মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪ ।। ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ ।। ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬


সৌদি আরবের পতাকা থেকে মুছে ফেলা হচ্ছে কালেমায়ে তাইয়েবা

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আওয়ার ইসলাম ডেস্ক: মধ্যপ্রাচ্যের প্রাণ সৌদি আরবের পতাকা এবং জাতীয় সংগীত বদলে ফেলা হচ্ছে। নতুন পতাকাতে আর দেখা যাবে না পবিত্র কালেমা তাইয়েবা। শুধু আরবি ও ইংরেজি ভাষায় লেখা থাকবে সৌদি আরবের নাম।

গত সোমবার দেশটির শূরা কাউন্সিল পতাকা পরিবর্তনের পক্ষে সায় দিয়েছে। প্রায় ৫০ বছরের পুরোনো রাজকীয় ডিক্রির একটি খসড়া সংশোধনী অনুমোদনের পক্ষে ভোট দিয়েছে শূরার সব সদস্য।

সোমবার মজলিশে শূরার সদস্য সাআদ আল-উতাইবির প্রস্তাবের পর এতে অন্য সদস্যরা সম্মতি দেন।

শূরার নিরাপত্তা ও সামরিক বিষয়ক কমিটির সম্মতির পর জাতীয় পতাকা, প্রতীক ও সংগীত সংস্কারের এই প্রস্তাব বাস্তবায়ন এখন সৌদি বাদশাহ সালমান বিন আবদুল আজিজের চূড়ান্ত অনুমোদনের ওপর নির্ভর করছে।

সৌদির শূরা কাউন্সিলের সম্মতিই যে কোনো আইন বাস্তবায়ন ও সংস্কারে চূড়ান্ত হিসেবে বিবেচিত হয়। সে হিসেবে বাদশাহ’র অনুমোদন এখন আনুষ্ঠানিকতা মাত্র। প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের ‘ভিশন ২০৩০’ এর অংশ হিসেবে পতাকা ও জাতীয় সংগীত পরিবর্তন করা হচ্ছে।

সৌদি আরবের স্থানীয় একটি দৈনিকের খবরে বলা হয়, সংস্কারে জাতীয় পতাকা ও সংগীতে কি পরিবর্তন হবে তা জানানো হয়নি, তবে এগুলোর আইনে সংশোধন আনা হবে। আইনে কী ধরনের সংশোধন আসতে পারে সে ব্যাপারে স্পষ্ট কিছু জানায়নি পত্রিকাটি।

তবে পতাকার প্রয়োজনীয় সম্মান এবং কালেমাখচিত পতাকাকে অবহেলা ও অনিচ্ছাকৃতভাবে পড়ে যাওয়া থেকে সুরক্ষার জন্যই এই আইন হতে পারে বলেও দেশটির সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে।

গত সপ্তাহে পতাকা অবমাননার অভিযোগে চার বাংলাদেশিকে গ্রেফতারও করেছে সৌদি পুলিশ। তাদের বিরুদ্ধে সৌদি পতাকাকে ময়লার ভাগাড়ে ফেলে অবমাননার অভিযোগ আনা হয়েছে।

ঐতিহ্যগতভাবে রক্ষণশীল ইসলামী দেশ হিসেবেই পরিচিত সৌদি আরব। কিন্তু হাজার বছরের সেই ঐতিহ্য থেকে ক্রমেই বেরিয়ে আসছে দেশটি। এক্ষেত্রে একেবারে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন দেশটির যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান।

সৌদির আদি ইসলামী ঐতিহ্যকে ‘কট্টরপন্থা’ আখ্যা দিয়েছেন তিনি। বিপরীতে দেশে ‘মধ্যপন্থী ইসলাম’ প্রতিষ্ঠার কথা বলছেন তিনি। কিন্তু বিশ্লেষকরা বলছেন, ‘মধ্যপন্থা’র নামে তিনি আসলে পশ্চিমা ভাবধারা ও সংস্কৃতিকেই আমদানি করছেন।

বাদশাহ সালমান বিন আবদুল আজিজ এখন নামেমাত্র সৌদি শাসক। প্রকৃত শাসন ক্ষমতা যুবরাজ মোহাম্মদের হাতেই। ২০১৭ সালে ছেলেকে ক্রাউন প্রিন্স বা যুবরাজ ঘোষণা করেন বাদশাহ। সরিয়ে দেন ভাতিজাকে। ভবিষ্যৎ বাদশাহির পথ সুগম হওয়ায় পর্দার আড়াল থেকে সামনে চলে আসেন প্রিন্স সালমান।

সমাজ ও সংস্কৃতির ‘আধুনিকায়নে’ ভিশন-২০৩০ ঘোষণা দিয়েছেন তিনি। সেই লক্ষ্যেই ইতিমধ্যে বহু নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়া হয়েছে। গাড়ি চালানো, হলে গিয়ে সিনেমা ও মাঠে গিয়ে খেলা দেখা এমনকি অভিভাবক ছাড়াই নারীদের হোটেলে কক্ষ ভাড়া নেয়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছে।

এদিকে সম্প্রতি দেশটিতে বড় বড় কনসার্টেরও আয়োজন করা হচ্ছে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায়, যা নিয়ে সারাবিশ্বে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা চলছে। সূত্র: আরব নিউজ, সৌদি গ্যাজেট

-এটি


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ