আওয়ার ইসলাম ডেস্ক: স্বামীকে খুন করার অপরাধে তিন নারীকে এক দিনে ফাঁসি দেওয়া হল ইরানে। ইরানের তিনটি পৃথক কারাগারে শুক্রবার তাদের ফাঁসি দেওয়া হয়েছে।
মানবাধিকার সংগঠনগুলোর দাবি, চলতি বছরে কমপক্ষে ১০ জন নারীকে একই অপরাধের জন্য ফাঁসি দেওয়া হয়েছে। তাদের আরও দাবি, ২০১০ সাল থেকে ২০২১ সালের অক্টোবর মাস পর্যন্ত ইরানে মোট ১৬৪ জন নারীর ফাঁসি হয়েছিল।
মানবাধিকার কর্মীদের মতে, ২০২১ সালে ইব্রাহিম রাইসির ইরানে প্রেসিডেন্ট হওয়ার পরে এই সংখ্যা বেড়েই চলেছে। ২০২১ সাল থেকে এখনও অবধি ৩০৬ জন নারীকে ফাঁসি দেওয়া হয়েছে।
শুক্রবার যে তিন নারীকে ফাঁসি দেওয়া হয়েছে, তাদের পরিচয় জানা গিয়েছে। সেনোবার জালালি নামের এক নারীকে তেহরান এলাকার বাইরে এক কারাগারে ফাঁসি দেওয়া হয়েছে। আফগানিস্তানের নাগরিক ছিলেন তিনি।
ইরানের পশ্চিমে সানন্দাজ এলাকার একটি কারাগারে সোহেইলা আবেদিকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। ১৫ বছর বয়সে সোহেইলা বিয়ে করেছিলেন। বিয়ের ১০ বছর পর স্বামীকে হত্যা করেছিলেন সোহেইলা। ২০১৫ সালে দোষী সাব্যস্ত হয়েছিলেন তিনি।
এ ছাড়াও উত্তর-পশ্চিমে উর্মিয়া অঞ্চলে ফাঁসি দেওয়া হয় ফারানাক বেহেস্তিকে। পাঁচ বছর আগে স্বামীকে খুন করার অপরাধে তিনি দোষী সাব্যস্ত হয়েছিলেন।
ইরানের আইন অনুযায়ী, দেশের নারীরা বিবাহবিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নিতে পারেন না। এমনকি, শারীরিক বা মানসিক নির্যাতনের শিকার হলেও তারা বিচ্ছেদ চাইতে পারেন না। এই প্রসঙ্গে ইরান সরকারের বিরুদ্ধে সরব হয়েছিলেন অনেকেই। সরকারকে সমালোচনা করার অপরাধে চলতি সপ্তাহে কয়েক জনকে গ্রেপ্তারও করা হয়েছে। তাদের মধ্যে রয়েছেন ‘দেয়ার ইজ নো এভিল’ চলচ্চিত্রের পরিচালক মোহাম্মদ রসুলফও। ইরানে মৃত্যুদণ্ডের প্রতিক্রিয়ার উপর নির্মিত তার চলচ্চিত্রটি ২০২০ সালে বার্লিন চলচ্চিত্র উৎসবে দেখানোর পর তা ‘গোল্ডেন বিয়ার’ পুরস্কার জেতে।
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি এক পুলিশ কর্মকর্তাতে খুনের দায়ে দোষী সাব্যস্ত এক ব্যক্তিকে অপরাধস্থলেই জনসমক্ষে ফাঁসি দিয়েছে ইরান প্রশাসন। মানবাধিকার সংগঠনের দাবি, দুই বছরেরও বেশি সময় পরে এই ‘মধ্যযুগীয় প্রথা’ ফিরে এল ইরানে। অভিযোগ, দেশের অর্থনৈতিক সঙ্কট নিয়ে সরব হওয়ায় বিক্ষোভকারীদের দমাতে এই প্রথা ফিরিয়ে এনেছে সরকার।
-এটি