আওয়ার ইসলাম ডেস্ক: গাড়ি ব্যবসার নামে প্রতারণার অভিযোগে গ্রেপ্তারকৃত ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান জাকির হোসেনের দেওয়া তথ্যে আরও ২০টি মাইক্রোবাস উদ্ধার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) তেজগাঁও বিভাগ।
গ্রেপ্তারকৃত জাকির কুমিল্লা জেলার মেঘনা থানার ২নং মানিকাচর ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান, যিনি প্রতারণার মাধ্যমে ৬০-৭০টি গাড়ি দেখিয়ে ৬০০-৭০০ জনের সঙ্গে প্রতারণা করেছেন। এছাড়া একটি গাড়ির রেজিস্ট্রেশন নম্বর দেখিয়ে ৩৭ জনের কাছে স্ট্যাম্প করে বিক্রি করেছেন।
গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানিয়েছেন ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ। তিনি বলেন, গত ৭ সেপ্টেম্বর রাজধানীর মুগদা থানায় একটি প্রতারণার মামলা হয়।
মামলাটি গোয়েন্দা তেজগাঁও বিভাগ ছায়া তদন্ত শুরু করে। তদন্তকালে জানা যায়, গ্রেপ্তারকৃত জাকির চেয়ারম্যান পোর্ট থেকে স্বল্প দামে গাড়ি ক্রয় করে দেওয়ার কথা বলে বিভিন্ন লোকজনের কাছ থেকে টাকা নেন। পরে ক্রয়কৃত গাড়ি রেন্ট-এ-কারের মাধ্যমে মাসিক ভাড়ায় পরিচালনা করার জন্য চুক্তি করেন।
তিনি একই গাড়ির বিপরীতে একাধিক ব্যক্তির সঙ্গে ভুয়া কাগজপত্রে চুক্তি সম্পাদন করেন। তাছাড়া একই রেজিস্ট্রেশন নম্বর সংবলিত গাড়ি একাধিক ব্যক্তির কাছে জাল দলিলের মাধ্যমে বিক্রি করে দেন। অধিকাংশ ক্ষেত্রে শুধু ইঞ্জিন নম্বর ও চেসিস নম্বর দিয়ে গাড়ি বিক্রির চুক্তিপত্র স্বাক্ষর করেন। গাড়িটি নিজেই ভাড়া নিয়ে মাসিক ভাড়া পরিশোধের ভিত্তিতে পরিচালনা করার কথা বলে কিছুদিন ভাড়া পরিশোধ করেন। পরে ভাড়া দেওয়া বন্ধ করে দেন ও গাড়ি ক্রয়ের অর্থ আত্মসাৎ করেন।
এছাড়াও পূর্বের বিক্রয়কৃত গাড়ি স্বল্প মূল্যে মালিকানা হস্তান্তরের লোভ দেখিয়েও বিভিন্ন ব্যক্তির কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নেন। তিনি আরও বলেন, সেপ্টেম্বর মাসের ২১ তারিখ কুমিল্লা জেলার মেঘনা থানা এলাকায় বিশেষ অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করে গোয়েন্দা তেজগাঁও বিভাগের তেজগাঁও জোনাল টিম। এ সময় তার হেফাজত থেকে ২টি মাইক্রোবাস উদ্ধার করা হয়েছে। পরে পুলিশ হেফাজতে জিজ্ঞাসাবাদে তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে দেশের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে আরও ২০টি মাইক্রোবাস উদ্ধার করা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে প্রাপ্ত তথ্য সম্পর্কে ডিবি প্রধান বলেন, জাকির প্রতারণার মাধ্যমে ৬০-৭০টি গাড়ি দেখিয়ে ৬০০ থেকে ৭০০ জনের সঙ্গে প্রতারণা করেছেন। যাদের মধ্যে ব্যবসায়ী, সরকারি কর্মকর্তা ও সরকারের এমপি রয়েছেন। একটি গাড়ির রেজিস্ট্রেশন নম্বর দেখিয়ে ৩৭ জনের কাছে স্ট্যাম্প করে বিক্রি করেছেন।
তিনি আরও বলেন, গ্রেপ্তারকৃত জাকির ৫-৬ জন সহযোগীর সহায়তায় প্রতারণা করতেন। তিনি আনুমানিক হাজার কোটি টাকা বিভিন্ন প্রতারণার মাধ্যমে আত্মসাৎ করেছেন। মুন্সীগঞ্জ, বিক্রমপুরে একটি গ্রামে লোকদের কাছে ১২২টি গাড়ি বিক্রির কথা বলে প্রতারণা করেছেন। জাকির হোসেনের তার প্রতিষ্ঠান আর. কে. মটরস এবং তার আত্মীয়স্বজনের নামে ২৭টি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট রয়েছে। তার নামে বিভিন্ন থানায় ১২টি প্রতারণার মামলাও রয়েছে।
-এটি