মুফতি কাউসার আইয়ুব।। ভারতের ক্ষমতাশীন দল বিজেপির মুখপাত্র নূপুর শর্মা ও দিল্লি শাখার গণমাধ্যম প্রধান নবীন কুমার জিন্দাল মহানবী মুহাম্মদ সা. ও হযরত আয়েশা রা. কে নিয়ে অবমাননাকর ও কুরুচিপূর্ণ মন্তব্যের প্রতিবাদে মুগদা থানা ইমাম-উলামা পরিষদের পক্ষ থেকে বিক্ষোভ মিছিল করা হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানী ঢাকার মুগদা মানিকনগরে মুগদা থানা ইমাম উলামা পরিষদের সিনিয়র সহ-সভাপতি, জামিয়া ইসলামিয়া জহিরুদ্দিন আহমাদ ইসলামিয়া মাদরাসার মুহতামিম হাফেজ মাওলানা মুফতি যােবায়ের আহমাদের নেতৃত্বে মুফতি মিজানুর রহমান নদভীর সভাপতিত্বে এক বিরাট বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
বিক্ষোভের লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, অত্যন্ত কষ্ট ও দুঃখ ভারাক্রান্ত মন নিয়ে আপনাদের জানাতে। হচ্ছে যে, সম্প্রতি ভারতের ক্ষমতাশীন দল বিজেপির মুখপাত্র নূপুর শর্মা ও দিল্লি শাখার গণমাধ্যম প্রধান নবীন কুমার জিন্দাল মহানবী মুহাম্মদ সা. ও হযরত আয়েশা (রা.) কে নিয়ে অবমাননাকর ও কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করেছে। এতে কোটি কোটি মুসলমানদের হৃদয়ে রক্ত ক্ষরণ সৃষ্টি হয়েছে।
পৃথিবীর প্রান্তে প্রান্তে প্রতিটি মুসলমানের হৃদয়ের মনিকোঠায় যার স্থান, মুসলমানদের ঈমান ও ইসলামের কেন্দ্রবিন্দু যিনি, যাকে ভালবাসলেই মুমিন হওয়া যায়, যার প্রতি ঘৃণা পােষণ করলে ইসলাম থেকে বের হয়ে যায়, সেই রহমাতুল্লিল আলামীন ও তার জীবনসঙ্গীনী, মুসলিম মিল্লাতের শ্রেষ্ঠ রমনী, উম্মুল মুমিনীন, যার পবিত্রতার ঘােষণা দিয়ে কুরআনে আয়াত নাযিল হয়েছে এমন মর্যাদাসম্পন্ন ব্যক্তির ব্যাপারে এই ধরণের অশােভন উক্তি কখনােই মেনে নেওয়া যায় না।
লিখিত বক্তব্যে আরো বলা হয়, আমরা এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই ও তাদের প্রতি চরম ঘৃণা প্রকাশ করছি। এ ঘটনায় আরব বিশ্বসহ সারা পৃথিবীতে প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে। যদিও মুসলমানদের তীব্র প্রতিবাদের মুখে ভারত সরকার নূপুর শর্মাকে সাময়িক বরখাস্ত এবং নবীন কুমার জিন্দালকে বহিষ্কার করেছে। কিন্তু বারবার এই ঘটনাগুলাে ইসলাম ও মুসলমানদের প্রতি কেবলমাত্র তাদের চরম বিদ্বেষ ও ঘৃণাই প্রকাশ করে থাকে। আমরা গভীরভাবে লক্ষ্য করছি যে, আবহমান কাল থেকেই। ইসলাম ও মুসলমানদের ক্ষতি করার জন্য ইসলাম বিদ্বেষী শক্তি বিশেষ করে কাফেরমুশরিক, নাস্তিক-মুরতাদরা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করেছে। সে সূত্র ধরে তারা চিন্তা-চেতনা ও বিশ্বাসের দিক দিয়ে দুর্বল করার জন্য মুসলমানদের সর্বোচ্চ শ্রদ্ধা, আস্থা ও আবেগের জায়গাগুলােতে আঘাত করেছে। দিন দিন তার মাত্রা বেড়েই চলছে। সম্প্রতি ভারতের ঘটনা তার জলজ্যান্ত প্রমাণ। আমাদের হৃদয়ের স্পন্দন প্রিয় নবীজী ও আম্মাজান হযরত আয়েশা রা. -এর ব্যাপারে বাজে মন্তব্য করা হবে এবং অশ্রাব্য ও কুরুচিপূর্ণ ভাষায় গালি দেওয়া হবে; রাসূলের একজন নগণ্য উম্মত হিসেবে আমাদের কোনাে করণীয় নেই? আমাদের ঈমানের পাওয়ার কি নেই? ঈমানের ত্যাজ কি স্তমিত হয়ে গেছে? আমরা কি পারি না বিখ্যাত সাহাবী মুহাম্মদ বিন মাসলামার মত শাতিমে রাসূলের দাঁতভাঙ্গা জবাব দিতে? কেন এভাবে আমাদের নবীজীর শান ও মানের উপর আঘাত হানা হবে?
এর উচিত জবাব আমাদের দিতেই হবে। বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আবেদন জানাই জাতীয় সংসদে তাদের এই হীন কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে নিন্দা প্রস্তাব পাশ করে রাষ্ট্রীয়ভাবে ভারতের সকল পণ্য বর্জনের ঘােষণা দিবেন। মুসল্লী ভাইদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলছি, আসুন, আমাদের সাধ্যের সবটুকু সামর্থ্য ঢেলে দিয়ে আমরা প্রতিবাদের ঝড় তুলি, আওয়াজ তুলি, তীব্রভাবে এর নিন্দা জানাই এবং আমাদের সমর্থ্যানুযায়ী ভারতের পণ্য বর্জন করি।
আমাদের কামনা, এই সকল দূরাচার পাপাত্মাদের উপর আল্লাহর লানত ও গযব বর্ষিত হােক এবং নবীর সকল দুশমনরা নিপাত যাক।
উক্ত সভায় বক্তব্য রাখেন পরিষদের সম্মানিত উপদেষ্টা মাওলানা আব্দুর রহমান, মাওলানা নূর বখস মজুমদার, মাওলানা কিফায়াতুল্লাহ কাশফী, মাওলানা আসাদুল্লাহ, মুফতি আব্দুল কাদের, মুফতি নুর মােহাম্মদ আজিজি, পরিষদের সেক্রেটারী মুফতি শফিক মাযহারী, যুগ্ম সেক্রেটারী মুফতি আরাফাত হুসাইন, মাওলানা রাশেদ ইমাম, মুফতি ফয়জুল্লাহ ও মুফতি হান্নান নােমানী প্রমুখ।
-ওআই/আবদুল্লাহ তামিম