আওয়ার ইসলাম ডেস্ক: রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, যে ব্যক্তি জুমার দিন গোসল করল, আগে আগে মসজিদে গমন করল, পায়ে হেঁটে মসজিদে গেল, ইমামের কাছাকাছি বসল, মনোযোগ দিয়ে খুতবা শুনল, কোনো কথা বলল না, আল্লাহ তাআলা তাকে প্রতি কদমে এক বছরের নফল ইবাদতের সওয়াব দান করবেন। -মুসনাদে আহমাদ : ৫৮১
জেনে নিন হাদিসে আলোচনা করা জুমার দিনের ছয়টি সুন্নত।
এক. ভালোভাবে গোসল করা। প্রতিদিনের গোসল আর জুমার দিনের গোসল এক নয়। জুমার দিন গোসল করার সময় সুন্নত পালনের নিয়ত করতে হবে এবং সওয়াবের আশা রাখতে হবে। হাদীসে ভালোভাবে গোসল করার কথা বলা হয়েছে। শরীর নাপাক হয়ে গেলে যেমনিভাবে খুব ভালোভাবে গোসল করা হয় যেন শরীরের প্রতিটি অংশে পানি পৌঁছে যায়, ঠিক তেমনিভাবে জুমার দিনও ভালোভাবে গোসল করে নেবে।
দুই. আগে আগে সকাল সকাল মসজিদে গমন করা। অপর এক হাদীসে জুমার দিন আগে আগে মসজিদে যাওয়ার ফযিলত বর্ণিত হয়েছে।
বলা হয়েছে, যে ব্যক্তি গোসল ফরজ হলে যেভাবে গোসল করে জুমার দিন ঠিক সেভাবে ভালো করে গোসল করে অতঃপর সর্বপ্রথম মসজিদে গমন করে, সে একটি উট সদকা করার সমপরিমাণ সওয়াব লাভ করবে। এরপর দ্বিতীয়তে যে মসজিদে গমন করবে সে একটি গরু আল্লাহর রাস্তায় সদকা করার সমপরিমাণ সওয়াব লাভ করবে। তৃতীয়তে যে গমন করবে সে একটি বকরি আল্লাহর রাস্তায় সদকা করার সওয়াব লাভ করবে। চতুর্থতে যে গমন করবে সে একটি মুরগি সদকা করার সওয়াব লাভ করবে। এরপর পঞ্চম নম্বরে যে প্রবেশ করবে সে একটি ডিম সদকা করার সওয়াব লাভ করবে। -সহীহ বুখারী : ৮৮১
মসজিদে যে যত বেশি আগে আসবে তত বেশি সওয়াব ও ফযীলতের অধিকারী হবে।
তিন. হেঁটে মসজিদে যাবে, কোনো বাহনে আরোহণ করবে না। জুমার নামাযের জন্য কোনো বাহনে আরোহণ না করে হেঁটে হেঁটে মসজিদে যাওয়া সুন্নত। বিশেষ কোনো উযর না থাকলে এ সুন্নত ত্যাগ করবে না।
চার. ইমামের কাছাকাছি বসবে। আগে আগে মসজিদে গেলে ইমামের কাছাকাছি বসার সুযোগ পাওয়া যায়। তো ইমামের কাছাকাছি বসাও সুন্নত।
পাঁচ : মনোযোগসহ খুতবা শুনবে। মনে রাখতে হবে, জুমার খুতবা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমরা শুক্রবারে জোহরের সময় জুমার নামায পড়ি। জোহর পড়ি চার রাকাত কিন্তু জুমা পড়ি দুই রাকাত। জুমার খুতবা দিতে হয় বলে দুই রাকাত নামায কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। তো জুমার খুতবা দুই রাকাত নামাযের মর্যাদা রাখে। তাই জুমার খুতবা প্রদান করাও ওয়াজিব, শ্রবণ করাও ওয়াজিব। আমরা জুমার খুতবা খুব মনোযোগসহ শ্রবণ করব।
ছয় : অনর্থক কোনো কথাবার্তা বা কার্যকলাপে লিপ্ত হবে না। মসজিদে এসে নীরবে ইবাদত-বন্দেগীতে মশগুল থাকব। কোনো অনর্থক কথা বলব না। অনর্থক কোনো কাজও করব না। মসজিদে দীনি কথা বলা যাবে। কোরআন তেলাওয়াত করব। যিকির করব। অপ্রয়োজনীয় কোনো কথা বলব না।
যে ব্যক্তি জুমার দিন এ ছয়টি সুন্নত পালন করবে তার মসজিদে যেতে যতগুলো কদম ফেলতে হয় প্রতিটি কদমে আল্লাহ তাআলা তাকে এক বছর নফল ইবাদতের সওয়াব দান করবেন। এক বছর একাধারে দিনের বেলা রোযা রাখলে এবং রাতে জাগ্রত থেকে ইবাদত-বন্দেগী করলে যে পরিমাণ সওয়াব হবে আল্লাহ পাক তার প্রতি কদমে সে পরিমাণ সওয়াব দান করবেন। সুবহানাল্লাহ!
আল্লাহপাক রাব্বুল আলামীন আমাদের সবাইকে এ সুন্নতগুলো পালন করার তাওফিক দান করুন। আমিন
-এসআর