সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪ ।। ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ ।। ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬


কুরআন হাদিসের আলোকে কোরবানি না করেও কোরবানির সওয়াব লাভের উপায়

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

মুফতি সাদেকুর রহমান।। কোরবানি করার সামর্থ্য নেই এমন গরিব ব্যক্তি যদি জিলহজ মাসের প্রথম তারিখ থেকে ১০তারিখ কোরবানি করার পূর্ব পর্যন্ত নখ, গোঁফ ,বগলের পশম ও নাভির নিচের পশম ইত্যাদি কাটা থেকে বিরত থাকে তাহলে সে কুরবানি করার সওয়াব লাভ করবে। এটা আল্লাহর পক্ষ থেকে গরীবের প্রতি মহান অনুগ্রহ-দান ও স্পেশাল বোনাস।

হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আমর রা.থেকে বর্ণিত, রাসূলে কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জনৈক সাহাবিকে উদ্দেশ্য করে বলেন-
"أُمِرتُ بيوم الأضحى عيدا جعله الله -عز وجل- لهذه الأمة".
فقال الرجل: "أرأيت إن لم أجد إلا منيحة أنثى أفأضحي بها؟"
قال: "لا، ولكن تأخذ من شعرك، وتقلم أظفارك، وتقص شاربك، وتحلق عانتك، فذلك تمام أضحيتك عند الله عز وجل".

আমি কোরবানির দিন কোরবানি করার আদিষ্ট হয়েছি যে দিনটিকে আল্লাহ তায়ালা এই উম্মতের জন্য উৎসবের দিন হিসেবে নির্ধারণ করেছেন। লোকটি বলল, হে নবী! আমাকে বলুন ,আমার কাছে যদি অন্যের থেকে ধার নেয়া দুধের ছাগল ছাড়া আর কোন জন্তু না থাকে তাহলে কি এর দ্বারা আমি কোরবানি করতে পারব? জবাবে রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, না।

তবে তুমি তোমার চুল কর্তন করবে এবং নখ কাটবে এবং তোমার গোঁফ কর্তন করবে এবং বগলের নিচের পশম পরিষ্কার করবে তাহলে এটাই আল্লাহ তাআলার নিকট তোমার পূর্ণাঙ্গ কোরবানি হিসেবে গণ্য হবে।

সুনানে আবু দাউদ হাদিস নং২৭৮৯ ,মুসনাদে আহমদ হাদিস নং ৬৫৭৫,সুনানে নাসায়ী হাদিস নং ৪৩৬৫ ,সুনানে তিরমিজি হাদিস নং, সুনানে বায়হাকী ৪/৪২৭২ মুস্তাদরাকে হাকেম ৪/২২৩ সুনানে দারাকুতনী ৪/২৮২

উক্ত হাদীসের ব্যাখ্যায় আল্লামা শামসুল হক আযীমাবাদি রহ. বলেন:"فتلك أي الأفعال المذكورة تمام أضحيتك تامة بنيتك الخالصة ولك بذلك مثل ثواب الأضحية". উল্লিখিত কাজগুলোই তোমার জন্য এক পূর্ণাঙ্গ কোরবানি হিসেবে গণ্য হবে তোমার খাঁটি নিয়তের কারণে এবং এর দ্বারা তুমি কুরবানীর সমপরিমাণ সওয়াব পাবে। আউনুল মাবুদ ৭/৩৮৩

আল্লামা খালিল আহমদ সাহারানপুরি রহ.ও অনুরূপ উল্লেখ করেছেন। বাজলুল মাজহুদ ৭/১৪

প্রসিদ্ধ টীকাকার আল্লামা আবুল হাসান সিন্ধি উল্লেখ করেন
"(ولكن تأخذ من شعرك) الخ. كأنه أرشده الى أن يشارك المسلمين في العيد والسرور وإزالة الوسخ فذاك يكفيه إذا لم يجد الأضحية، والله تعالى أعلم .(تمام أضحيتك) أي هو ما يتم به أضحيتك بمعنى أنه يكتب لك به أضحية تامة لا بمعنى أن لك أضحية ناقصة إن لم تفعل ذلك وإن فعلته تصير تامة، والله تعالى أعلم"

অর্থাৎ রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যেন তাকে নির্দেশনা দিলেন যাতে সে ঈদ-আনন্দ ও দেহের ময়লা দূরীকরণে মুসলমানদের সাথে শরিক হয়। কোরবানির পশু জবেহ করার সামর্থ্য না থাকলে এটাই তাঁর জন্যে যথেষ্ট।এর দ্বারা তোমার কুরবানী পরিপূর্ণ হবে অর্থাৎ আল্লাহ তোমার জন্য এর বদৌলতে পরিপূর্ণ একটি কোরবানির সওয়াব লিখে দিবেন । এই অর্থ নয় যে, যদি তুমি উক্ত কাজগুলো না করো তাহলে তুমি অপরিপূর্ণ কোরবানির সওয়াব পাবে আর যদি করো তাহলে পরিপূর্ণ কুরবানীর সওয়াব পাবে। হাশিয়াতুন নাসায়ী ৪/২৪৩

সুনানে নাসায়ীএর প্রসিদ্ধ ব্যাখ্যাকার শেখ মোহাম্মদ আলী আজম উক্ত হাদীস থেকে আহরিত বিষয়গুলো বর্ণনা করতে গিয়ে বলেন:
: "منها: ما ترجم له المصنف رحمه تعالى، وهو بيا ن
حكم أن من لم يجد الأضحيةـ يسن له أن يتنظف، ويتهيأ ليوم العيد بأخذ شعره، وتقليم أظافره، وقص شاربه، وحلق عانته، فإنه يقوم مقام من ضحى.
এই হাদিস থেকে ইমাম নাসায়ী রহ.এর তরজমাতুল বাবের উদ্দেশ্য স্পষ্ট হয় অর্থাৎ যার কোরবানি করার সামর্থ্য নেই তার কি করনীয়? তার করণীয় হলো পরিষ্কার- পরিছন্নতা অর্জন করা। চুল,নখ এবং বগলের নিচের পশম ইত্যাদি পরিষ্কার করে ঈদের দিনের জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করা। কেননা( গরিবের জন্য)এই কাজগুলো আঞ্জাম দেয়া ই কুরবানী করা হিসেবে গণ্য হবে।যাখীরাতুল উকবা ৩৩/২৮৬ ইবনে আব্বাদ শরহে সুনানে আবু দাউদে উক্ত হাদিসের ব্যাখ্যায় বলেন

شاربك، وتقلم أظفارك، وتحلق عانتك، فذلك تمامأضحيتك)] معناه: أنك بنيتك الطيبة تحصل الأجر، وهذا يدل على أن على الإنسان أن يأتي بهذه الأشياء مثل الذي يريد أن يضحي، উক্ত হাদীসের অর্থ হলো তুমি তোমার খাঁটি নিয়তের কারণে কোরবানির সওয়াব লাভ করবে ।ইহা থেকে এটাই বুঝা যায় যে,কোরবানিদাতা যেমন এ কাজগুলো করবে ঠিক যে কোরবানি দিবেনা সে ও তা করবে।

উক্ত হাদিস এর মান নির্ণয়
মুসনাদে আহমদ ইবনে হাম্বল এর মুহাক্কিক আল্লামা শুয়াইব আল আরনাউথ উক্ত হাদিসের সনদকে হাসান উল্লেখ করেছেন।
অবশ্য শেখ আলবানী র. হাদীসটিকে জয়ীফ আখ্যায়িত করেছেন। কারণ এ হাদীসের একজন রাবী হলেন ঈসা ইবনে হেলাল সাদাফী । তার মতে তিনি একজন মাজহুল রাবী।

সনদের তাহকীক
আমি প্রথমে রাবির পরিচয় এবং মুহাদ্দিসীন , জরাহ ও তা'দীলের ইমামগণের দৃষ্টিতে তার অবস্থান উল্লেখ করব ।এরপর শেখ আলবানীর কথার জবাব দেব ইনশাআল্লাহ।

রাবীর পরিচয়:
তিনি একজন তাবেয়ী। মিশরের অধিবাস । তিনি ৯১ হিজরিতে ইন্তেকাল করেন। ইববে হিব্বান রহ. ও মিশরের অধিবাসী ইমাম ইয়াকুব ইবনে সুফিয়ান আল ফাসাবী রহ.'কিতাবুল মা'রিফাতি ওয়াল ইলালি'তে তাকে সিকা বলেছেন।

ইমাম তিরমিযী রহ. হাফিজুল হাদীস হাকিম ,হাফেজ শামসুদ্দিন যাহাবী ও হাফেজ মুনযিরী প্রমুখ ও এমন বেশ কিছু হাদীসকে সহীহ আখ্যায়িত করেছেন যা ঈসা ইবনে হেলাল থেকে বর্ণিত রয়েছে।

তার থেকে ইমাম আহমাদ ইবনে হাম্বল তার মুসনাদে, ইমাম বুখারী কিতাবুল মুফরাদে, ইমাম নাসায়ী তার মুজতাবা ও 'আমালুল লাইলি ওয়াল ইয়াওমি'তে, ইমাম আবু দাউদ তার সুনানে, ইমাম তিরমিযী তার সুনানে, ইমাম বাইহাকী তার' আস সুনানুল কুবরা'তে ও ইমাম হাকেম তার মুস্তাদরাকে হাদিস উল্লেখ করেছেন

قأل بن حجر :عيسى بن هلال الصدفي المصري صدوق من الرابعة بخ د ت س

قال شعيب الأرناؤوط في " الإحسان في تقريب صحيح ابن حبان" (13/136)
إسناده صحيح، عيسى بن هلال الصدفي: وثقه المؤلف. وروى عنه جمع وباقي رجاله ثقات رجال مسلم غير يزيد- وهو ابن خالد بن يزيد بن وهب. فقد روى له أبو داود والنسائي وابن ماجه، وهو ثقة.

وقال أيضاً في المسند: ج 11/139-140 في تخريجه للحديث: إسناده حسن، عيسى بن هلال الصدفي، روى عنه جمع، وذكره ابن حبان في الثقات، 5/213 وذكره الفسوي في تاريخه، 2/515 في ثقات التابعين من أهل مصر. وباقي رجاله ثقات رجال الشيخين، غير عياش بن عباس- وهو القتباني فمن رجال مسلم. أبو عبد الرحمن هو عبد الله بن يزيد المقرئ وسعيد ابن أبي أيوب.

وأخرجه النسائي.7/212- في الضحايا: باب من لم يجد الأضحية والدار قطني 4/282- والحاكم 4/223، والبيهقي 4/223 من طريقين عن ابن وهب وبهذا الإسناد وصححه الحاكم ووافقه الذهبي.

وأخرجه أحمد: 2/169، وأبو داود (2789) في الأضاحي : باب ما جاء في إيجاب الأضاحي من طريق أبي عبد الرحمن عبد لله بن يزيد، عن سعيد بن أبي أيوب وأخرجه الدار قطني 4/282 – والحاكم 4/223، والبيهقي 4/4262، من طريقين عن عياش بن عباس.

والمنيحة هي الناقة أو الشاة التي تعار لينتفع بها وتعاد إلى صاحبها

لم ينفرد ابن حبان بتوثيق عيسى بن هلال، بل وثقه أيضا الإمام يعقوب بن سفيان الفسوي حيث ذكره في "ثقات من تابعي أهل مصر" في كتابه "المعرفة والتاريخ" (2/487).
ونجد كذلك أن علماء الحديث كالترمذي والحاكم والمنذري والذهبي وغيرهم قد صححوا عدة أحاديث فيها عيسى بن هلال، وهذا يعتبر توثيقا له،
:
هذا الحديث قد صححه كثير من الأئمة وعلماء الحديث، منهم:
- الحاكم، وقد صححه في "المستدرك" (4/223) على شرط الشيخين، فتعقبه الإمام الذهبي بقوله: "بل صحيح"، أي إنه ليس على شرطهما.
- الإمام عبد الحق الإشبيلي، وقد صححه في "الأحكام الوسطى" (4/125).
- الحافظ ابن حجر، حيث ذكره في الفتح (12/103) وقال: "صححه ابن حبان" ولم يتعقب بشيء.
- بدر الدين العيني، وقد صححه في "نخب الأفكار" (14/512).
- الشيخ أحمد شاكر، وقد صححه في "تخريج المسند" (6576).
- الشيخ عبد القادر الأرناؤوط، وقد صححه في "تخريج جامع الأصول" (1626).
- الشيخ شعيب الأرناؤوط، وقد صححه في "تخريج صحيح ابن حبان" (5914).
- الشيخ محمد بن علي آدم الأثيوبي، وقد حسنه في "ذخيرة العقبى" (33/
الشيخين، غير عياش بن عباس- وهو القتباني فمن رجال مسلم أبو عبد الرحمن هو عبد الله بن يزيد المقرئ وسعيد ابن أبي أيوب.

قلت: إن الحافظ ابن حجر ذكر الحديث في الفتح تحت رقم /5550/ وقال صححه ابن حبان
وقال الحافظ ابن حجر في التقريب عن عيسى ابن هلال الصدفي(صدوق) وقال الذهبي في ( الكاشف) وثق.
وقد ضعف الشيخ الألباني رحمه الله الحديث في المشكاة) وجعل علته عيسى بن هلال فقال عنه:
(وهو عندي فيه جهالة) ووثقه ابن حبان وذكره ابن أبي حاتم ولم يذكر فيه جرحاً ولا تعديلاً.

والذي نود قوله إن العلماء كالترمذي والمنذري وغيرهما قد صححوا عدة أحاديث فيها عيسى بن هلال.

فمن الأحاديث التي صححها أهل العلم فيها عيسى بن هلال الصدفي حديث عبد الله ابن عمرو عن النبي صلى الله عليه وسلم: أخبرنا عبد الله بن يزيد حدثنا سعيد هو أبن أبي أيوب قال حدثني كعب بن علقمة عن عيسى ين هلال الصدفي عن عبد الله بن عمرو عن النبي صلى الله عليه وسلم أنه ذكر الصلاة يوما فقال من حافظ عليها كانت له نورا وبرهانا ونجاة من النار يوم القيامة ومن لم يحافظ عليها لم تكن له نورا ولا نجاة ولا برهانا وكان يوم القيامة مع قارون وفرعون وهامان وأبي بن خلف

قال الشيخ على عبد الحميد في ( فضل صوم رمضان (ص56-57) رواه أحمد 2/149- والدرامي 2/301- والطبراني في الأوسط- 1767-ابن حبان-1467- والطحاوي في مشكل الآثار –3180 و 3181، وذكره الهيثمي في المجمّع. ( 1/192/وزاد نسبته الطبراني في لمعجم الكبير وقال: ورجال أحمد ثقات وسنده حسن إن شاء الله لحال عيسى بن هلال الصدفي. وقد وثقه الفسوي في تاريخه(2/515) وروى عنه جماعة وقال الحافظ ابن حجر صدوق.
وقال المنذري إسناده جيد .

শেখ আলবানীর মন্তব্য
শেখ আলবানী 'তাখরীজুল মেশকাতের এক জায়গায় ঈসা ইবনে হেলাল সম্পর্কে বলেন "):"وفيه عندي جهالة، ذكره ابن أبي حاتم في "الجرح والتعديل" ( ولم يذكر فيه جرحا ولا توثيقا، وإنما وثقه ابن حبان، وهو معروف بتساهله في التوثيق".

অর্থাৎ আমার মতে ঈসার মধ্যে জাহালত আছে অর্থাৎ তিনি মাজহুল রাবী।ইবনে আবু হাতেম তাকে' কিতাবুল জারহি ওয়াত তা'দীলে উল্লেখ করে তার ব্যাপারে সিকা বা যয়ীফ কোন মন্তব্য করেননি। কেবল ইবনে হিব্বান রহ তাকে সিকা বলেছেন ।আর তাওসীকের ক্ষেত্রে ইবনে হিব্বান যে মুতাসাহিল তা বলাবাহুল্য।

অন্যত্র তিনি বলেন
(1/183 578) عيسى بن هلال الصدفي تابعي لم يرو عنه سوى اثنين ولم يوثقه غير ابن حبان. ঈসা ইবনে হেলাল এমন একজন তাবেয়ী যার থেকে দুইজন ছাড়া আর কেউ হাদীস রেওয়ায়াত করেননি। ইবনে হিব্বান ছাড়া আর কেউ তাকে সিকা বলেন নি। তাখরীজুল মেশকাত ১/ ৫৭৮,১৮৩

আলবানী সাহেবের বক্তব্য থেকে তিনটি জিনিস স্পষ্ট হয়।
এক, ঈসা ইবনে হিলাল একজন মাজহুল রাবী।
দুই, ইবনে আবি হাতেম তার ব্যাপারে নীরবতা অবলম্বন করেছেন সুতরাং তিনি সিকা নন। তিন,ইমামুল জারহি ওয়াত তা'দীল থেকে কেবল ইবনে হিব্বান রহ তাকে সিকা বলেছেন।

শেখ আলবানীর মন্তব্যের খন্ডন:
আমাদের জানা অনুসারে তার এই তিনটি দাবিই সঠিক নয়। প্রথম দাবি সঠিক নয় কারণ মাজহুল দ্বারা মাজহুলুল আইন উদ্দেশ্য হলে তার তার অভিমত সঠিক নয় , কারণ হাফেজ মিযযী রহ. ,তাহজিবুল কামালে ও হাফেজ যাহাবী রহ. তারীখুল ইসলামে ঈসা থেকে বর্ণনাকারী পাঁচজন রাবীর কথা উল্লেখ করেন। তারা হলেন ১. দাররাজ আবু সামহ২, আব্দুল মালেক ইবনে আব্দুল্লাহ আততুজীবী ৩.আয়্যাশ ইবনে আব্বাস ৪.কা'ব ইবনে আলকামা ৫. ইয়াজিদ ইবনে আবু হাবীব। তিনি তার কিতাবে প্রত্যেকের হাদীস গুলো উল্লেখ করেন। তাহযীবুল কামাল ১০/ তারীখুল ইসলাম

আর মাজহুল দ্বারা মাজহুল হাল উদ্দেশ্য হলে তখনো তার কথা সঠিক নয় ।কারণ তাকে ইবনে হিব্বান, ইমাম ইয়াকুব ফাসাবী সিকা বলেছেন। হাফেজ ইবনে হাজার আসকালানী তাকে সাদুক صدوق বলেছেন। ইমাম নাসায়ী, ইমাম আবু দাউদ ,ইমাম তিরমিযী, বাইহাকী ও দারাকুতনীসহ অনেক মুহাদ্দিস তার থেকে হাদিস নিয়েছেন।

দ্বিতীয় দাবি ঠিক নয় কারণ ইবনে আবি হাতিম তাঁর কিতাবের ভূমিকায় স্পষ্ট উল্লেখ করেছেন যে, যে তাবেয়ীর ব্যাপারে তিনি সুকুত বা নীরবতা অবলম্বন করেন তা তার নিকট জরাহমুক্ত হিসেবে বিবেচিত।

قال الشيخ الوليد بن سيف النصر في تحقيقه لكتاب "الشريعة" (1/295) بعد ما نقل كلام الشيخ الألباني السابق: "قلت: سكوت ابن أبي حاتم عن تابعي يعني أنه ثقة عنده كما صرح بذلك في مقدمة كتابه. ذكر المزي في "تهذيبه" (23/53) خمسة رووا عنه. فبهذا وغيره يتبين أن الرجل ليس مجهولا، بل أقل درجته أنه حسن. ".:
তৃতীয় দাবী সঠিক নয় কারণ আমি পূর্বে উল্লেখ করেছি যে ঈসা বিন হেলাল কে কেবল ইবনে হিব্বান ই সিকা বলেন নি বরং মিশরের মুহাদ্দিস ইমাম ইয়াকুব ইবনে সুফিয়ান ফাসাবী ও সিকা বলেছেন।

প্রসিদ্ধ মুহাদ্দিসীনে কেরাম তার থেকে হাদিস নিয়েছেন। স্বয়ং আলবানী সাহেব ও এ পর্যায়ের রাবীর হাদীসকে অনেক স্থানে হাসান বলে থাকেন। তাই মুসনাদে আহমদ ইবনে হাম্বলের মুহাক্কিক আল্লামা শোয়াইব আল রানাউথ দীর্ঘ আলোচনার পর এই রাবীর এই হাদিসকে হাসান বলে আখ্যায়িত করেছেন।

তাছাড়া এই হাদিসকে সহিহ আখ্যায়িত করেছেন ইমাম হাকেম রহ. হাফেজ যাহাবী রহ. বদরুদ্দীন আইনি রহ.শেখ আহমদ শাকের রহ. মোহাম্মদ আলী আদম রহ. আব্দুল কাদের আলআরনাউথসহ অনেক প্রসিদ্ধ ও গ্রহণযোগ্য মুহাদ্দিসীনে কেরাম।

قال الشيخ الوليد بن سيف النصر في تحقيقه لكتاب "الشريعة (1/295) بعد ما نقل كلام الشيخ الألباني السابق: "قلت: سكوت ابن أبي حاتم عن تابعي يعني أنه ثقة عنده كما صرح بذلك في مقدمة كتابه. ذكر المزي في "تهذيبه" (23/53) خمسة رووا عنه. فبهذا وغيره يتبين أن الرجل ليس مجهولا، بل أقل درجته أنه حسن. :

هذا الحديث قد صححه كثير من الأئمة وعلماء الحديث، منهم:
- الحاكم، وقد صححه في "المستدرك" (4/223) على شرط الشيخين، فتعقبه الإمام الذهبي بقوله: "بل صحيح"، أي إنه ليس على شرطهما.
- الإمام عبد الحق الإشبيلي، وقد صححه في "الأحكام الوسطى" (4/125).
- الحافظ ابن حجر، حيث ذكره في الفتح (12/103) وقال: "صححه ابن حبان" ولم يتعقب بشيء.
- بدر الدين العيني، وقد صححه في "نخب الأفكار" (14/512).
- الشيخ أحمد شاكر، وقد صححه في "تخريج المسند" (6576).
- الشيخ عبد القادر الأرناؤوط، وقد صححه في "تخريج جامع الأصول" (1626).
- الشيخ شعيب الأرناؤوط، وقد صححه في "تخريج صحيح ابن حبان" (5914).
- الشيخ محمد بن علي آدم الأثيوبي، وقد حسنه في "ذخيرة العقبى" (33/285).

قلت ولعل الشيخ الألباني لم يطلع على توثيق الفسوي للراوي فحكم بضعف الحديث كما في المشكاة (1/183 578) فقد قال فيه عيسى ين هلال الصدفي تابعي لم يرو عنه سوى اثنين ولم يوثقه غير ابن حبان.
قلت: بل روى عنه أكثر من واحد كما قال الذهبي في تاريخ الإسلام: عيسى بن هلال الصدفي المصري روى عن عبد الله بن عمرو وروى عنه دراج ابو السمح وكعب بن علقمة ويزيد بن ابي حبيب وعياش بن عباس. فالحديث أقل أحواله حسنا إن شاء الله
والله من وراء القصد
والله أعلم

বি:দ্র:১, কোরবানি দাতার জন্য উক্ত আমলটি করা যে মুস্তাহাব বরং কোন কারও কারও মতে ওয়াজিব এই বিষয়ে সহিহ হাদিস বর্ণিত রয়েছে এবং এ বিষয়ে ভিন্ন কোনো মতামত আছে বলে আমাদের জানা নেই।

আমি শুধু একটি হাদিস উল্লেখ করব হযরত উম্মে সালামা থেকে বর্ণিত রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেন যার কোরবানির পশু থাকবে সে যেন জিলহজ মাসের চাঁদ উঠার পর থেকে কুরবানী সম্পন্ন করা পর্যন্ত চুল নখ কর্তন করা হতে বিরত থাকে ।সহিহ মুসলিম হাদীস ,নং৫২৩৬ সহীহ ইবনে হিব্বান,হাদিস নং৫৯১৭ সুনানে আবু দাউদ,হাদিস নং ২৭৯৩ শুআবুল ঈমান,হাদিস নং
৭৩৩১ শরহু মুশকিলি আসার হাদিস, নং ৪৮১২

বি:দ্র:২ ধনী ও গরিব উভয়ের জন্য ই উক্ত আমলটি করার জন্য শর্ত হলো, কাটার পর থেকে ৪০ দিন গত হয়ে গিয়েছে এমন না হতে হবে ।কারণ ৪০ দিন অতিবাহিত হয়ে গেলে তখন এগুলো পরিষ্কার করা ওয়াজিব।সেক্ষেত্রে ওয়াজিব বাদ দিয়ে মুস্তাহাবের উপর আমল করার কোন অবকাশ নেই।

লেখক মুশরিফ, ফাতওয়া বিভাগ, শেখ জনুরুদ্দিন র. দারুল কুরআন মাদ্রাসা চৌধুরীপাড়া ঢাকা

-এটি


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ