আওয়ার ইসলাম ডেস্ক: রেলখাতের অব্যবস্থাপনা নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষার্থী মো. মহিউদ্দিন হাওলাদার ওরফে রনির করা অভিযোগের প্রমাণ পাওয়ায় সহজ ডটকমকে দুই লাখ টাকা জরিমানা করেছে ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তর। এ জরিমানার ২৫ শতাংশ অর্থ পাবেন ভুক্তভোগী রনি।
বুধবার (২০ জুলাই) জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সভাকক্ষে এ শুনানি অনুষ্ঠিত হয়।
সহজ ডটকম এবং রেল বিভাগের বিরুদ্ধে অনিয়ম বিষয়ে ভোক্তা অধিদপ্তরে অভিযোগ করেছিলেন মহিউদ্দিন হাওলাদার। আজ শুনানির দিনে সকাল ১০টার দিকে সহজ ডটকমের প্রতিনিধি এবং অভিযোগকারী মহিউদ্দিন রনি অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয়ে উপস্থিত ছিলেন। এসময় রনির অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় সহজ ডটকমকে ভোক্তা আইনের ৫৭ ধারায় এ জরিমানা করা হয়।
রেলের অব্যবস্থাপনার নিয়ে টানা ১১ দিন ধরে কমলাপুর রেলস্টেশনে অবস্থান করছেন ঢাবির থিয়েটার অ্যান্ড পারফরম্যান্স স্টাডিজ বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী মহিউদ্দিন রনি।
গত ৭ জুলাই থেকে রেলওয়ের অব্যবস্থাপনা ও যাত্রী হয়রানির প্রতিবাদে ছয়দফা দাবিতে হাতে শিকল বাঁধা অবস্থায় কমলাপুর রেলস্টেশনে অবস্থান করছেন এ শিক্ষার্থী। শুরুতে একা আন্দোলনে নামলেও পরে তার বন্ধু, সহপাঠীসহ আরও বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থীও তাতে অংশ নেন।
গত কদিন ধরেই তারা কমলাপুর স্টেশনে অবস্থান নিয়ে গান, কবিতা, পথনাটক ও দুর্নীতিবিরোধী বিভিন্ন প্ল্যাকার্ডের মাধ্যমে প্রতিবাদ জানিয়ে আসছেন।
রেলের দুর্নীতি ও অনিয়ম নিয়ে এরইমধ্যে ভোক্তা অধিদপ্তরে দুটি অভিযোগও দায়ের করেন রনি।
তার অভিযোগ, গত ১৩ জুন বাংলাদেশ রেলওয়ের ওয়েবসাইট থেকে ঢাকা-রাজশাহী রুটের ট্রেনের আসন নিবন্ধনের চেষ্টা করেন তিনি। কিন্তু মুঠোফোনে আর্থিক সেবাদাতা সংস্থা বিকাশ থেকে ভেরিফিকেশন কোড দিয়ে তার পিন কোড ছাড়াই অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা কেটে নেওয়া হয়। কিন্তু ট্রেনের কোনো আসন পাননি, এমনকি কেন টাকা নেওয়া হলো, তার কোনো রশিদও দেওয়া হয়নি।
এদিকে বুধবার (২০ জুলাই) বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদারের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্টের দ্বৈত বেঞ্চ রেলস্টেশনে ঢাবি শিক্ষার্থী রনির অবস্থান নেওয়ার কারণ জানাতে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীকে নির্দেশ দিয়েছেন।
চলতি বছর স্বাধীনতা দিবস বা ২৬ মার্চ থেকে দেশে অনলাইনে ট্রেনের টিকিট বিক্রি শুরু করে টিকেটিং প্ল্যাটফর্ম সহজ ডটকম। সিএনএস বিডির সঙ্গে চুক্তি শেষ হওয়ার পর নতুন করে অনলাইনে টিকিট বিক্রির কাজ পায় সহজ-সিনেসিস-ভিনসেন জেভি। ২৬ মার্চ থেকে এই প্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যবস্থাপনায় ট্রেনের অনলাইন টিকিট বিক্রি শুরু হয়। যাত্রীদের ভোগান্তি লাঘবে সহজ ডটকমের মাধ্যমে টিকিট বিক্রি শুরু হলেও তাতে উপযুক্ত সেবা না পাওয়ার অভিযোগ ছিল শুরু থেকেই।
অনলাইনে টিকিট বিক্রির শুরুর দিনই অচল হয়ে পড়েছিল সহজ ডটকমের ওয়েবসাইট। পরে কখনো ফ্রি, কখনো ২০ টাকায় ঢাকা-জামালপুর এক্সপ্রেসের শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কোচের টিকিট প্রাপ্তির মতো ঘটনাও ঘটছে।
বিভিন্ন সময় যাত্রীরা অভিযোগ করেন, নতুন ই-টিকেটিং ওয়েবসাইটে ওটিপি কোড সময়মতো আসে না। প্রোফাইল এডিট করার সুযোগ নেই। নেই ড্যাশবোর্ড দেখার কোনো ব্যবস্থা। ট্রেনের সময়সূচি দেখার সুবিধা নেই। ভেরিফাইয়ের সিস্টেম নেই কাউন্টার টিকিট। সিট একবার সিলেক্টের পর আনসিলেক্ট করা যায় না। পেমেন্ট সিস্টেমে রকেট, নগদ, ট্যাপ অপশন নেই। পেমেন্ট সফল হওয়ার পরও অনেক ক্ষেত্রে আসছে না টিকিট।
-এএ