আওয়ার ইসলাম ডেস্ক: যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্র দেশগুলোর সামরিক জোট নর্থ আটলান্টিক ট্রিটি অর্গানাইজেশনের (ন্যাটো) মহাসচিব জিনস স্টলটেনবার্গ দাবি করেছেন, পশ্চিমা বিশ্বের নিষেধাজ্ঞা নয়, বরং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবেই বিশ্বজুড়ে বাড়ছে খাদ্যপণ্যের দাম।
বুধবার বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলসে ন্যাটোর সদর দপ্তরে সাংবাদিকদের সঙ্গে এক মত বিনিময় অনুষ্ঠানে ন্যাটো মহাসচিব বলেন, ‘চলতি বছরের সবচেয়ে বড় বৈশ্বিক সমস্যা হলো খাদ্যপণ্যের উচ্চমূল্য। রাশিয়া যদিও বলছে যে, আমাদের নিষেধাজ্ঞার কারণে বিশ্বজুড়ে খাদ্যপণ্যের দাম বাড়ছে, কিন্তু এই অভিযোগ একদমই সঠিক নয়। বরং সত্য হলো, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের সরাসরি প্রভাবেই বাড়ছে খাদ্যের দাম।’
করোনা মহামারি এবং জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে বিভিন্ন দেশে অতিবৃষ্টি, খরা ও ঘুর্ণিঝড়ের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগ দেখা দেওয়ায় চলতি ২০২২ সালের শুরু থেকেই বিশ্বজুড়ে চড়ছিল খাদ্যপণ্য ও শস্যের দাম। তার মধ্যেই গত ২৪ ফেব্রুয়ারি রুশ বাহিনীকে ইউক্রেনে ‘বিশেষ সামরিক অভিযান’ শুরুর নির্দেশ দেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
গত ০৮ এপ্রিল জাতিসংঘের বৈশ্বিক খাদ্যপণ্য মূল্য সূচক একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। সেখানে বলা হয়, ফেব্রুয়ারি থেকে মার্চ— মাত্র এক মাসের ব্যবধানে বিশ্বে ভোজ্য তেল, খাদ্যশস্য, চিনি, মাংসসহ সব ধরনের খাদ্যপণ্যের দাম বেড়েছে এবং এই মূল্যবৃদ্ধির গড় হার ১৩ শতাংশ।
আরও বলা হয়, এক মাসে বিশ্বে ভোজ্য তেলের দাম বেড়েছে ২৩ শতাংশ, খাদ্যশস্যের দাম বেড়েছে ১৭ শতাংশ, চিনির দাম বেড়েছে ৭ শতাংশ, মাংসের দাম বেড়েছে ৫ শতাংশ এবং দুধ ও দুগ্ধজাত পণ্যের দাম বেড়েছে ৩ শতাংশ।
এ বিষয়ক এক বিবৃতিতে জাতিসংঘের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বৈশ্বিক খাদ্যপণ্য মূল্যসূচকের যাত্রা শুরু হয় আজ থেকে ৬০ বছর আগে। এই ৬০ বছরের ইতিহাসে এত অল্প সময়ের মধ্যে খাদ্যপণ্যের দামের এই পরিমাণ উল্লম্ফন দেখা যায়নি।
বুধবারের মত বিনিময় সভায় ন্যাটো মহাসচিব বলেন, ‘বর্তমানে যুদ্ধের যে পরিস্থিতি, তাতে ইউক্রেন থেকে খাদ্য ও শস্য রপ্তানি অতিমাত্রায় ঝুঁকিপূর্ণ।’
‘তবে ইউক্রেনে আটকে থাকা খাদ্যশস্য ও ভোজ্যতেল আন্তর্জাতিক বাজারে নিয়ে আসতে কৃষ্ণ সাগর অঞ্চলের বন্দরগুলোতে রুশ বাহিনীর অবরোধ প্রত্যাহারের জন্য রাশিয়ার সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে ন্যাটোর বিভিন্ন সদস্যরাষ্ট্র। এসব সদস্যরাষ্ট্রের মধ্যে সবচেয়ে অগ্রগামী ভূমিকা রেখে চলেছে তুরস্ক।’
সূত্র : বিবিসি
এনটি