মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪ ।। ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ ।। ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :
মাদারীপুরে ‘প্রথম আলো’ ও ‘ডেইলি স্টার’ পোড়ালেন ছাত্র-জনতা ইউপি সদস্যকে হত্যা করতে এসে আগ্নেয়াস্ত্রসহ আটক ৩ চিন্ময়কে মুক্তি না দিলে বাংলাদেশ সীমান্ত অবরোধের হুমকি বিজেপির পিটিআইয়ের সমাবেশ ঠেকাতে পাকিস্তানে নামানো হলো সেনাবাহিনী ‘জাতীয় ছাত্র সংহতি সপ্তাহ’ ঘোষণা করল বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন সৌদির সেবা কোম্পানির সঙ্গে হজ এজেন্সির চুক্তির নির্দেশনা মহেশখালী থানার বিশেষ অভিযানে পরোয়ানাভুক্ত ১১ জন আসামি গ্রেফতার বৃষ্টির সময় কাবা প্রাঙ্গণে নামাজ আদায় ওমরা পালনকারীদের নিউ বসুন্ধরা রিয়েল এস্টেট গ্রাহকদের মূলধন ফেরত পাওয়ার দাবিতে সংবাদ সম্মেলন মাওলানা আতহার আলীকে বাদ দিয়ে জাতীয় ইতিহাস রচিত হতে পারে না: ধর্ম উপদেষ্টা

জার্মানির গির্জা থেকে বেরিয়ে এলো শিশুদের ওপর যৌন নিপীড়নের দীর্ঘ ইতিহাস

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আওয়ার ইসলাম ডেস্ক: জার্মানিতে ক্যাথলিক খ্রিস্টানদের গির্জায় যৌন নিপীড়নের ঘটনার তথ্য চলতি বছর প্রথম খবরে আসে জানুয়ারি মাসে। তখন জানা গিয়েছিল, মিউনিখ এলাকার গির্জাগুলোতে অতীতে বহু যৌন নিপীড়নের ঘটনা ঘটেছে এবং গির্জা কর্তৃপক্ষ সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের চিহ্নিত করে শাস্তি না দিয়ে বরং সত্য চাপা দেয়ার চেষ্টা করেছে।

সাবেক পোপ ষোড়শ বেনেডিক্টের বিরুদ্ধেও রয়েছে দোষীদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা না নেয়ার অভিযোগ। ১৯৭৭ থেকে ১৯৮২ সাল পর্যন্ত মিউনিখ এবং ফ্রাইজিং অঞ্চলে আর্চবিশপের দায়িত্ব পালন করা পোপ বেনেডিক্ট অবশ্য সে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

এর আগে ২০১৮ সালের আরেক গবেষণায় জানা যায়, ১৯৪৬ সাল থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত ক্যাথলিক গির্জায় কমপক্ষে এক হাজার ছয় শ‘ ধর্মযাজক শিশুদের ওপর যৌন নিপীড়ন চালিয়েছেন। মোট তিন হাজার ছয় শ‘ শিশুর যৌন নিপীড়নের শিকার হওয়ার তথ্য বেরিয়ে এসেছিল চার বছর আগের সেই গবেষণায়।

সোমবার প্রকাশিত গবেষণাপত্রে বলা হয়েছে, মুনস্টারের বিশপের এলাকায় আগে যেমনটি আশঙ্কা করা হয়েছিল, যৌন হয়রানি বা যৌন নিপীড়নের ব্যাপকতা তার চেয়ে অনেক বেশি। গবেষণাটি করেছেন মিউনিখ বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা। ১৯৪৫ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত মোট ৭৫ বছরের তথ্য সংগ্রহ এবং যাচাই করতে মোট দুই বছর সময় নিয়েছেন গবেষকরা।

২০১৩ সালে ভ্যাটিকানের দায়িত্ব পান ফ্রান্সিস। কিন্তু গির্জায় শিশুদের যৌন নিপীড়নের অভিযোগ তদন্তের কোনো উদ্যোগ তখন নেননি। চিলির গির্জায় যৌন নিপীড়নের অভিযোগ ওঠার পরেও বরং ধর্মযাজকদের কথা বিশ্বাস করে তখন নিষ্ক্রিয় ছিলেন তিনি। তবে তখন যে ভুল করেছিলেন তা ২০১৮ সালে স্বীকার করে ভবিষ্যতে সব ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করা হবে বলে জানান। ২০১৯ সালে গির্জায় যৌন নিপীড়নের বিরুদ্ধে সর্বাত্মক যুদ্ধ ঘোষণা করেন তিনি।

টানা দু‘ বছরের গবেষণা শেষে তারা নিশ্চিত, ওই ৭৫ বছরে জার্মানির ক্যাথলিক খ্রিস্টানদের উপাসনালয়ে মোট কমপক্ষে ১৯৬ জন যৌননিপীড়ক ধর্মযাজক ছিলেন, তাদের লালসার শিকার হয়েছে কমপক্ষে পাঁচ হাজার থেকে ছয় হাজার শিশু। যৌননিপীড়িতদের তিন চতুর্থাংশই ছিল ছেলেশিশু।

গবেষণা আরো বলছে, যৌন নিপীড়নের শিকার পাঁচ থেকে ছয় হাজার শিশুর মধ্যে অধিকাংশেরই বয়স ১০ থেকে ১৪-এর মধ্যে। গির্জা কর্তৃপক্ষ যে যৌন নিপীড়ক ধর্মযাজকদের বিচারের আওতায় আনতে কখনো তৎপর ছিলেন না তা সদ্য প্রকাশিত গবেষণাপত্রের বর্ণনাতেও উঠে এসেছে। মিউনিখ বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা বলেছেন, গির্জা কর্তৃপক্ষ যৌন নিপীড়কদের কঠোর শাস্তি দেয়া তো দূরের কথা, তাদের বদলিও করেনি।

গবেষকরা মনে করেন, যোগ্য নেতৃত্বের ভয়াবহ সঙ্কটের কারণেই ধর্মালয়ে যৌন নিপীড়নের সব ঘটনাই প্রকারান্তরে চাপা দেয়ার চেষ্টা হয়েছে।

১৯৪৭ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত মুনস্টারের বিশপ এলাকার নেতৃত্বে ছিলেন মিশায়েল কেলার, ইয়োসেফ হ্যোফনার, হাইনরিশ টেনহুমবার্গ এবং রাইনাড লেটমান। তাদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধেই যৌননিপীড়কদের বিচারের আওতায় না আনার অভিযোগ রয়েছে।

সূত্র : ডয়েচে ভেলে

এনটি


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ