বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪ ।। ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ ।। ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :
অন্তর্বর্তী সরকার ব্যর্থ হলে আবারও অন্ধকারে নিমজ্জিত হবে দেশ: ফখরুল চক্রান্তের ফাঁদে না পড়ে সর্বোচ্চ ধৈর্য ধারণের আহ্বান শায়খ আহমাদুল্লাহর ভোলায় জুলাই-আগস্ট বিপ্লবে শহীদদের স্মরণে দোয়া ও স্মরণসভা চরমোনাইর বার্ষিক অগ্রহায়ণ মাহফিল বুধবার, চলছে সর্বশেষ প্রস্তুতি সবাইকে শান্ত থাকার আহ্বান আসিফ মাহমুদের অসহায় শীতার্তের পাশে মাওলানা গাজী ইয়াকুবের তাকওয়া ফাউন্ডেশন দেশের তিন জেলায় শিক্ষক নিচ্ছে ‘আলোকিত মক্তব’ বৃদ্ধার দাড়ি টেনে ছিঁড়ে ফেলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল প্রতিবন্ধীদের ধর্মীয় ও কারিগরি শিক্ষা দিতে পারলে দেশ এগিয়ে যাবে: ধর্ম উপদেষ্টা ভারতকে হিন্দু রাষ্ট্র করার ষড়যন্ত্র সফল হবে না: মাওলানা আরশাদ মাদানী

বিশ্বের শীর্ষ ৫ মুসলিম-বান্ধব ভ্রমণ গন্তব্যের একটি মালয়েশিয়া

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আওয়ার ইসলাম ডেস্ক: বিশ্বের শীর্ষ পাঁচটি মুসলিম-বান্ধব ভ্রমণ গন্তব্যের মধ্যে ঠাই করে নিয়েছে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ মালয়েশিয়া। দেশটিতে ভ্রমণের সহজতা এবং জনসচেতনতার বিষয়টি স্টেট অফ দ্য গ্লোবাল ইসলামিক ইকোনমি (এসজিআইই) ২০২২ এর রিপোর্টে এ তথ্য উঠে এসেছে।

এ দিকে দেশটির পর্যটন, শিল্প ও সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রী দাতুক সেরি ন্যান্সি শুকরি বলেছেন, মালয়েশিয়া মহামারির পরে মুসলিম-বান্ধব দেশগুলোর পর্যটকদের জন্য মালয়েশিয়া ভ্রমণে সম্পূর্ণরূপে প্রস্তুত রয়েছে। এমনকি ‘মালয়েশিয়া ক্রমবর্ধমান মুসলিম পর্যটন বাজারের জন্য পর্যটন শিল্পের ব্যবসায়ীরাও বিদেশি পর্যটকদের সেবা দিতে প্রস্তুত রয়েছেন।

গত বৃহস্পতিবার (১৪ এপ্রিল) পর্যটনমন্ত্রী ন্যান্সি বিবৃতির মাধ্যমে বলেছেন, মহামারি চলাকালীন মন্ত্রণালয় আমার এজেন্সি ইসলামিক ট্যুরিজম সেন্টারের (আইটিসি) মাধ্যমে, পর্যটন শিল্পের স্টেকহোল্ডারদের প্রশিক্ষণ এবং উন্নত করার প্রচেষ্টাকে ত্বরান্বিত করেছে; যাতে এই বাজারটি তার অনন্য বিশ্বাস-ভিত্তিক চাহিদা পূরণ করতে পারে।

ন্যান্সির ভাষ্য মতে, আইটিসি মুসলিম পর্যটন এবং আতিথেয়তা পরিষেবাকে শক্তিশালী করার জন্য মান ও নির্দেশিকা তৈরি করে শিল্পটিকে সমর্থন করেছে।

তিনি বলেছেন, ইসলামি পর্যটন বাস্তুতন্ত্র এবং মুসলিম-বান্ধব পর্যটন এবং আতিথেয়তা ব্র্যান্ডিং হল এগিয়ে যাওয়ার পথ কারণ আমরা নিরাপদে নতুন এবং পর্যটকদের জন্য মালয়েশিয়ার সীমানা আবার খুলে দেওয়া হয়েছে।

প্রতিবেদনে মালয়েশিয়া পাঁচটি সরকারি বেঞ্চমার্ক মাত্রার মধ্যে দুটিতে শীর্ষে রয়েছে। বিশেষ করে শাসন ব্যবস্থায় যা ভ্রমণের নিয়ম ও প্রবিধানের উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে।

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, মুসলিম-বান্ধব ভ্রমণ খাতের পুনরুদ্ধার পর্যটন শিল্পের ব্যবসায়ীদের নতুন সুযোগ এবং ভ্রমণের নতুন প্রবণতা গ্রহণের উপর নির্ভর করবে।

কোভিড-১৯ মহামারির মারাত্মক প্রভাবের পর, ভ্রমণে মুসলমানদের ব্যয় গত বছর ৭৫.৯% বৃদ্ধি পেয়ে ১০২ বিলিয়ন ডলারে (৪৩০.২৯ বিলিয়ন রিঙ্গিত) পৌঁছেছে। এমনকি ২০২৫ সালের মধ্যে ১৮৯ বিলিয়ন ডলার (৭৯৭.৩ বিলিয়ন রিঙ্গিত) বৃদ্ধির সম্ভাবনা রয়েছে।

আইটিসি মহাপরিচালক দাতুক ড. মোহাম্মদ রাজীপ হাসান বলেছেন, সংস্থাটি দেশে ইসলামিক ভ্রমণের বৃদ্ধিকে শক্তিশালী করার জন্য বেশ কয়েকটি পদক্ষেপ চিহ্নিত করেছে।

তিনি বলছিলেন, ইসলামি পর্যটনকে চ্যাম্পিয়ন করার জন্য, শিল্পের আগ্রহকে চালিত করার জন্য যে আখ্যানগুলো ব্যবহার করি তা হল ইসলামিক পর্যটন ব্যবসার বৃদ্ধি, পরিবেশ সচেতনতা এবং সুরক্ষা, সহনশীলতা, একীকরণ, সাংস্কৃতিক ও ঐতিহ্যের প্রশংসা এবং আরও অনেক কিছুকে শক্তিশালী করে। তার মতে, অতি সম্প্রতি, এজেন্সি ট্যুর গাইডদের জীবন রক্ষার কৌশলে প্রশিক্ষণ দিয়েছে।

আইটিসি ডিরেক্টর (গবেষণা ও প্রশিক্ষণ) নুর অ্যালিসা কোরালাইন ইউসিন বলেন, কোর্সটি দেশের সীমান্ত পুনরায় খোলার আলোকে তাদের পরিষেবা বাড়ানোর জন্য প্রয়োজনীয় দক্ষতা দিয়ে সজ্জিত গাইড তৈরি করা হয়েছে।

তিনি বলেছেন, মালয়েশিয়ার চারপাশে ভ্রমণ করা আরও আশ্বাসদায়ক যখন আপনি জানেন যে, আপনি আমাদের মুসলিম-বান্ধব ট্যুর গাইডদের নিরাপদ হাতে আছেন।

এসজিআইই রিপোর্ট হলো একটি বার্ষিক প্রকাশনা। যা দিনার স্ট্যান্ডার্ড দ্বারা প্রকাশিত হয়, সালাম গেটওয়ে, একটি ইসলামিক ইকোনমি নিউজ এবং মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম, যা দুবাই অর্থনীতি ও পর্যটন বিভাগ দ্বারা সমর্থিত।

মালয়েশিয়ার বেসামরিক বিমান চলাচল কমিশন বিবৃতির মাধ্যমে জানায়, গত শুক্রবার ১১৯টি ফ্লাইট বিভিন্ন দেশ থেকে পৌঁছানোর কথা। কুয়ালালামপুর বিমানবন্দর দেশটির সবচেয়ে বড় বিমানবন্দর। এদিন সেখানে হংকং, দক্ষিণ কোরিয়া, অস্ট্রেলিয়া, ভারত, কাতার, তুরস্ক ও যুক্তরাজ্য থেকে ফ্লাইট যাওয়ার কথা ছিল।

দেশটির পর্যটন, শিল্প ও সংস্কৃতিমন্ত্রী দাতুক সেরি ন্যান্সি শুকরি বলেন, কোভিড-১৯ মহামারির কারণে দীর্ঘ দুই বছরের অধিক সময় অতিক্রম হওয়ার পর আমরা এই মুহূর্তটির জন্য ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করছিলাম। এটি আমাদের ইদ উৎসবের মতো।

এ দিকে গেল ১ এপ্রিল থেকে মালয়েশিয়া ও সিঙ্গাপুরের মধ্যে স্থল সীমান্ত পুরোপুরি খুলে দেওয়া হয়েছে। এরপর প্রথম দিনেই হাজার মানুষকে সিঙ্গাপুর থেকে মালয়েশিয়ায় প্রবেশের জন্য লাইনে দাঁড়াতে দেখা যায়। দুই দেশের এ সীমান্তকে অন্যতম ব্যস্ত বলে জানান ব্লুমবার্গের বিশ্লেষকরা। সীমান্ত খুলে দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সিঙ্গাপুরের উডল্যান্ডস চেকপয়েন্ট দিয়ে মালয়েশিয়ার দক্ষিণাঞ্চলের জোহর প্রদেশে প্রবেশের জন্য যানবাহনের দীর্ঘ সারি দেখা যায়। একই সঙ্গে টুয়াস চেকপয়েন্ট হয়েও মালয়েশিয়া ও সিঙ্গাপুরের হাজার পর্যটক গাড়ি, মোটরসাইকেল ও হেঁটে এদিন সীমান্ত অতিক্রম করেন।

দ্য স্ট্রেইটস টাইমস ও চ্যানেল নিউজ এশিয়া বরাতে ব্লুমবার্গ জানিয়েছে, সকাল সাড়ে ৭টার আগেই অনেকে সীমান্তে পৌঁছান। পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দীর্ঘদিন পর মিলিত হওয়ার উদ্দেশ্যে তারা সীমান্তে জড়ো হন।

ব্লুমবার্গ আরও জানায়, জহোর প্রদেশের জহোর বারু বর্তমান আবহাওয়া বেশ মনোরম। আতশবাজি ফুটিয়ে ও ‘আবার সুস্বাগতম’ প্ল্যাকার্ড ঝুলিয়ে সিঙ্গাপুরের পর্যটকদের স্বাগত জানায় শহরটি। সিঙ্গাপুরের ইমিগ্রেশন ও চেকপয়েন্টস অথরিটি জানায়, প্রথম দিন প্রায় ১১ হাজার পর্যটক মালয়েশিয়ায় বেড়াতে গেছেন। চলতি সপ্তাহের মধ্যে এ সংখ্যা চার লাখ হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

কোভিড মহামারির আগে দিনে তিন লাখের অধিক মানুষ সীমান্তটি দিয়ে যাতায়াত করতেন, যা সীমান্তটিকে ব্যস্ত হিসেবে তকমা দিয়েছে। এর মধ্য দিয়ে আবার আকৃষ্ট হবেন পর্যটকরা। চাঙা হবে দুই দেশের পর্যটন নির্ভর অর্থনীতি।

মালয়েশিয়ার মিনিস্ট্রি অব টুরিজম, আর্টস অ্যান্ড কালচার জানায়, ২০১৯ সালে সিঙ্গাপুর থেকে একই পর্যটক একাধিকবার মালয়েশিয়ায় প্রবেশ করেন। এ হিসেবে প্রায় এক কোটিবারের অধিক সময় মালয়েশিয়ায় প্রবেশ করেছেন তারা, ২০২০ সালে যা নামে ১৫ লাখে। এরপর বন্ধ করে দেওয়া হয় সীমান্ত।

এনটি


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ