আওয়ার ইসলাম ডেস্ক: মহানবী হযরত মোহাম্মদকে (সা.) কটুক্তির ঘটনায় ভারতের উত্তর প্রদেশে মুসলিম বিক্ষোভকারীদের ঘরবাড়ি বুলডোজার চালিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়ার বিষয়ে রাজ্য সরকারকে নোটিশ দিয়েছে দেশটির সুপ্রিম কোর্ট। ভারতের সর্বোচ্চ আদালত বলেছে, ঘরবাড়ি গুঁড়িয়ে দেওয়ার বিষয়টি আইন অনুযায়ী হতে হবে। তা প্রতিশোধমূলক ব্যবস্থা হতে পারে না।
তবে, আদালত উত্তর প্রদেশ সরকারকে ঘরবাড়ি গুঁড়িয়ে দেওয়া বন্ধের নির্দেশ দেয়নি। আদালত বলেছে, তারা ঘরবাড়ি গুঁড়িয়ে দেওয়া বন্ধ করার আদেশ দিতে পারেন না। বরং তাঁরা রাজ্য সরকারকে আইন অনুযায়ী চলতে বলতে পারেন।
মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-কে নিয়ে বিজেপি নেত্রী নুপুর শর্মার অবমাননাকর মন্তব্যের প্রতিবাদে সম্প্রতি উত্তর প্রদেশে বিক্ষোভ হয়। এই বিক্ষোভ একপর্যায়ে সহিংস রূপ নেয়। সহিংসতায় জড়িত থাকার অভিযোগ তুলে মুসলমান জনগোষ্ঠীর ঘরবাড়ি বুলডোজার চালিয়ে গুঁড়িয়ে দিচ্ছে উত্তর প্রদেশের বিজেপির মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের সরকার।
উত্তর প্রদেশে মুসলমান জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে যোগী সরকারের বুলডোজার নীতির বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয় জমিয়তে উলামায়ে হিন্দ।
জমিয়তে উলামায়ে হিন্দ উত্তর প্রদেশে বিক্ষোভ মোকাবিলায় সম্পত্তি নষ্টের অভিযান বন্ধে সুপ্রিম কোর্টে আরজি জানায়। উত্তর প্রদেশে অবৈধভাবে বাড়িঘর গুঁড়িয়ে দেওয়ার জন্য দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন জানায় তারা।
আইনের যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ না করে যাতে কারও ঘরবাড়ি গুঁড়িয়ে দেওয়া না হয়, তা নিশ্চিত করতে উত্তর প্রদেশ সরকারকে নির্দেশ দিতে সুপ্রিম কোর্টের প্রতি আবেদন জানায় জমিয়তে উলামায়ে হিন্দ।
তবে উত্তর প্রদেশ সরকারের দাবি, তারা আইন অনুসরণ করেই কাজ করছে।
উত্তর প্রদেশ সরকারের ‘বুলডোজার নীতি’ বন্ধে সুপ্রিম কোর্ট যাতে অবিলম্বে হস্তক্ষেপ করেন, সেই অনুরোধ জানিয়ে গতকাল মঙ্গলবার চিঠি লিখেন ভারতের একদল সাবেক বিচারপতি। একই অনুরোধ করেন দেশটির বেশ কয়েকজন বিশিষ্ট আইনজীবী।
সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি এন ভি রমনাকে লেখা চিঠিতে বলা হয়, উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী তার প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছেন, এমন শিক্ষা দিতে হবে, যাতে ভবিষ্যতে কেউ বিক্ষোভে শামিল না হয়। মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-কে নিয়ে অবমাননাকর মন্তব্যের প্রতিবাদে উত্তর প্রদেশে বিক্ষোভকারীদের ঘরবাড়ি বুলডোজার চালিয়ে যেভাবে ভেঙে দেওয়া হচ্ছে, যেভাবে ধরপাকড় করা হচ্ছে, তা আইনের শাসনের পরিপন্থী। রাজ্য সরকারের এসব কর্মকাণ্ড দেশের সংবিধানকে হাস্যকর করে তুলেছে।
-এটি