আওয়ার ইসলাম ডেস্ক: প্রত্যেক গুরুত্বপূর্ণ কাজের শুরুতে ‘বিসমিল্লাহ’ বা ‘আল্লাহর জিকির ও স্মরণ’ জরুরি। কাজের শুরুতে বিসমিল্লাহ বলা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সুন্নতও বটে। এছাড়া কাজের শুরুতে 'বিসমিল্লাহ' বলা ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতির অংশ। ‘বিসমিল্লাহ’র মাধ্যমে আল্লাহ তায়ালার প্রতি আনুগত্য প্রকাশ পায়। এর মাধ্যমে সুন্দরভাবে কাজ শেষ হয় এবং আমলনামায় সওয়াব লেখা হয়।
আল্লাহর রহমত ও বরকত
যেকোনো ভালো কাজ ‘বিসমিল্লাহ’ বলে শুরু করা মানে আল্লাহর নাম নিয়ে কোনো কিছু শুরু করা। এতে আল্লাহ ওই কাজে রহমত ও বরকত দান করেন। প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রতিটি কাজ শুরু করার আগে ‘বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম’ বলতেন বলেও হাদিসের গ্রন্থে উল্লেখ রয়েছে।
হাদিসে বলা হয়েছে, ‘গুরুত্বপূর্ণ কাজের শুরুতে বিসমিল্লাহ পড়া না হলে তা অসম্পূর্ণ থেকে যায়।’ (মুসনাদে আহমাদ : ১৪/৩২৯; রওজাতুল মুহাদ্দিসিন: ৬৪৫)
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যে খাবারে বিসমিল্লাহ পড়া হয় না, সে খাবারে শয়তানের অংশ থাকে। সেই খাবার মানুষের সঙ্গে শয়তানও ভক্ষণ করে।’ (মুসলিম : ৫৩৭৬)
প্রতি হরফের বিনিময়ে নেকি
এছাড়া ‘বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম’ পবিত্র কোরআনের একটি আয়াতও বটে। সেই হিসেবে বিসমিল্লাহ পড়লে প্রতি হরফের বিনিময়ে ১০টি করে নেকি হবে। বিসমিল্লাহর মধ্যে ১৯টি হরফ আছে।
হজরত জাবের ইবনে আব্দুল্লাহ (রা.) বলেন, ‘যখন বিসমিল্লাহ নাজিল হয় তখন মেঘমালা পূর্ব দিকে দৌড়াতে লাগল, সাগরগুলো উত্তাল অবস্থায় ছিল, সব প্রাণী নিস্তব্ধভাবে তা শুনছিল। শয়তানকে দূরে বিতাড়িত করা হয়েছিল। তখন আল্লাহ তায়ালা নিজ ইজ্জত ও জালালিয়াতের কসম খেয়ে বলেছিলেন, যে জিনিসের ওপর বিসমিল্লাহ পড়া হবে, সেই জিনিসে অবশ্যই বরকত দান করব।’ (তাফসিরে তাবারি : ১/৫০)
শয়তান দুর্বল হয়ে পড়ে
আবু মুলাইহ একজন সাহাবি থেকে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, আমি একবার রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সঙ্গে তার আরোহীর পেছনে বসা ছিলাম।
এমন সময় আরোহী পা ফসকে পড়ে গেল। তখন আমি বললাম, শয়তান ধ্বংস হোক। নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ‘শয়তান ধ্বংস হোক এমন বলো না, কেননা এতে সে নিজেকে খুব বড় মনে করে এবং বলে আমার নিজ শক্তিতে এ কাজ করেছি; বরং এ মুহূর্তে বলবে ‘বিসমিল্লাহ।’ এতে সে অতি ক্ষুদ্র হয়ে যায়, এমনকি মাছির মতো হয়ে যায়।’ (মুসনাদে আহমাদ : ১৯৭৮২)
এছাড়া 'বিসমিল্লাহ' বলে কাজ শুরু করার সবচেয়ে বড় সুফল হলো- এর মাধ্যমে আল্লাহ তায়ালার সাহায্য লাভ হয়। বান্দার জন্য এর চেয়ে বড় উপকারিতা বা সুফল আর কি হতে পারে যে বিসমল্লিাহ বলে কাজ শুরু করার কারণে আল্লাহ তায়ালা তাকে দুনিয়ার সব অনিষ্টতা থেকে হেফাজত করে সাহায্য করছেন।
-এটি