আওয়ার ইসলাম ডেস্ক: ভারতের ক্ষমতাসীন দল বিজেপির মুখপাত্র নুপুর শর্মা ও নবীনকুমার জিন্দাল কর্তৃক বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও তাঁর সহধর্মিণী আম্মাজান হযরত আয়েশা সিদ্দিকা রা. এর বিরুদ্ধে কটুক্তিকারীদের মৃত্যুদন্ড প্রদান ও ভারতে মুসলিম নিপীড়ন বন্ধের দাবীতে আজ মঙ্গলবার দুপুরে জাতীয় মসজিদ বাইতুল মুকাররমের উত্তর গেট থেকে ভারতীয় দূতাবাস অভিমুখে গণ মিছিল করেছে বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন। মিছিলটি ভারতীয় দূতাবাস অভিমুখে রওয়ানা দিয়ে পল্টনমোড়ে পৌছলে পুলিশি বাধার মুখে পড়ে। সেখানে বিক্ষুব্ধ তাওহীদী জনতা শ্লোগানে শ্লোগানে আকাশ বাতাস মুখরিত করে তুলে।
একটি প্রতিনিধি দল ভারতীয় দূতাবাসে স্মারকলিপি নিয়ে যান। মিছিল পুর্ব সমাবেশে খেলাফত আন্দোলনের আমীর মাওলানা আতাউল্লাহ হাফেজ্জী বলেন, ইসলাম বিদ্বেষী ভারত সরকারের প্রকাশ্য মদদেই নুপুর শর্মা বিশ্ব নবীর বিরুদ্ধে কটুক্তি করে সারা দুনিয়ার নবীপ্রেমী মুসলমানদের হৃদয়ে আঘাত দেয়ার দুঃসাহস দেখিয়েছে।
এটা বিশ্ব মুসলিমের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণার শামিল। মহানবী হযরত মুহাম্মদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সকল ধর্মের বিবেকবান মানুষের কাছেই জনপ্রিয় ও মহান আদর্শের প্রতীক। আর মুসলমানগণ তাদের নবীকে জীবনের চাইতেও অনেক বেশি ভালোবাসেন। বিশ্ব শান্তির দূত মহানবীকে নিয়ে যারা অবান্তর কথা বলে তারা পিতৃপরিচয়হীন, অমানুষ।
নুপুর গংরা মুসলমানদের উসকে দিয়ে বিশ্বে শান্তি ও সম্প্রীতি বিনষ্ট করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। বিশ্ব মুসলিমের প্রাণের দাবি অবিলম্বে কটুক্তিকারীদের ফাঁসি দিতে হবে। অন্যথায় দেশে-বিদেশে বিক্ষোভ আন্দোলনের দাবানল থামানো যাবে না।
সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন দলের মহাসচিব মাওলানা হাবিবুল্লাহ মিয়াজী, নায়েবে আমীর মাওলানা মুজিবুর রহমান হামিদী, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা সানাউল্লাহ হাফেজ্জী, হাজী জালালুদ্দীন বকুল, মাওলানা ফিরোজ আশরাফী, সাংগঠনিক সম্পাদক মুফতী সুলতান মহিউদ্দিন, যুগ্ম সাংগঠনিক সম্পাদক ও নারায়ণগঞ্জ জেলা আমীর আলহাজ্ব আতিকুর রহমান নান্নু মুন্সি, মাওলানা এহতেরামুল হক উজানী, প্রচার সম্পাদক মাওলানা সাইফুল ইসলাম সুনামগঞ্জী, মাওলানা সাজেদুর রহমান ফয়েজী,মাওলানা ইলিয়াছ মাদারিপুরী, ইঞ্জিনিয়ার আব্দুল হান্নান আল হাদী, মাওলানা মাহবুবুর রহমান, মুফতি আখতারুজ্জামান আশরাফী, মোফাচ্ছির হোসাইন, মাওলানা শেখ সাদী, মুক্তি জসিম উদ্দিন, মাওলানা আখতারুজ্জামান সাদেকী, মুফতি আকরাম হোসাইন মুফতি আবুল হাসান কাসেমী, যুবনেতা মুফতি আল আমীন, ছাত্রনেতা হাফেজ জাকির বিল্লাহ প্রমুখ।
মাওলানা আতাউল্লাহ হাফেজ্জী আরো বলেন, ভারতজুড়ে বর্তমানে মুসলমানদের উপর নির্বিচারে রাষ্ট্রীয় জুলুম চলছে। মুসলিম নিপীড়নের কারণে আমেরিকা ও আরববিশ্বসহ বিভিন্ন দেশ ভারত সরকারের নিন্দা জানিয়েছে। কিন্তু মোদি সরকার কারোর কথাই শুনছে না। এই ঔদ্ধত্যের কারণে বিশ্ব নেতৃবৃন্দ ঐক্যবদ্ধ হয়ে ভারতকে বয়কট করতে হবে।
হাবিবুল্লাহ মিয়াজী বলেন, ভারত সরকার মহানবীর অবমাননাকারীদের লোক দেখানো সাময়িক বহিস্কার ও বরখাস্ত করে গোপনে তাদের আশ্রয়-প্রশয় দিচ্ছে। তার প্রমাণ তারা প্রতিবাদী মুসলিমদের উপর নির্যাতন চালাচ্ছে। শুধু তাই নয়, ভারত সরকার আগ্রাসী পানিনীতির মাধ্যমে আমাদের দেশের মানুষকেও বন্যার পানিতে ডুবিয়ে মারছে। আমরা মহানবীর সম্মান রক্ষা ও সকলের নাগরিক অধিকার নিশ্চিতে আন্দোলন অব্যাহত রাখব ইনশাআল্লাহ।
মুজিবুর রহমান হামিদী বলেন, মহানবী সা: ও আম্মাজান আয়েশা রা:- সম্পর্কে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্যকারীরা ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ করেছে। কিন্তু ভারত সরকার মহানবী সা:কে অবমাননাকারী দুই কুলাঙ্গারকে গ্রেফতার ও বিচারের মুখোমুখি না করে ভারতে শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদকারী মুসলমানদের বাড়িঘরে হামলা-ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও রাষ্ট্রীয় নির্যাতন চালাচ্ছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।
সুলতান মহিউদ্দীন বলেন, আমাদের জাতীয় সংসদে মহানবীর অবমাননা, মুসলিম বিদ্বেষী তৎপরতা, পানি আগ্রাসন, সীমান্ত হত্যাসহ ভারতের হীন কর্মকান্ডসমূহের বিরুদ্ধে নিন্দা প্রস্তাব পাশ করতে হবে। ভারত সরকারের সুমতি হওয়ার আগ পর্যন্ত ভারতীয় পণ্য বর্জন করতে হবে।
সমাবেশ থেকে নেতৃবৃন্দ ভারত সরকারের কাছে দাবি জানান- ১. মহানবী হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও হযরত আয়েশা রাদিআল্লাহু আনহাকে নিয়ে জঘন্যতম কটুক্তিকারিনী নুপূর শর্মা ও তাকে সমর্থনদানকারী নবীন কুমার জিন্দালকে দ্রæত আইনের আওতায় আনতে হবে এবং গ্রেফতারপূর্বক দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। ২. শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারী নাগরিকদের উপর নির্যাতন বন্ধে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। ৩. ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের উপর নির্যাতন বন্ধ, জাতিগত সহিংসতা, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় নিপীড়ন বন্ধে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। ৪. যে কোন মানুষের ধর্মানুভূতিতে আঘাত হানে এরকম কোন বক্তব্য প্রদান, কার্যকলাপ থেকে সবাইকে বিরত রাখতে যথোপযুক্ত আইন প্রণয়ন করতে হবে।
-এটি