সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪ ।। ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ ।। ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬


সামর্থ্যবান, কিন্তু সাময়িক ঋণগ্রস্ত, এমন ব্যক্তির কুরবানির বিধান!

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

হাফেজ মাওলানা আব্দুল মাজীদ মামুন রাহমানী

১.নেসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক সামর্থ্যবান ব্যক্তি যার উপর কুরবানি ওয়াজিব। কিন্তু সে সাময়িক ঋণগ্রস্থ। বর্তমানে তার কাছে কুরবানী করার মত টাকাও নেই।এখন প্রশ্ন হচ্ছে এই ব্যক্তি যদি ঋণ করে কুরবানী দেয় তাহলে তার কুরবানি সহিহ হবে?

উত্তরঃ- নেসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক যদি কুরবানির দিনগুলোতে সাময়িক ঋণগ্রস্ত থাকে যা পরিশোধ করে দিলে তার কাছে প্রয়োজনের অতিরিক্ত নেসাব পরিমাণ সম্পদ বাকি থাকে না তাহলে তার ওপর কুরবানি ওয়াজিব হবে না। আর যদি ঋণ আদায় করে দিলে ও নেসাব পরিমাণ সম্পদ বাকি থাকে তাহলে তার ওপর কুরবানি ওয়াজিব হবে।

আর কুরবানি ওয়াজিব এমন ব্যক্তি যদি ঋণের টাকা দিয়ে কুরবানী করে তাহলে ওয়াজিব আদায় হয়ে যাবে। তবে সুদের উপর ঋণ নিয়ে কুরবানি করা যাবে না। কেননা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেন.إِنَّ اللَّهَ طَيِّبٌ لاَ يَقْبَلُ إِلاَّ طَيِّبًا ‏. অর্থাৎ আল্লাহ্‌ তা’আলা পবিত্র, তিনি পবিত্র ও হালাল বস্তু ছাড়া গ্রহণ করেন না। সহিহ মুসলিম, হাদিস নং- ২২৩৬ বাদায়েউস সানায়ে,৪/১৯৬;ফাতাওয়া হিন্দিয়া,৫/২৯২

আরেকটি বিষয় হচ্ছে ঋণ দুই প্রকার। কিছু ঋণ আছে যেগুলোকে ইসলামি শরিয়ার পরিভাষায় বলা হয় (دين معجل) দাইনে মুআ'জ্জাল বা স্বল্প মেয়াদি ঋণ, অর্থাৎ যে ঋণ দ্রুত পরিশোধ করার প্রেশার রয়েছে। যেমন কোনো পন্য ক্রয় করেছে এবং তার মূল্য পরিশোধ করার প্রেশার রয়েছে। অথবা কারো কাছ থেকে টাকা ধার নিয়েছে তা পরিশোধ করার প্রেশার রয়েছে।

সেক্ষেত্রে এই ধরনের ঋণ দ্রুত পরিশোধ করার লক্ষ্যে কুরবানি না করে ঋণ পরিশোধ করতে হবে। আর যদি (دين مؤجل) দাইনে মুয়াজ্জাল বা দীর্ঘমেয়াদি ঋণ হয়,যেমন কিস্তিতে ক্রয়কৃত পণ্যের টাকা যা প্রতিমাসে নির্দিষ্ট পরিমাণে পরিশোধ করে থাকে, তাহলে সেই ঋণ থাকা অবস্থায় কুরবানি করা যাবে।

২.নেসাব পরিমাণ সম্পদ নেই এমন দরিদ্র ব্যক্তির কুরবানির হুকুম কি? উত্তরঃ- নেসাব পরিমাণ সম্পদ নেই এমন দরিদ্র ব্যক্তির উপর কুরবানি করা ওয়াজিব নয়; কিন্তু সে যদি কুরবানির নিয়তে কোন পশু ক্রয় করে তাহলে তা কুরবানি করা তার উপর ওয়াজিব হয়ে যাবে। -বাদায়েউস সানায়ে ৪/১৯২

৩.রাতে কুরবানি করলে কি কুরবানি সহিহ হবে?

উত্তরঃ- দশ যিলহজ্ব ঈদের নামাজের পর থেকে বার তারিখ সূর্যাস্ত পর্যন্ত দিনে ও রাতে যে কোন সময় কুরবানি করলে কুরবানি সহিহ হবে। অবশ্য পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা না থাকলে রাতে কোন পশু জবাই করা অনুত্তম। কারণ অন্ধকারে করলে জবাইয়ে ভুল ত্রুটি হতে পারে। আর পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা থাকলে রাতে জবাই করা দোষনীয় নয়। মাজমাউয যাওয়াইদ ৪/২২; আদ্দুররুল মুখতার ৬/৩২০; বাদায়েউস সানায়ে ৪/২২৩ আহসানুল ফাতাওয়া ৭/৫১০

-এটি


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ