মুযযাম্মিল হক উমায়ের: হজরত আহমাদ বিন আবিল হাওয়ারী রাহ. বলেন, আল্লাহ তায়ালার সৃষ্টির মধ্যে এমনও সৃষ্টি আছে, যাদেরকে জান্নাত ও জান্নাতের নিয়ামতও আল্লাহ তায়ালা থেকে বিমুখ করতে পারেনি। তাহলে দুনিয়া তাঁদেরকে কীভাবে আল্লাহ তায়ালা থেকে বিমুখ করতে পারবে? সূত্র: হিলয়াতুল আওলিয়া: খ. ১০, পৃ. ১৮
তিনি বলেন, আল্লাহ তায়ালা হজরত দাউদ আলাইহিস সালামের কাছে এই মর্মে ওহী পাঠান যে, আমি প্রবৃত্তির চাহিদাকে আমার সৃষ্টিজীবের দুর্বলশ্রেণীদের জন্য সৃষ্টি করেছি। সুতরাং প্রবৃত্তির চাহিদার সাথে সম্পর্ক করা থেকে তুমি বিরত থাকো। কারণ, প্রবৃত্তির চাহিদায় নিজেকে জড়িয়ে নেওয়ার সবচেয়ে নিম্মমানের শাস্তি হলো, আমি আমার মহব্বত তোমার অন্তর থেকে উঠিয়ে নিবো। সূত্র: হিলয়াতুল আওলিয়া: খ. ১০, পৃ. ২০
তিনি বলেন, আল্লাহ তায়ালার কাছে আশা-ভরসার দিক যখন আল্লাহ তায়ালার ভয় থেকে বেশি হয়ে যায়, তখন অন্তর নষ্ট হয়ে যায়। সূত্র: হিলয়াতুল আওলিয়া: খ. ১০, পৃ. ২১
তিনি বলেন, আল্লাহ তায়ালা যখন কোনো জাতির উপকার করতে ইচ্ছে করেন, তখন তিনি তাঁদেরকে দিনেরাতে উপকার করেন। কারণ, তাঁরাও আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টি হাসিল করার কাজটি দিনেরাতে করেছিলো।
তিনি বলেন, মানুষের অন্তরের অবস্থা যখনি উপরের স্তরে উপনীত হতে শুরু করে তখনি তার উপর দ্রুত বিভিন্ন প্রকারের বিপদাপদ আসতে শুরু করে।
তিনি বলেন, নবীগণ মৃত্যুকে একমাত্র আল্লাহ তায়ালার জিকির বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণে অপছন্দ করতেন। সূত্র: তবাকাতুস সুফিয়্যা: পৃ. ৯৩
তোমার অন্তর যখন অধিক গুনাহ আর দুনিয়ার ভালোবাসার কারণে অসুস্থ হয়ে যাবে, তখন তুমি দুনিয়াবিমুখীতা ও গুনাহ ছেড়ে দিয়ে এর চিকিৎসা করো।
যদি তোমার অন্তর শক্ত হয়ে যাচ্ছে অনুভব করো, তখন তুমি জিকিরকারীদের মজলিসে বসো। দুনিয়াবিমুখীদের সংশ্রবে যাও। তোমার খাবার কমিয়ে দাও। তোমার চাহিদাকে মিটিয়ে দাও। এবং নিজের নফসে কষ্টকর কাজে মশগুল করে দাও।
তিনি বলেন, দুনিয়া হলো ডাস্টবিন ও কুকুরের একত্রস্থল। কুকুরদের মধ্যে সবচেয়ে নিকৃষ্ট কুকুর হলো, যে কুকুর ময়লার ভিতর নিজেকে ডুবিয়ে নেয়। কারণ, কুকুরের সাধারণত বৈশিষ্ট্য হলো, তার প্রয়োজনীয় জিনিস নিয়ে সেখান থেকে সরে আসে। ওখানে জমে থাকে না। আর দুনিয়ার প্রতি আসক্ত ব্যক্তি কখনো দুনিয়ার ময়লা-আবর্জনা থেকে নিজেকে সরিয়ে নিয়ে আসতে পারে না।
তিনি বলেন, যে ব্যক্তি আল্লাহ তায়ালার ইবাদত করে অন্যের কাছ থেকে প্রসিদ্ধি ও সুনাম চায়, তাহলে সে আল্লাহ তায়ালার সাথে শিরিক করলো। কারণ, যে মহব্বতের সাথে ইবাদত করে থাকে, সে তার প্রিয় সত্ত্বাকে দেখানো ছাড়া অন্য কোনো কিছুর নিয়ত করতে পারে না।
তিনি বলেন, পবিত্র কুরআনুল কারীম তিলাওয়াতের সময় একটি আয়াত পড়লেই আমার আকল অস্থির হয়ে যায়। এই সময় হাফেজে কুরআনদের কথা মনে হয়ে আমার বেশি আশ্চর্য লাগে। তাঁরা পূর্ণ কুরআনুল কারীম মুখস্থ ও পড়ে কীভাবে রাতে ঘুমাতে পাড়ে? কীভাবে দিনের বেলায় দুনিয়াবী অন্য কোনো কাজে মশগুল হতে পারে?
যদি তাঁরা কী তিলাওয়াত করতেছে যথাযথ বুঝতো, যথাযথ হক আদায় করতো, তিলাওয়াতের যথাযথ স্বাদ আস্বাদান করতো এবং নির্জনে আল্লাহ তায়ালার সাথে একনিষ্ঠ কথা বলতে পারতো, তাহলে তাঁদের চোখ থেকে ঘুম চলে যেতো। আর আল্লাহ তায়ালা তাঁদেরকে যে নিয়ামত দান করেছেন- এই আনন্দে আত্মহারা হয়ে সর্বদায় আল্লাহ তায়ালার শোকর আদায় করতো। সূত্র: তবাকাতুস সুফিয়্যা: পৃ. ৯৪
তিনি বলেন, আমার পিতা আমাকে বলেছেন, হে প্রিয় ছেলে! বেশি কেঁদো না। কারণ, অধিক কান্না অন্তরকে শক্ত করে দেয়। সূত্র: তারিখে দামিশক: খ. ৩৩, পৃ. ২৫৭
-এটি