সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪ ।। ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ ।। ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬


পাকিস্তান কি সত্যিই ইসরায়েলকে স্বীকৃতি দিতে ইচ্ছুক?

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আওয়ার ইসলাম ডেস্ক: সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের এক দাবির প্রেক্ষিতে পাকিস্তানের রাজনীতিতে নতুন নাটকের অবতরণ হয়েছে। রোববার (২৯ মে) ইমরান খান অভিযোগ করে বলেন, ইসরায়েলকে স্বীকৃতি দিতে যাচ্ছে শাহবাজ শরিফের নেতৃত্বাধীন দেশটির বর্তমান জোট সরকার।

ইসরায়েলের প্রেসিডেন্ট আইজ্যাক হারজগের এক বিবৃতির প্রেক্ষিতে ইমরান খান এ অভিযোগ তুলেন। বিবৃতিতে হারজগ জানান, সম্প্রতি পাকিস্তানি-আমেরিকান একটি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে তার।

পাকিস্তান কর্তৃক ইসরায়েলকে স্বীকৃতি প্রদানের জল্পনা-কল্পনার বিষয়টি এবারই প্রথম নয়। প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন সময়েও অনুরূপ প্রসঙ্গ তুলে পাকিস্তানের রাজনীতিতে তুমুল বিতর্কের জন্ম দিয়েছিলেন ইমরান খান।

২০২০ সালের নভেম্বরে পাকিস্তানের বেসরকারি জিএনএন টিভি চ্যানেলে দীর্ঘ এক সাক্ষাৎকারে ইমরান দাবি করেছিলেন, ইসরায়েলের সাথে সম্পর্ক স্থাপনে পাকিস্তানের ওপর চাপ প্রয়োগ করছে যুক্তরাষ্ট্র। যুক্তরাষ্ট্র বাদেও মধ্যপ্রাচ্যের একটি মুসলিম দেশের দিকে অভিযোগের আঙুল তুলেছিলেন তিনি।

‘বিতর্কের’ সূত্রপাত

ইসরায়েলকে স্বীকৃতি প্রদানের বিষয়টি বার বার পাকিস্তানের রাজনীতির টেবিলে ফিরে আসা নিছক কোনো বিতর্ক নয়। ২০০৫ সালে ইসরায়েলকে স্বীকৃতি প্রদানের বিষয়টি প্রথম আলোচনায় আসে।

পাকিস্তানের সাবেক প্রেসিডেন্ট জেনারেল পারভেজ মোশারফের ইচ্ছায় তৎকালীন ইসরায়েলি পররাষ্ট্রমন্ত্রী সিলভান শালোমের সাথে বৈঠক করেন পাকিস্তানের সে সময়কার পররাষ্ট্রমন্ত্রী খুরশিদ মেহমুদ কাসুরি। চীর শত্রু ভারতের সঙ্গে ইসরায়েলের সম্পর্ক স্থাপনের প্রাক্কালে এ বৈঠকটিকে পাকিস্তানের কৌশলগত রাজনৈতিক তৎপরতা হিসেবে মন্তব্য করেছিলেন বিশ্লেষকরা।

তবে দেশটির জনমতের বিরোধিতায় বৈঠক পর্যন্তই সীমাবদ্ধ ছিল পাকিস্তান-ইসরায়েল সম্পর্ক। আর ইসরায়েলে নিরাপত্তা বিষয়ক গবেষণা সংস্থা জেরুজালেম ইন্সটিটিউট অব স্ট্রাটেজি অ্যান্ড সিকিউরিটি‘র (জেআইএসএস) গবেষক ড. জনাথন স্পায়ারের মতে, ভারতের সাথে ঘনিষ্ঠতায় ইসরায়েল-পাকিস্তান সম্পর্ক নতুন কোনো মাত্রা যুক্ত হওয়ার সম্ভাবনা নেই।

ইসরায়েল কী ভাবছে?

বিশ্বজুড়ে মিত্রতার সম্পর্কের আড়ালে ইসরায়েলকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি আদায় তেল আবিবের একটি গুরুত্বপূর্ণ কূটনীতি। মধ্যপ্রাচ্যে যুগের পর যুগ যে নীতি গ্রহণ করে আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করেছে দেশটি, অনুরূপ নীতি আরব বিশ্বের বাইরে নিয়ে যেতে চায় তারা।

সর্বশেষ ২০১৮ সালে ইসরায়েলের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়াহু ভারত সফরে পাকিস্তানের সাথে সম্পর্ক স্থাপনে আগ্রহ প্রকাশ করেছিলেন। পাকিস্তানের সাথে ইসরায়েলের কোন শত্রুতা নেই বলে মন্তব্য করেছিলেন তিনি।

তার পূর্বসূরি সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী সিলভান শালোমও পাকিস্তানের পত্রিকা ডনের সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, ইসরায়েলের ৫৮ বছরের ইতিহাসে পাকিস্তান কখোনই শত্রু ছিল না।

তবে জেআইএসএসের গবেষক ড. জনাথন স্পায়ার বলছেন, পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপনের আগ্রহ আগের মত নেই তেল আবিবের। ভারতকে অতিক্রম করে ইসরায়েল কোন পদক্ষেপ গ্রহণে আগ্রহী হবে না।

স্পস্টতই পাকিস্তান-ইসরায়েল সম্পর্কে উৎসাহী পক্ষটির নাম যুক্তরাষ্ট্র। দুই বছর আগেই সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান যেমনটি বলেছিলেন, ‘‘আমেরিকায় ইসরায়েলের গভীর প্রভাব রয়েছে যা ডোনাল্ড ট্রাম্পের সময় আরো বেড়েছে ... চাপটা সেখান থেকেই।’’

সূত্র: বিবিসি।

এনটি


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ