সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪ ।। ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ ।। ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬


‘কারো বদ আমলকে নেক আমলে পরিণত করার ক্ষমতা কোন পীরের নেই’

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আওয়ার ইসলাম ডেস্ক: চরমোনাই পীর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম বলেছেন, ‘কারো বদ আমলকে নেক আমলে পরিণত করার ক্ষমতা পীরের নেই। পীর অর্থ গুরু, দীনের শিক্ষক। মানুষকে ভালো-মন্দ বিষয়ে সর্তক করাই তার কাজ। বদ আমলের শাস্তি জাহান্নাম, জান্নাতে নিতে কোনো পীরেরও ক্ষমতা নেই।

বাংলাদেশ মুজাহিদ কমিটির উদ্যোগে চট্টগ্রামের পলোগ্রান্ড ময়দানে তিন দিনব্যাপী  ঐতিহাসিক বার্ষিক ওয়াজ মাহফিল ও হালকায়ে জিকিরের প্রথম দিনের শেষ বয়ানে এসব বলেন তিনি।

তিন দিনব্যাপী মাহফিলের প্রথম দিনেই লাখ লাখ ধর্মপ্রাণ মানুষের ঢল নেমেছে চট্টগ্রামের পলোগ্রান্ড ময়দানে। চরমোনাইয়ের পীর  ও দেশের শীর্ষ ওলামা-মাশায়েখের বয়ান, দীনের বিভিন্ন বিষয়ে হাতে কলমে প্রশিক্ষণ, ইবাদত-বন্দেগি ও জিকিরের মাধ্যমে মাহফিলের প্রথম দিন অতিবাহিত হয়েছে।

মাহফিলের প্রথম দিনের শেষ বয়ানে  মুফতী সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম বলেন, ‘আমাদের দাদাজন সৈয়দ মুহাম্মদ ইসহাক রহ. ও আব্বাজান সৈয়দ মুহাম্মদ ফজলুল করীম রহ.)মাহফিলের প্রথম দিন মা’রিফতের বয়ান করতেন, দ্বিতীয় দিন শরীয়তের এবং তৃতীয় অর্থ-সমাজসহ বিভিন্ন বিষয়ে বয়ান করতেন।’

মা’রিফতের ব্যাখ্যা দিয়ে চরমোনাই পীর বলেন, ‘মারিফত অর্থ চেনা ও পরিচয়। কোনো জিনিসের পরিচয় বুঝে আসলেই মানুষ তার জন্য পাগল হয়ে যায়। দুনিয়ার ধন-দৌলত, মেম্বার-চেয়ারম্যানির মানুষ পাগল। কারণ এসব ধন-দৌলত কি জিনিস সে তার পরিচয় পেয়েছে। অনুরূপভাবে আল্লাহকে চেনা-জানা এবং পরিচয় জ্ঞাত হওয়ার নামই হচ্ছে মারিফত। এ মারিফতের উদ্দেশ্য হচ্ছে তাঁর হুকুম-আহকাম, বিধিবিধান এবং আদেশ-নিষেধ পালন করা।’

চরমোনাই পীর বলেন, ‘মারিফত ও শরীয়ত এক ও অভিন্ন; আলাদা কিছু নয়। রুহ ছাড়া যেমন শুধু দেহ মানুষ নয় এবং দেহ ছাড়া কেবল রুহ মানুষ হতে পারে না, তেমনি মারিফত ও শরীয়ত একটা ছাড়া অন্যটি দিয়ে কাল কিয়ামতে মুক্তি পাওয়া সম্ভব নয়।’

তিনি বলেন, ‘নামাজ পড়া আল্লাহর বিধান, এটি শরীয়তের বিধান। কিন্তু যদি এই নামাজ লোক দেখানোর জন্য কেউ পড়ে সেই নামাজ আল্লাহর কাছে কবুল হবে না। নামাজ আল্লাহর কাছে কবুল হওয়ার জন্য অন্তরের গোপন অভিপ্রায়কে শুদ্ধ করতে হবে। আর এটারই মান হচ্ছে মারিফত।’

পবিত্র কুরআন-সুন্নাহের পূর্ণাঙ্গ অনুসরণ এবং শরীয়তের বিধিবিধান ও আদেশ-নিষেধের পাবন্দি ছাড়া মারিফত চর্চাকে ষোলা আনা ভণ্ডামি আখ্যা দিয়ে পীর সাহেব চরমোনাই বলেন, ‘কুরআন-সুন্নাহর নীতি ও শরীয়তের বিধি-বিধানকে স্পষ্ট লঙ্ঘন করে যারা মারিফত ও সুফিবাদের নামে গান-বাজনা, নারী-পুরুষের অবাধ নর্দন-কুর্দন এবং বিভিন্ন কুসংস্কর ও শিরক-বিদআতে লিপ্ত রয়েছে তারা পীর-অলি বহু দূরে, তারা আস্ত ভণ্ডের দল।

চরমোনাই পীর আরও বলেন, কারো বদ আমলকে নেক আমলে পরিণত করার ক্ষমতা পীরের নেই। পীর অর্থ গুরু, দীনের শিক্ষক। মানুষকে ভালো-মন্দ বিষয়ে সর্তক করাই তার কাজ। বদ আমলের শাস্তি জাহান্নাম, জান্নাতে নিতে কোনো পীরেরও ক্ষমতা নেই।

মাহফিলে  ওলামা-মাশায়েখের মধ্যে আরও বয়ান পেশ করেন নায়েবে মুফতি সৈয়দ ‍মুহাম্মদ ফয়জুল করীম,  মুফতি ইয়াহইয়া মাহমুদ, আল্লামা ফুরকানুল্লাহ খলীল, হাফেজ মাওলানা ইউনুস আহমদ, আল্লামা ড. আ ফ ম খালেদ হোসাইন, আল্লামা নুরুল হুদা ফয়েজী, মাওলানা সৈয়দ ইসহাক মুহাম্মদ আবুল খায়র, আল্লামা লোকমান হাকীম, আল্লামা হাফেজ ওবাইদুল্লাহ হামজা, প্রফেসর ড. বেলাল নুর আজীজ, আল্লামা ফরিদ আহমদ আনসারী, মাওলানা মুহাম্মদ খুবাইব, মাওলানা আনওয়ার হোসাইন আল-আযহারী, ড. মুফতি হুমায়ুন কবীর খালবী, খ্যাতিসম্পন্ন মুফাসসিরে কুরআন হযরত মাওলানা হাফিজুর রহমান সিদ্দিকী (কুয়াকাটা হুজুর), মাওলানা মুফতি রেজাউল করীম আবরার, মাওলানা হাসান মুরাদাবাদী, মাওলানা মুফতী দেলওয়ার হোসাইন সাকী, মাওলানা ‍মুফতি সাঈদ আহমদ, মাওলানা মনসুরুল হক জিহাদী, মাওলানা শেখ আমজাদ হোসাইন, মাওলানা হাবিবুর রহমান আতিকী প্রমুখ।

এনটি


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ