আওয়ার ইসলাম ডেস্ক: গাজা উপত্যকার পাঁচ শিশুর মধ্যে চারজন ইসরায়েলি অবরোধের মধ্যে থাকার কারণে হতাশা, দুঃখ ও আতঙ্কে ভুগছে বলে জানিয়েছে সেভ দ্য চিলড্রেন। বুধবার সংস্থাটি এমন প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
ট্র্যাপড' শিরোনামের ওই প্রতিবেদনে যুক্তরাজ্যের দাতব্য সংস্থাটি গাজার ৪৮৮শিশু, ১৬৮জন পিতামাতা এবং যত্নশীল অভিভাবকদের সাক্ষাৎকারের বিবরণ দিয়েছে। ২০১৮ সালে তাদের শেষ গবেষণার পর থেকে বর্তমানকালের কিছু অবনতির চিত্র ফুটে উঠেছে এখানে।
বিষণ্নতা, শোক ও আতঙ্কে ভোগা শিশুদের সংখ্যা ৫৫ শতাংশ থেকে ৮০ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। এ শিশুদের মধ্যে এসব উপসর্গ দেখা গেছে।
প্রতিবেদনে দেখা গেছে, যে সকল শিশুরা আতঙ্কে ভুগছে তাদের সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০১৮ সালে যেখানে ৫০ শতাংশ শিশু আতঙ্কে ভুগত এখন তার সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৮৪ শতাংশ। এদের মধ্যে দুঃখ বা বিষণ্ণতা বেড়ে হয়েছে ৭৭ শতাংশ, অথচ আগে মাত্র ৬২ শতাংশ এসব অসুস্থতায় ভুগত।
এদিকে শিশুদের মধ্যে শোকও বেড়েছে। ৫৫ শতাংশ থেকে বেড়ে ৭৮ শতাংশে দাঁড়িয়েছে ওই শোকগ্রস্ত শিশুর সংখ্যা। ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাতের কারণে স্বজন হারানোর ঘটনায় এসব অসুস্থতা দেখা দিয়েছে। এ বিষয়ে মঙ্গলবার ‘আল-মেজান সেন্টার ফর হিউম্যান রাইটস’ নামের সংস্থা জানিয়েছে, ২০০৭ সাল থেকে অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি সামরিক হামলায় ৫,৪১৮ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে।
অধিকৃত ফিলিস্তিনি অঞ্চলে সেভ দ্য চিলড্রেনের পরিচালক জেসন লি বলেছেন, এ প্রতিবেদনের জন্য আমরা যে বাচ্চাদের সাথে কথা বলেছি তারা আতঙ্ক, উদ্বেগ, দুঃখ এবং শোকের চিরস্থায়ী অবস্থায় বসবাস করছে। পরবর্তী দফা সহিংসতার জন্য অপেক্ষা করার কারণে তারা ঘুমাতে বা মনোযোগ দিতে অক্ষম হয়ে যাচ্ছে। তারা এমনভাবে ভয় পাচ্ছে যেন এখনি আবার যুদ্ধ শুরু হবে।
তিনি আরো বলেছেন, তাদের যন্ত্রণার শারীরিক প্রমাণ - বিছানা ভেজা, কথা বলার ক্ষমতা বা মৌলিক কাজগুলো সম্পূর্ণ করতে না পারা। এসব বিষয় খুবই আতঙ্কজনক। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উচিৎ এক্ষেত্রে একটি কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া।
উল্লেখ্য, ইসরায়েলিরা ফিলিস্তিনি আরবের সাথে অমানবিক আচরণ করে থাকে। এ বিষয়ে জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদ কর্তৃক গঠিত এক স্বাধীন তদন্ত কমিশনের প্রতিবেদনে অনেক তথ্য পাওয়া গেছে। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাতের মূল কারণ হলো ইসরায়েলি ‘দখলদারি ও বৈষম্যমূলক নীতি।’
১৮ পৃষ্ঠার ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘কেবল ইসরায়েলি দখলদারিত্বের অবসান করলেই যথেষ্ট পদক্ষেপ নেয়া হবে না।’ ফিলিস্তিনিদের সমান মানবাধিকার নিশ্চিতে আরও পদক্ষেপ নিতে হবে।
সূত্র : মিডল ইস্ট মনিটর
এনটি