শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪ ।। ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ ।। ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :
কাল যাত্রাবাড়ী মাদরাসায় মজলিসে দাওয়াতুল হকের ইজতেমা শেখ হাসিনা ভারতে বসে দেশের বিরুদ্ধে চক্রান্ত করছেন: মজলিস মহাসচিব ডেঙ্গুতে এক সপ্তাহে ৩১ জনের মৃত্যু, আক্রান্ত ৬২৩০ মসজিদে নববীর আদলে হবে আন্দরকিল্লা শাহী জামে মসজিদ: ধর্ম উপদেষ্টা খাগড়াছড়ি প্রেস ক্লাবের সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত নতুন নির্বাচন কমিশনকে বিগত কমিশন থেকে শিক্ষা নিতে হবে: মুফতী ফয়জুল করীম লালপুরে যুবলীগ নেতার বিরুদ্ধে জমি দখল ও বাড়ি ভাংচুরের অভিযোগ জনতার চেয়ারম্যান সৈয়দ তালহাকে সুনামগঞ্জ ৩ আসনে জমিয়তের প্রার্থী ঘোষণা কুরআন-হাদিসের ভিত্তিতেই হতে হবে সংস্কার: বায়তুল মোকাররমের খতিব ইসলামী সঙ্গীত সম্রাট আইনুদ্দীন আল আজাদ রহ.-এর বাবার ইন্তেকাল

শিক্ষা পরামর্শ: ‘হাতের লেখা সুন্দরের জন্য অভিজ্ঞ কাতিবের নেগরানিতে মশক প্রয়োজন’

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

প্রশ্ন:

জনাব, আমরা কয়েকজন নাহবেমীর জামাতের ছাত্র। বেফাকে ভাল ফলাফল করা এবং বাংলা, আরবী হাতের লেখা আকর্ষণীয় করার জন্য কিছু পরামর্শ ও কানুন আপনার নিকট জানতে আগ্রহী। হাতের লেখা সুন্দর করা সম্পর্কে কোন কিতাব বেরিয়ে থাকলে তাও জানতে আগ্রহী।

এ’রাব দিয়ে কিতাব পড়ার যোগ্যতা কীভাবে অর্জন করা যায়, সে সম্পর্কেও জানতে চাই। পরিশেষে আমাদের সার্বিক জীবন সুষ্ঠুভাবে পরিচালিত হওয়ার ব্যাপারে আপনার একান্ত দুআ কামনা করছি।

উত্তর:

একবার হযরত খতীব সাহেব [রহ. সাবেক খতীব, বায়তুল মুকাররম ঢাকা, হযরত মাওলানা উবায়দুল হক রহ. ১৪২৮ হিজরী] মারকাযুদ দাওয়াহ আলইসলামিয়া ঢাকায় তাশরীফ এনেছিলেন। দীর্ঘ বয়ানের শেষের দিকে তিনি যে কথা গুরুত্বের সাথে বলেছেন তা এই যে, ‘‘মানতিক শাস্ত্রে ইনসানের যে পরিচিতি দেওয়া হয়েছে ‘হাইওয়ানে নাতিক’ তার মধ্যে সীমাবদ্ধ না থেকে ‘হাইওয়ানে কাতিব’ হওয়ারও চেষ্টা করবে। আর লেখার ক্ষেত্রে সুন্দর হস্তলিপি, বানান শুদ্ধতা এবং ভাষার বিশুদ্ধতা এই তিন বিষয়ে মনোযোগী হবে।’’

সুন্দর হস্তলিপির মূল কথা হল অভিজ্ঞ কাতিবের তত্ত্বাবধানে মশক করা। এ বিষয়ে অনেক কিতাবও রয়েছে, কিন্তু শুধু কিতাব সামনে রাখা যথেষ্ট নয়। অভিজ্ঞ কাতিবের নেগরানিতে মশক করা এবং অধ্যাবসায়ের সাথে নিয়মতান্ত্রিক মেহনত জারি রাখা অবশ্য কর্তব্য। প্রথমে হরফ এরপর শব্দ এরপর বাক্য এভাবে পর্যায়ক্রমিক অনুশীলন অব্যাহত রাখলে ইনশাআল্লাহ ফায়েদা হবে।

এরপরও দু’একটি কিতাবের নাম জানিয়ে দেওয়ার জন্য স্নেহের মৌলভী হামীদুলাহ সিলেটীকে ফোন করেছিলাম। তিনি এক সময় এ বিষয়ে মেহনত করেছেন। তার কাছে এ বিষয়ের যে কিতাবগুলো বিদ্যমান ছিল তার প্রায় সবগুলোর নাম আমাকে বলেছেন। কিছু কিতাবের নাম উল্লেখ করে দিচ্ছি :

১. নিজে আরবী লেখি [আরবী…] মাওলানা মুহাম্মদ বেলাল, যাত্রাবাড়ি মাদরাসা, ঢাকা।

২. ‘আশরাফুত তাহরীর’ মুহাম্মদ গরীবুল্লাহ মাসরুর ইসলামাবাদী।

৩. ‘খততে রুক‘আ কেউ আওর ক্যায়সে সীখেঁ’ হযরত মাওলানা নূরে আলম খলীল আমীনী, দারুল উলূম দেওবন্দ।

৪. হাদিত তলাবা ইলা খাততির রুকআ’ [আরবী-বাংলা-জাদীদ লেখা নির্দেশনা] মাওলানা রফীকুল হক মাদানী, মারকাযুল ফিকরিল ইসলামী, বসুন্ধরা।

উপরোক্ত কিতাবগুলো এবং এ ধরনের আরও কিতাব আমাদের দেশের বড় কুতুবখানাগুলোতে পাওয়া যাবে। এছাড়া হাসান কাসেম কৃত বিভিন্ন আরবী খতের একটি সিরিজ দারুল কলম বৈরুত থেকে প্রকাশিত হয়েছে। যা ‘সিলসিলাতুল ফুনুনিল আরাবিয়্যা আলইসলামিয়া’ নামে পাওয়া যায়। তার ‘আলখাততুল আরাবী আলকুফী’ পুস্তিকা রয়েছে। এ বিষয়ে কিছু আরবী পুস্তিকা মাকতাবাতুল আযহার, বাড্ডায় পাওয়া যেতে পারে।

সুন্দর হস্তলিপির অনুশীলনের ক্ষেত্রে স্পষ্ট করে লেখা অতি গুরুত্বপূর্ণ। এজন্য অনুশীলনের সময় এ বিষয়েও মনোযোগ দেওয়া জরুরি। এ প্রসঙ্গে তিনটি বিষয় বিশেষ মনোযোগের দাবিদার।

ক. হরফের গঠন ও নুকতা পরিষ্কার করে লেখা এবং যে অক্ষরগুলো ভিন্নভাবে লিখতে হয় সেগুলো সংযুক্ত না করা।

খ. প্রত্যেক হরফ ‘রাসমুল খত’ অনুযায়ী লেখা। যথা ‘হামযা’র রাসমুল খত বিভিন্ন অবস্থায় বিভিন্ন রকম। অতএব কোন অবস্থায় রাসমুল খত কী তা অনুশীলনের মাধ্যমে আত্মস্থ করে নেওয়া উচিত।

রাসমুল খত বিষয়ে আল্লামা আবদুস সালাম হারুন [রহ.] কৃত ‘কাওয়াইদুল ইমলা’ পাঠ করলে উপকৃত হওয়া যাবে। সেটা পাওয়া না গেলে কিংবা প্রাথমিক অবস্থায় কঠিন বোধ হলে মাওলানা সাঈদ মিসবাহ কৃত ‘কাওয়াইদুল ইমলা’ অধ্যয়ন করা যায়। এটি মুদ্রিত ও প্রকাশিত। মুহাম্মদপুরে তাঁর মাদরাসায় পাওয়া যেতে পারে।

গ. যতিচিহ্ন ব্যবহার করা। এর মাধ্যমে রচনা পাঠ ও অনুধাবন সহজ হয়। এ বিষয়ে প্রসিদ্ধ পুস্তিকা আহমাদ যকী বাশা কৃত ‘আততারকীম ওয়া আলামাতুহ’। তবে উত্তম হল, কোনো উস্তাদের নিকট থেকে যতিচিহ্ন ও তার প্রয়োগ ভালোভাবে বুঝে ডায়রিতে নোট করে নেওয়া। এরপর লেখার সময় মনোযোগের সাথে প্রয়োগ করা। মাওলানা সাঈদ মিসবাহ [যীদা মাজদুহুম]-এর পুস্তিকাতেও যতিচিহ্ন সম্পর্কে আলোচনা রয়েছে।

বিশুদ্ধ পঠনের যোগ্যতা অর্জনের জন্য আরবী সাহিত্যের প্রাথমিক কিতাবগুলো বারবার অধ্যয়ন করা উচিত। নাহবেমীর বা এ পর্যায়ের কোনো ভালো কিতাব থেকে কাওয়ায়েদ বুঝে নিয়ে অনুশীলনের আঙ্গিকে বারবার পড়া দ্বারা এ যোগ্যতা পাকা হতে থাকবে।

মাসিক আল কাউসারের শিক্ষা পরামর্শ বিভাগ থেকে

এনটি


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ