মুযযাম্মিল হক উমায়ের।।
১. হজরত সুফিয়ান রাজিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বলেন। আমি হুজুর সাল্লাল্লাহু তায়ালা আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলি, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আপনি আমাকে ইসলামের এমন একটি বিষয় জানিয়ে দিন যে বিষয়ে আপনার পর আর কারো কাছে জানতে হবে না।
উত্তরে হুজুর সাল্লাল্লাহু তায়ালা আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, তুমি আল্লাহ তায়ালার উপর ঈমান নিয়ে আসো। এবং এর উপর অটল—অনঢ় থাকো।
তারপর আমি বলি, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমি কোন জিনিস থেকে বেঁচে চলবো? উত্তরে হুজুর সাল্লাল্লাহু তায়ালা আলাইহি ওয়া সাল্লাম জিহ্বার দিকে ইশারা করেন। অর্থাৎ তিনি বুঝাতে চেয়েছেন তুমি জবানের বাড়াবাড়ি থেকে বেঁচে থাকো।
২. হজরত উকবা বিন আমর রাজিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বলেন। আমি হুজুর সাল্লাল্লাহু তায়ালা আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে মুক্তির উপায় সম্পর্কে জানতে চাই। উত্তরে তিনি ইরশাদ করেন, أَمْلِكْ عَلَيْكَ لِسَانَكَ، وَلْيَسَعْكَ بَيْتُكَ، وَابْكِ عَلَى خَطِيئَتِكَ
— তুমি তোমার জিহ্বাকে নিয়ন্ত্রণ করো। তোমার ঘর যেনো তোমার জন্য যতেষ্ট হয়। আর তোমার গুনাহের জন্য কান্না করো।
৩. হজরত সাহল বিন সাআদ রাজিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বর্ণনা করেন। হুজুর সাল্লাল্লাহু তায়ালা আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, مَنْ يَضْمَنْ لِي مَا بَيْنَ لَحْيَيْهِ وَمَا بَيْنَ رِجْلَيْهِ أَضْمَنْ لَهُ الجَنَّةَ যে ব্যক্তি আমার জন্য তার দুই ঠেঁাটের মধ্যবর্তী (অর্থাৎ, জিহ্বা) ও দুই পায়ের মধ্যবর্তী (অর্থাৎ, লজ্জাস্থান) অঙ্গের জিম্মাদারী নিবে, আমি তাকে জান্নাতে নেওয়ার জিম্মাদারী নিবো।
৪. হজরত আবু হুরায়রা রাজিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বর্ণনা করেন। হুজুর সাল্লাল্লাহু তায়ালা আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে যে কাজ অধিক পরিমানে জান্নাতে প্রবেশ করাবে এই সম্পর্কে জানতে চাওয়া হয়। উত্তরে হুজুর সাল্লাল্লাহু তায়ালা আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, تَقْوَى اللَّهِ، وَحُسْنُ الْخُلُقِ আল্লাহ তায়ালাকে ভয় করা এবং সুন্দর চরিত্র।
পুনরায় হুজুর সাল্লাল্লাহু তায়ালা আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে যে কাজ অধিক পরিমানে জাহান্নামে প্রবেশ করাবে এই সম্পর্কে জানতে চাওয়া হয়।
উত্তরে হুজুর সাল্লাল্লাহু তায়ালা আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, الْأَجْوَفَانِ: الْفَمُ وَالْفَرْجُ দুটি ফাঁকা স্থান। মুখ ও লজ্জাস্থান।
সূত্র: ৪. হজরত আসওয়াদ বিন আসরাম রাজিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বলেন। আমি হুজুর সাল্লাল্লাহু তায়ালা আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে আমাকে উদ্দেশ্য করে কিছু নসিহত করার আবেদন করি। আমাকে তিনি বললেন, ‘তোমার হাতের মালিক কি তুমিই?
উত্তরে বলি, আমি আমার হাতের মালিক না হতে পারলে আর কীসের মালিক হবো। পুনরায় আমাকে তিনি বললেন, ‘তোমার জিহ্বার মালিক কি তুমিই? উত্তরে বলি, আমি আমার জিহ্বার মালিক না হতে পারলে আর কীসের মালিক হবো।
আমার কথা শুনে তিনি আমাকে উদ্দেশ্য করে বলেন, فَلَا تَبْسُطْ يَدَكَ إِلَّا إِلَى خَيْرٍ، وَلَا تَقُلْ بِلِسَانِكَ إِلَّا مَعْرُوفًا (যেহেতু এই দুটি বস্তুর মালিক তুমি নিজেকে দাবি করেছো) সুতরাং কল্যাণের কাজ ছাড়া তোমার হাতকে অন্য দিকে প্রসারিত করো না। এবং ভালো কথা বলা ছাড়া তোমার জিহ্বা দ্বারা ভিন্ন কিছু বলো না। সূত্র: শুয়াবুল ঈমান: 4583
৫. হজরত আনাস রাজিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত। হুজুর সাল্লাল্লাহু তায়ালা আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, কোন ব্যক্তির ঈমান সঠিক হবে যদি তার অন্তর সঠিক না হয়। তার অন্তর সঠিক হবে না যদি তার জিহ্বা সঠিক না হয়। কোন ব্যক্তি প্রতিবেশীকে কষ্ট দিয়ে জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না। সূত্র: মুসনাদে আহমাদ: 13048
৬. হজরত আব্দুল্লাহ বিন উমর রাজিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমা থেকে বর্ণিত। হুজুর সাল্লাল্লাহু তায়ালা আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, যে ব্যক্তি জিহ্বাকে সংযত রাখলো আল্লাহ তায়ালা তার দোষত্রুটি গোপন রাখবেন। আর যে রাগকে হজম করলো আল্লাহ তায়ালা তাকে শাস্তি থেকে বাঁচিয়ে রাখবেন। আর যে ব্যক্তি আল্লাহ তায়ালার কাছে নিজের ওজর পেশ করলো আল্লাহ তায়ালা তার ওজর গ্রহণ করবেন। সূত্র: কানজুল উম্মাল: হাদিস- 7165
-এটি