সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪ ।। ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ ।। ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬


পশুর যেসব দোষ-ত্রুটি থাকলে কোরবানি আদায় হবে না

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

জুনাইদ আহমদ: কোরবানির পশু মোটাতাজা ও দোষ-ত্রুটি মুক্ত হওয়া উত্তম। রাসুল (সা.) স্বাস্থ্যবান পশু দিয়ে কোরবানি করতেন। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী করিম (সা.) যখন কোরবানি করতে চাইতেন তখন তিনি দুটি বড় মোটাতাজা, শিংওয়ালা, সুন্দর রঙের খাসিকৃত ভেড়া ক্রয় করতেন। (ইবনে মাজাহ ৩১১৩)

কোরবানির পশুর মধ্যে যেসব দোষ-ত্রুটি থাকলে কোরবানি দেওয়া যাবে না। নিম্নে তা বর্ণনা করা হলো -

১. দৃষ্টিশক্তি না থাকা। যে পশুর দুই চোখ বা এক চোখ পুরোপুরি অন্ধ, অথবা এক তৃতীয়াংশের বেশি নষ্ট হয়েছে এমন পশু দিয়ে কোরবানি করা যাবে না।

২. শ্রবণশক্তি না থাকা।

৩. অত্যন্ত দুর্বল ও জীর্ণ-শীর্ণ হওয়া। কোরবানির পশুর হাড়ের মগজ শুকিয়ে গেলে তা দিয়ে কোরবানির করা যাবে না। আর হাড়ের মগজ না শুকালে কোরবানি করা যাবে।

৪. এই পরিমাণ লেংড়া যে জবাইয়ের স্থান পর্যন্ত হেঁটে যেতে পারে না। যে পশু এমন খোঁড়া যে তিন পায়ের ওপর ভর করে চলাচল করে, চতুর্থ পা মাটি স্পর্শ করে না কিংবা স্পর্শ করলেও তাতে ভর দিতে পারে না এমন পশু দিয়ে কোরবানি করা যাবে না। তবে জবাইয়ের সময় মাটিতে শোয়াতে গিয়ে পশুর পা ভেঙ্গে গেলে ওই পশু দিয়ে কোরবানি করা যাবে।

৫. লেজের বেশির ভাগ অংশ কাটা।

৬. জন্মগতভাবে কান না থাকা।

৭. কানের বেশির ভাগ কাটা। পশুর কানের এক-তৃতীয়াংশের বেশি কাটা থাকলে তা দিয়ে কোরবানি করা যাবে না।

৮. গোড়াসহ শিং উপড়ে যাওয়া।

৯. পাগল হওয়ার কারণে ঘাস-পানি ঠিকমতো না খাওয়া।

১০. বেশির ভাগ দাঁত না থাকা।

১১. রোগের কারণে স্তনের দুধ শুকিয়ে যাওয়া।

১২. ছাগলের দুটি দুধের যেকোনো একটি কাটা।

১৩. গরু বা মহিষের চারটি দুধের যেকোনো দুটি কাটা।

১৪. খোচ-পাঁচড়া হলে।

মোট কথা, কোরবানির পশু বড় ধরনের দোষত্রুটি থেকে মুক্ত হবে। হাদিসে এসেছে, জাবির (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.)-কে কোরবানির ক্ষেত্রে যেসব পশু পরিহার করা হয় এসব পশু সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হয়। তিনি বলেছেন, ‘চার ধরনের পশু, যা দিয়ে কোরবানি জায়েজ হবে না। অন্ধ—যার দৃষ্টিহীনতা সুস্পষ্ট, রোগাক্রান্ত—যার রোগের বিষয়টি সুস্পষ্ট, পঙ্গু—যার পঙ্গুত্ব সুস্পষ্ট ও আহত—যার কোনো অঙ্গ ভেঙে গেছে।’ (তিরমিজি, হাদিস নং : ১৪৯৭; নাসায়ি, হাদিস নং : ৪৩৭১)

তথ্যসূত্রঃ
১। আল আসল- ৫/৪০৯
২। আল মুহিতুল বুরহানি-৮/৪৬৬
৩। ফাতাওয়া হিন্দিয়াহ -৫/৩৪৪
৪। ফাতাওয়া তাতার খানিয়া-১৭/৪২৫
৫। বাদায়েউস সানায়ে-৪/২১৪
৬। মাজমাউল আনহুর -৪/১৭১
৭। আল বাহরুর রায়েক-৮/৩২৩

লেখক: মুদাররিস, শেখ জনূরুদ্দিন রহ. দারুল কুরআন মাদরাসা।

-কেএল


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ