সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪ ।। ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ ।। ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬


সমাজে প্রচলিত এটি হাদিস নয়

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আওয়ার ইসলাম ডেস্ক: ফিরিশতাদের দরূদ ও তার ফযীলত

কিছু মানুষের মাঝে ‘ফিরিশতাদের দরূদ’ নামে একটি দুআ প্রচলিত আছে- এক ব্যক্তি নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর খিদমতে উপস্থিত হয়ে আরয করল, ইয়া রাসূলাল্লাহ! দুনিয়া আমার থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে এবং আমার নিকট আর কিছুই অবশিষ্ট নেই। তখন নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তুমি ফিরিশতাদের দরূদ এবং মানবজাতির এই তাসবীহ দ্বারা কেন কল্যাণ অর্জন কর না, যার মাধ্যমে মানুষকে রিযিক প্রদান করা হয়? লোকটি নিবেদন করল, ইয়া রাসূলাল্লাহ! তা কী? তিনি এরশাদ করেন, ‘তুমি সুবহে সাদিক হতে ফজরের নামায আদায় করা পর্যন্ত একশত বার-

سُبْحَانَ اللهِ وَبِحَمْدِه سُبْحَانَ اللهِ الْعَظِيم. পাঠ করবে। দেখবে, দুনিয়া তোমার পায়ে লুটিয়ে পড়বে। এর প্রত্যেকটি শব্দ দ্বারা আল্লাহ তাআলা একজন করে ফিরিশতা সৃষ্টি করবেন, যারা কিয়ামত পর্যন্ত তাঁর তাসবীহ পাঠ করতে থাকবে এবং তুমি এর সওয়াব পেতে থাকবে।

বর্ণনাটি ইহইয়াউ উলূমিদ্দীন গ্রন্থে ‘যিকিরের ফযীলত’ অধ্যায়ে সনদবিহীন উল্লেখ করা হয়েছে। কিন্তু এটি একটি ভিত্তিহীন বর্ণনা। হাদীস বিশারদগণ এই বর্ণনাটিকে মাওযু ও বাতিল বলেছেন। রিজাল শাস্ত্রের একাধিক কিতাবে ইসহাক ইবনে ইবরাহীম তাবারীর সূত্রে বর্ণনাটি উল্লেখ করা হয়েছে।

ইমাম ইবনে হিব্বান রাহ. ‘কিতাবুল মাজরূহীন’ গ্রন্থে বর্ণনাটি উল্লেখ করে বলেছেন, এই হাদীসটি ‘মওযু’, এর কোনো ভিত্তি নেই। (কিতাবুল মাজরূহীন ১/১৪৯)

ইবনে হাজার রাহ. লিসানুল মীযানে ইসহাক ইবনে ইবরাহীমের আলোচনায় বর্ণনাটি উল্লেখ করে বলেছেন-

وهذا باطل. এটি একটি বাতিল বর্ণনা। -লিসানুল মীযান ১/৩৪৪

আরো দ্রষ্টব্য : আল লাআলিল মাসনূআ ২/২৮৭; তানযীহুশ শারীআ ২/৩১৮ অবশ্য আলোচ্য বর্ণনা ও তার ফযীলত প্রমাণিত না হলেও এতে যে দুআ-যিকির উল্লেখ হয়েছে তা সহীহ। এসব যিকির বিভিন্ন হাদীস দ্বারা প্রমাণিত এবং একেকটির একাধিক ফযীলত হাদীস শরীফে এসেছে।

আর سُبْحَانَ اللهِ وَبِحَمْدِه এই তাসবীহের সাথে রিযিকের সম্পর্কও রয়েছে; যা সহীহ বর্ণনায় পাওয়া যায়। মুসনাদে আহমাদে বিশুদ্ধ সূত্রে বর্ণিত হয়েছে, রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, যখন নূহ আলাইহিস সালামের মৃত্যুর সময় ঘনিয়ে এল তিনি তাঁর ছেলেদেরকে বললেন, তোমাদেরকে দুটি উপদেশ দিচ্ছি :

১. لَا إِلَهَ إِلّا اللهُ পাঠের নির্দেশ দিচ্ছি। কেননা সাত আসমান সাত যমীন যদি এক পাল্লায় রাখা হয় আর অন্য পাল্লায় لَا إِلَهَ إِلّا اللهُ রাখা হয় তাহলে لَا إِلَهَ إِلّا اللهُ -এর পাল্লা ভারি হবে।

২. سُبْحَانَ اللهِ وَبِحَمْدِه পাঠ করবে। কেননা তা প্রত্যেক বস্তুর সালাত ও তাসবীহ এবং এর দ্বারা সৃষ্টিজীবকে রিযিক পৌঁছানো হয়। -মুসনাদে আহমাদ, হাদীস ৭১০১, ৬৫৮৩

এছাড়া সহীহ বুখারীতে বর্ণিত হয়েছে, দুটি কালেমা আল্লাহ তাআলার নিকট অতি প্রিয়, পড়তে খুব সহজ, মীযানের পাল্লায় অনেক ভারী। তা হল-

سُبْحَانَ اللهِ وَبِحَمْدِه سُبْحَانَ اللهِ الْعَظِيم. -সহীহ বুখারী, হাদীস ৭৫৬৩

-এটি


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ