কাউসার লাবীব: লাউডস্পিকার ব্যবহার নিয়ে সৃষ্ট গোলযোগ ও সিএম যোগীর আদেশের পর ভারতের উত্তর প্রদেশের নয়ডায় পুলিশ ২৬৫টি মসজিদ ও ৬০২টি মন্দিরে নোটিশ জারি করেছে।
পুলিশ কমিশনার অলোক সিংয়ের নির্দেশে পুলিশ সদস্যরা মন্দির ও মসজিদ পরিদর্শন করেছেন। এ সময় জারি করা নির্দেশনায় দেখা যায় তারা সব ক্ষেত্রে লাউডস্পিকার ব্যবহারের বিষয়ে জারি করা নির্দেশাবলি অনুসরণ করতে বলেছেন।
জানা যায়, গৌতম বুদ্ধ নগর পুলিশ কমিশনার স্থানীয় ৬২১টি মন্দিরের মধ্যে ৬০২টি, ২৬৮টি মসজিদের মধ্যে ২৬৫টি এবং অন্যান্য ১৬টি ধর্মীয় স্থাপনার ধর্মীয় নেতা ও কমিটিকে নোটিশ প্রদান করেছে। এবং শব্দদূষণের বিষয়ে হাইকোর্টের নির্দেশনা মেনে চলার বিষয়েও সতর্ক করা হয়েছে।
এদিকে নোটিশে আরো বলা হয়, ‘পূজায় বা অন্যান্ন অনুুষ্ঠানে লাউড স্পিকার বা ডিজে বাজলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যেখানে গান বাজবে তার বাইরে কোনো শব্দ যেতে পারবে না।’ এ লক্ষ্যে নয়ডা পুলিশ ২১৭টি বার্ট হাউসের মধ্যে ১৭৫টি ডিজে অপারেটরকে নোটিশ প্রদান করেছে।
মিছিল বা শুভ যাত্রা বের করতে হলে দিতে হবে হলফনামা:
এখন নয়ডায় ধর্মীয় মিছিল বা শুভ যাত্রা বের করার আগে শপথ নিতে হবে। এতে আয়োজকরা স্পষ্ট জানিয়ে দেবেন যে, কর্মসূচিতে কোনো উসকানিমূলক বক্তব্য বা সহিংস বিক্ষোভ করা হবে না এবং এমনটি হলে তাদের বিরুদ্ধে বিধি মোতাবেক মামলা রুজু করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ইউপি সরকার এই নির্দেশ জারি করেছে:
ইউপি সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী, ‘মাইক ও সাউন্ড সিস্টেম ব্যবহার করা গেলেও সাউন্ড সিস্টেমের শব্দ যেন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের বাইরে না যায় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। লাউড স্পিকার ব্যবহার করে অন্য মানুষকে আঘাত করা যাবে না।’ এটাও বলা হয়েছে যে, নতুন জায়গায় মাইক্রোফোনের অনুমতি দেওয়া উচিত নয়। অনুমতি ছাড়া কোনো শুভযাত্রা বা ধর্মীয় শোভাযাত্রা বের করা যাবে না। অনুমতি দেওয়ার আগে শান্তি ও সম্প্রীতি বজায় রাখার বিষয়ে প্রশাসকের কাছ থেকে শপথ নেওয়ার কথাও জানানো হয়েছে। বলা হয়েছে, শুধুমাত্র ঐতিহ্যবাহী ধর্মীয় মিছিলের অনুমতি দেওয়া উচিত। অপ্রয়োজনীয় নতুন অনুষ্ঠানের অনুমতি দেওয়া উচিত নয়।
এদিকে মুসলিম ধর্মীয় নেতারাও যোগীর সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন। যোগীর নির্দেশকে স্বাগত জানাচ্ছে বিরোধীরাও। রাম নওমী এবং হনুমান জয়ন্তীতে অন্যান্য রাজ্যে সহিংসতার রিপোর্টের পরে, যোগী সরকার আসন্ন উত্সবগুলি নিয়ে আত্মতুষ্ট হতে চায় না। আইনশৃঙ্খলা জোরদার করতে সিএম যোগী ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে একটি পর্যালোচনা বৈঠক করেছেন। এসময় নির্দেশগুলো কঠোরভাবে পালনের নির্দেশনা দেয়া হয়।
অপরদিকে নয়ডা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা থেকে শুরু করে এডিজি পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টার মধ্যে নিজ নিজ এলাকার ধর্মীয় নেতা এবং সমাজের অন্যান্য বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে যোগাযোগ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পুলিশ কর্মকর্তাদের নিজ এলাকায় অবস্থান করে রাত্রিযাপন করতে বলা হয়েছে। ৪ মে পর্যন্ত সকল পুলিশ কর্মকর্তাদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। যারা ছুটিতে আছেন তাদের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ফিরে আসার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। স্পর্শকাতর এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করার কথা উঠেছে। ড্রোনকে পর্যবেক্ষণ করতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া পুলিশকে প্রতিদিন টহল দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সূত্র: দেওবন্দ টাইম্স
-কেএল