবী সা. বলেছেন, ‘তোমরা কাতার সোজা করো। কাঁধগুলোকে বরাবর রাখো। ফাঁক বন্ধ করো। তোমাদের ভাইদের হাতে তোমরা নরম হয়ে যাও এবং শয়তানের জন্য ফাঁক ছেড়ে দিও না। যে কাতার সংযুক্ত করে আল্লাহতায়ালাও তাকে সংযুক্ত করে দেন। আর যে কাতার বিচ্ছিন্ন করে আল্লাহতায়ালা তাকে বিচ্ছিন্ন করে দেন।’ (আবু দাউদ : ৬৬৬) আনাস রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘একদা নামাজের ইকামত দেওয়া হলে মহানবী সা. আমাদের অভিমুখী হয়ে বললেন, তোমরা তোমাদের কাতারগুলো সোজা করো এবং গায়ে গায়ে মিশে মিশে দাঁড়াও। কেননা আমি তোমাদের আমার পেছন দিক থেকেও দেখতে পাই।’ (বুখারি : ৭১৯)।
অন্য এক হাদিসে এসেছে, বশির রা. বলেন, ‘মহানবী সা. আমাদের কাতারগুলো এমনভাবে সোজা করতেন, যেন তিনি তীর সোজা করবেন। এভাবে তিনি করতে থাকলেন যতদিন না তিনি দেখলেন যে, আমরা তার থেকে বিষয়টি অনুধাবন করতে পেরেছি। অতঃপর একদিন তিনি নামাজের জন্য বের হলেন। যখন তিনি তাকবির দিতে যাবেন সেই মুহূর্তে এক ব্যক্তিকে দেখলেন সে তার বুক কাতারের বাইরে বের করে রেখেছে। তখন রাসুল সা. বললেন, আল্লাহর বান্দারা, হয় তোমরা অবশ্যই কাতার সোজা করবে, নতুবা তোমাদের মাঝে আল্লাহতায়ালা অবশ্যই বিরোধিতা সৃষ্টি করে দেবেন।’ (বুখারি : ৭১৭; মুসলিম : ১০০৭)
জামাতের নামাজ আদায়ের সময় তিনটি বিষয় গুরুত্বের সঙ্গে লক্ষ রাখা:
১. কাতার এমনভাবে সোজা করে দাঁড়ানো যে, কোনো মুসল্লি যেন তার পার্শ্ববর্তী মুসল্লির চেয়ে এগিয়ে না দাঁড়ায় এবং পিছিয়েও না দাঁড়ায়। কাতার বাঁকা করে আগে-পিছে দাঁড়ানো সুন্নত পরিপন্থি।
২. এমনভাবে দাঁড়ানো, যাতে দুই মুসল্লির মাঝখানে কোনো ফাঁক না থাকে। অর্থাৎ পরস্পরের মাঝে ফাঁক না রেখে দাঁড়ানো। ৩. একটি কাতার থেকে অন্য কাতারের মাঝখানে অস্বাভাবিক দূরত্ব না থাকা। আল্লাহতায়ালা আমাদের নামাজের কাতার সোজা রাখার তাওফিক দান করুন।
টিএ/