মুফতি সাদেকুর রহমান: কী করলে এতেকাফ ভাঙ্গে আর কী করলে ভাঙ্গে না এব্যাপারে মূলনীতি হল ,দুই অবস্থায় এতেকাফকারী মসজিদ থেকে বের হলে এতেকাফ ভঙ্গ হয়না।যথা
এক,মানবীয় প্রয়োজন,যা পুরা করা ব্যাতীত মানুষ থাকতে পারেনা এবং তা মসজিদে পুরা করা যায়না।যেমন পেশাব-পায়খানা করা,এরপর পবিত্রতা হাসিল করা ও ফরজ গোসল করা।
সুতরাং এতেকাফকারী পেশাব-পায়খানার করার জন্য অথবা পেশাব- পায়খানার পর ওযু করার জন্য কিছুক্ষণ অবস্থান করলে অথবা ওযু না থাকা অবস্থায় শুধু ওযু করার জন্য মসজিদ থেকে বের হলে এতেকাফ ভঙ্গ হবে না।
এমনিভাবে মসজিদের ভেতর স্বপ্নদোষের কারনে গোসল ফরজ হলে গোসলের উদ্দেশ্যে মসজিদ থেকে বের হলে এতেকাফ ভঙ্গ হবে না, যদি মসজিদে গোসলের ব্যবস্থা না থাকে।
দুই, শরয়ী প্রয়োজন: যেমন জুমার নামাজ ও আজান।
সুতরাং পাঞ্জেগানা মসজিদে এতেকাফকারী জুমার মসজিদে জুমার নামাযের উদ্দেশ্য গেলে এতেকাফ ভঙ্গ হবে না। অবশ্যএক্ষেত্রে ফুক্বাহায়ে কেরাম লিখেন,এত টুকু সময় বাকি থাকতে মসজিদ থেকে বের হবে যার মধ্যে সে জুমা মসজিদের পৌঁছে তাহিয়্যাতুল মসজিদ দুই রাকাত,জুমার পূর্বে চার রাকাত সুন্নত এবং পূর্ণ খুতবা শুনতে পারে ।
নামাজ আদায়ের পর চার রাকাত মতান্তরে ছয় ছয় রাকাত সুন্নত পড়ে এতেকাফের স্থানে ফিরে আসবে।
জুমার নামাজের পর সুন্নাত আদায় করে আরো কিছু সময় যদি অবস্থান করে অথবা সেখানেই এতেকাফ পূর্ণ করে নেয় তানহলে তার এতেকাফ ভঙ্গ হবে না বরং সহিহ হয়ে যাবে। তবে এরূপ করা উচিত নয়।কারণ উত্তম হলো যেখানে শুরু করেছে সেখানেই শেষ করা।ফাতাওয়া শামি-৩/ ৪৩৫-৪৩৭,ফাতাওয়া আলমগীরী ১/২১২
সুতরাং নিম্নোক্ত বর্ণিত সূরতসমূহে এতেকাফ ভেঙ্গে যাবে * পাঠদান, আলোচনা কিংবা কারো সাথে সাক্ষাত করার উদেশ্যে মসজিদ থেকে বের হলে।
* খতমে কুরআন শুনা কিংবা শুনানোর জন্য অন্যত্র গেলে। * মুয়াজ্জিন এতেকাফ অবস্থায় ওযুখানা পরিষ্কারের জন্য, মসজিদের বাহিরে থাকা টাংকি পরিষ্কার বা তাতে পানি দেওয়ার জন্য মসজিদ থেকে বের হলে।
* যেসকল কাজের জন্য মসজিদ থেকে বের হওয়া জায়েয সেসব কাজ শেষ করার পর কোন কারণ ছাড়াই বিলম্ব করলে।
* অপ্রয়োজনীয় কাজে মসজিদ থেকে বের হলে, সামান্য সময়ের জন্য হোক কিংবা বেশি সময়ের জন্য হোক, ভুলে হোক বা ইচ্ছায় হোক
* এতেকাফকারীর রোজা ভেঙ্গে গেলে অথবা কোন কারণে রোজা না রাখলে ।কেননা ওয়াজিব এবং সুন্নত এতেকাফ সহিহ হওয়ার জন্য রোজা রাখা শর্ত।
* এতেকাফ অবস্থায় সহবাস করলে। * এতেকাফ অবস্থায় কামভাবের সাথে স্ত্রীকে চুম্বন বা স্পর্শ করার কারণে বীর্যপাত হলে।
আর বীর্যপাত না হলে এতেকাফ বাতিল হবে না। তবে এসবের কারণে এতেকাফ ত্রুটিযুক্ত হবে। জাওয়াহিরুল ফাতাওয়া ১/৩৩-৩৪, ফাতাওয়া আলমগিরি ১/২০২, ফাতাওয়া শামী ৩/৩৩৫-৩৩৮
এতেকাফ অবস্থায় গোসল করা যাবে কি? রমজানের শেষ দশকে এতেকাফকারীর জন্য ফরজ গোসল ছাড়া গরম ও গায়ের দুর্গন্ধের কারণে গোসল করা জায়েয নেই।
তবে যদি অতি প্রয়োজন হয় এবং মসজিদে পানি না পড়ার মত সুব্যবস্থা থাকে তাহলে মসজিদেই গোসল করবে অথবা ভিজা গামছা দিয়ে শরীর মুছে ফেলবে। অবশ্য ইস্তেন্জা করতে গিয়ে ওযু পরিমাণ স্বল্প সময়ের মধ্যে সাবান ইত্যাদি ছাড়া স্বাভাবিক গোসল করতেও কোন অসুবিধা নেই। রদ্দুল মুহতার ২/৪৪০ আহসানুল ফাতওয়া ৪/৫১৫
-এটি