আওয়ার ইসলাম ডেস্ক: সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যে বাংলাদেশের প্রথম পাতাল রেল নির্মাণের কাজ শুরু হবে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। ঢাকায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন পর্যন্ত যাবে এই পাতাল রেল।
কর্মকর্তারা আশা করছেন ২০২৬ সালে পাতাল রেলে যাত্রী পরিবহন শুরু হবে।
ঢাকা ম্যাস ট্র্যানজিট কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এমএএন সিদ্দিকী বলেছেন, "আগামী অর্থবছরের (২০২২-২৩) প্রথম প্রান্তিকের মধ্যে পাতাল রেলের ডিপোর ভূমি উন্নয়নের মধ্য দিয়ে নির্মাণকাজ শুরু হবে। এজন্য আমাদের ভূমি অধিগ্রহণসহ অন্যান্য প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে।"
প্রাথমিক কাজের অংশ হিসেবে কর্তৃপক্ষ বুধবার ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে লাইসেন্স হস্তান্তর করেছে।
এমএএন সিদ্দিকী বলেছেন, "আগামী রবিবার (২০শে জুন) দাতা সংস্থা জাইকার কাছে কনকারেন্সের জন্য পাঠানো হবে, সেখানে অনুমোদন পেলে কন্ট্রাক্টর (ঠিকাদার) নিয়োগ দেয়া হবে।"
এরপর শুরু হবে নির্মাণ কাজ।
তিনি বলেছেন, ইতিমধ্যে ভূমি অধিগ্রহণের কাজ সম্পন্ন হয়েছে।
এমএএন সিদ্দিকী বলেছেন, পাতাল রেল মাটির কমবেশি ৩০ মিটার নিচ দিয়ে যাবে।
টানেল বোরিং মেশিন দিয়ে এর নির্মাণকাজ চালানো হবে। ভূগর্ভস্থ স্থাপনা নির্মাণে ব্যবহার হওয়া এই একই মেশিন দিয়ে কর্ণফুলীর নদীর নিচ দিয়ে টানেল নির্মাণ করা হচ্ছে।
সরকারি ওয়েবসাইটে দেয়া তথ্য অনুযায়ী, পাতাল মেট্রোরেল প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যয় ধরা হয়েছে ৫২ হাজার ৫৬১ কোটি টাকা।
পাতাল রেলের বড় অংশের অর্থায়ন হবে দাতা সংস্থা জাইকার কাছ থেকে।
কমলাপুর থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত কাজ ২০২৬ সালের মধ্যে শেষ হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষের ওয়েবসাইটে দেয়া তথ্য বলছে, পাতাল রেল যা মেট্রোরেলের লাইন বা এমআরটি-১ নামেও পরিচিত, সেটি বিমানবন্দর থেকে কমলাপুর পর্যন্ত যাবে।
মেট্রোরেলের মতো এটিও হবে বিদ্যুৎ-চালিত রেল। এবং এটি হবে দূর নিয়ন্ত্রিত ট্রেন।
দূর নিয়ন্ত্রিত পদ্ধতিতে মেট্রোরেল পরিচালনার জন্য থাকবে অপারেশন কন্ট্রোল সেন্টারও।
এর দৈর্ঘ্য হবে প্রায় ২০ কিলোমিটার।
শুরুতে এমআরটি-১ এর কাজ ২০২০ সালের ডিসেম্বরে শুরু করার কথা বল হয়েছিল। কিন্তু কর্তৃপক্ষ বলছে, কোভিড -১৯ মহামারীর কারণে কাজটি পিছিয়ে যায়।
এমআরটি-১ এর রেললাইনে দুটি অংশ থাকবে, প্রথম অংশটি পুরোপুরি পাতালপথে, দ্বিতীয়টি উড়ালপথ।
এই দুই পথের জন্য মোট ১৯টি স্টেশন চূড়ান্ত করা হয়েছে।
এর মধ্যে পাতালপথে স্টেশন হবে ১২টি।
প্রতিটি স্টেশনে ট্রেন থামবে প্রতি আড়াই থেকে সাড়ে তিন মিনিট পরপর।
এই রুটে চলাচল করবে মোট ২৫টি ট্রেন, যার প্রতিটি একবারে তিন হাজারের বেশি যাত্রী বহন করবে।
পাতালপথে যেসব স্টেশন থাকবে তার মধ্যে রয়েছে কমলাপুর, রাজারবাগ, মালিবাগ, রামপুরা, পূর্ব হাতিরঝিল, বাড্ডা, উত্তর বাড্ডা, নতুন বাজার, নর্দা, খিলক্ষেত, বিমানবন্দর টার্মিনাল-৩, বিমানবন্দর।
প্ল্যাটফর্মে ওঠানামার জন্য উভয় পথের স্টেশনে থাকবে লিফট, সিঁড়ি ও এস্কেলেটর। সূত্র: বিবিসি বাংলা
-কেএল