।।কাউসার লাবীব।।
একটি ইসলাহি মজলিসে শায়েখ ড. আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর রহ.কে একজন প্রশ্ন করেছিলেন, জুমার দিন জুমার আজানের পর মসজিদে প্রবেশ করে দু'রাকাত দুখুলুল মসজিদ নামাজ পড়ার পর অন্য কোন সুন্নত পড়া যাবে কি? এটি নিয়ে আমাদের সমাজে বিভিন্নজন নানা ইখতেলাফ করে থাকে এ বিষয়ে সঠিক সমাধান জানতে চাই।
এর উত্তরে শায়েখ বলেছিলেন, কেউ যদি কোন হারাম কাজ করে ফেলে। তাহলে সেটা নিয়ে বাঁধানোবাদ হতে পারে। কিন্তু কেউ যদি দুখুলুল মসজিদ করার পর জুমার পূর্বে সুন্নত নামাজ পড়ে তাহলে কি এর মাধ্যমে কোন গুনাহ হবে! কখনোই নয়। বরং সওয়াব হবে।
আপনি মসজিদে প্রবেশ করেছেন, দুখুলুল মসজিদ আদায় করেছেন, ইমাম সাহেব এখনো আসেননি, আপনি বসে না থেকে সুন্নত নামাজ পড়লে তো গুনাহ হবে না। বরং সওয়াব হবে। এই নামাজটি সুন্নতে মুয়াক্কাদা নাকি সুন্নতে জায়েদা? এটি নিয়ে পূর্বের ইমামদের মাঝে কিছু মতানৈক্য ছিল। কিন্তু এই নামাজটি যে সুন্নত এবং এটি যে পড়তে হবে এটি নিয়ে তো কোন মতভেদ নাই। এখন আমরা এই বিষয় নিয়ে ঝগড়া সৃষ্টি করে মানুষ যেন নামাজ পড়তে না পারে সেই ব্যবস্থা করে দিচ্ছি।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জুমার দিনে জুমার আগে নামাজ পড়তেন। কয় রাকাত সেটা স্পষ্ট কোন বর্ণনায় তেমন পাওয়া যায় না। তবে সেই নামাজ অনেক দীর্ঘ হতো সেটি হাদিসে আছে। সাহাবায়ে কেরাম জুমার পূর্বে সুন্নত পড়তেন। চার রাকাত পড়তেন, কম পড়তেন অথবা বেশি পড়তেন। কোন কোন সাহাবায়ে কেরাম থেকে সহিহ সনদে চার রাকাত জুমার পূর্বে সুন্নত পড়ার বর্ণনা পাওয়া যায়।
তাছাড়া নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাধারণভাবে মানুষকে উৎসাহিত করেছেন তোমরা জুমার দিনে ইমাম সাহেব মিম্বরে উঠার আগ পর্যন্ত নামাজ আদায় কর।
‘জুমার পূর্বে সুন্নত পড়তে হবে না’ বলে সমাজে কোন সুন্নত জিন্দা হয় এটি আমার জানা নেই। আমার মনে হয় এই ধরনের বিতর্ক যারা করেন তারা দ্বীনের জ্ঞান না থাকার কারণে এমনটি করে থাকেন। অথবা নিজেকে অনেক বড় জ্ঞানী প্রমাণ করার জন্য, নিজেকে পন্ডিত প্রমাণ করার জন্য এসব করে থাকেন। পাশাপাশি মুসলমানদের মাঝে এ ধরনের ছোটখাট বিতর্ক তৈরি করে ভিন্ন কোন ফায়দা লুটার চেষ্টা করেন কিনা সেটি একমাত্র আল্লাহ তাআলাই ভালো জানেন।
-কেএল